shono
Advertisement

গর্ভধারণের ঝুঁকি ছাড়াই ৯০ দিন মিলনের ‘গ্যারান্টি’দিচ্ছে এই ইঞ্জেকশন

ইঞ্জেকশন নিন একদিন৷ নিশ্চিন্ত থাকুন ৯০ দিন৷   The post গর্ভধারণের ঝুঁকি ছাড়াই ৯০ দিন মিলনের ‘গ্যারান্টি’ দিচ্ছে এই ইঞ্জেকশন appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:25 AM Aug 07, 2017Updated: 04:57 AM Aug 07, 2017

গৌতম ব্রহ্ম: ইঞ্জেকশন নিন একদিন৷ নিশ্চিন্ত থাকুন ৯০ দিন৷

Advertisement

সরকারি হাসপাতাল থেকে মহিলাদের বিনামূল্যে এমনই এক গর্ভনিরোধক দেওয়া হচ্ছে৷ নাম ‘ডেপো মেডরক্সি প্রোজেস্টেরন অ্যাসিটেট’ (ডিএমপিএ)৷ এই ইঞ্জেকশন নিলে কোনও গর্ভনিরোধক ব্যবহার না করেই টানা তিন মাস নিশ্চিন্তে শারীরিক সম্পর্ক করা যাবে৷ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রককে ডিএমপিএ ব্যবহারের ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছে৷ ইঞ্জেকশনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অন্তরা’৷

রাজারহাটের এক হোটেলে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ডেপুটি কমিশনার এস কে শিকদারের নেতৃত্বে ইতিমধ্যেই একটি বৈঠক হয়েছে৷ উপস্থিত ছিলেন কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনোকোলজি বিভাগের প্রধান ডা. আরতি বিশ্বাস, আর জি কর হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. সঞ্জয় ভট্টাচার্য-সহ পূর্ব ভারতের বেশ কয়েকজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ৷ সেখানেই কেন্দ্রের পরিকল্পনার কথা জানান ডেপুটি কমিশনার৷ ঠিক হয়, আরতিদেবী ও সঞ্জয়বাবুরা ‘মাস্টার ট্রেনার’ হিসাবে রাজ্যের বিশেষজ্ঞদের এই ‘ইঞ্জেকটেবল কণ্ট্রাসেপটিভ’ সম্পর্কে অবহিত করবেন৷

[রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার বৃদ্ধের মৃতদেহ, খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য নিউ আলিপুরে]

জেলার ৩৫ জন ‘মেডিক্যাল অফিসার’-কে প্রাথমিকভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে৷ আগামী ৯, ১০, ১৬ ও ১৭ আগস্ট আরও ৪৫ জনকে সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তারপরই পুরোদস্তুর দৌঁড় শুরু করবে ‘অন্তরা’। রাজ্যে অবশ্য পরীক্ষামূলকভাবে ‘অন্তরা’—র পথচলা শুরু হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ২২ জন মহিলা গত ২৫ দিনে এই ডিএমপিএ ইঞ্জেকশন নিয়েছেন। আর জি করেও সঞ্জয়বাবুর নেতৃত্বে শুরু হয়েছে ‘অন্তরা’। প্রকল্প শুরুর আগের দিন ১০ জুলাই ন্যাশনালে একটি ‘ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম’—এর আয়োজন করেন আরতিদেবী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতার ‘ডিস্ট্রিক্ট ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার অফিসার’ ডা. সজল বিশ্বাস ও ‘ডিস্ট্রিক্ট মেডিক্যাল অ্যান্ড চাইল্ড ওয়েলফেয়ার অফিসার’ ডা. শাশ্বতী নাগ।

এখন গর্ভনিরোধক হিসাবে মূলত মহিলারা ব্যবহার করেন ট্যাবলেট৷ পুরুষরা কন্ডোম৷ ‘কপার টি’-সহ আরও কিছু পদ্ধতিও রয়েছে৷ কিন্তু সরকারিভাবে ডিএমপিএ প্রয়োগ করা হয়নি কখনও৷ আরতিদেবী জানিয়েছেন, এই ইঞ্জেকশনের সবচেয়ে সুবিধা হল, একবার নিলে তিনমাস নিশ্চিন্ত৷ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও খুব সামান্য ৷ প্রথমবার একটু পেটের সমস্যা হয়। দ্বিতীয়বার থেকে তা—ও না। ইঞ্জেকশন নিতে হয় হাতে বা নিতম্বের পেশিতে৷ আপাতত সন্তান প্রসবের পর প্রসূতিদের ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে৷ এতে একদিকে যেমন প্রসূতি ও শিশু মৃত্যুর হার কমবে৷ অন্যদিকে নিয়ন্ত্রিত হবে জনসংখ্যা৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব ও এনএইচএম-এর অধিকর্তা ডিএমপিএ-র পুস্তিকায় জানিয়েছেন, প্রতি দশকে প্রায় ১৮ শতাংশ হারে বাড়ছে দেশের জনসংখ্যা৷ এভাবে চললে ২০২৮ সালেই চিনকে ছাড়িয়ে যাবে ভারত৷ তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ জরুরি। সেটা তখনই সম্ভব যখন একটি নিরাপদ গর্ভনিরোধক পদ্ধতি সরকারিভাবে গ্রহণ করা হবে৷ এই কথা মাথায় রেখে উচ্চ প্রজননশীল জেলাগুলিতে বিনামূল্যে কন্ডোম বিলি শুরু করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। পঞ্চায়েত দফতর ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রখা হয়েছে কন্ডোম বক্স।

[বারুইপুর স্টেশন চত্বরে মায়ের সামনে কিশোরীর শ্লীলতাহানি, জালে অভিযুক্ত]

সমীক্ষা বলছে, দুই সন্তানের মধ্যে ফারাক ২ বছরের কম থাকার জন্য প্রচুর শিশু ও প্রসূতির মৃত্যু হচ্ছে এ দেশে৷ সংখ্যাটা নেহাত কম নয়৷ প্রসূতির ক্ষেত্রে ৩৫ হাজার, শিশুর ক্ষেত্রে ১২ লক্ষ৷ তার থেকেও বড় কথা, এ দেশের ৪.২ কোটি মানুষ গর্ভনিরোধকের ব্যবহার জানেন না বা করেন না৷ যদিও ‘অন্তরা’ নিয়ে হইচই শুরু করেছেন নারীবাদীদের একাংশ৷ তাঁদের মত, এই ইঞ্জেকশন ঋতুচক্রের বারোটা বাজিয়ে দেয়, অস্থিক্ষয় করায়৷ এমনকী কয়েকটি বাড়িয়ে দেয় ক্যানসারের সম্ভাবনা। ডিএমপিএ-র আত্মপ্রকাশ অবশ্য গর্ভনিরোধক হিসাবে নয়, ‘থ্রেটেনড অ্যাবরশন’-ঠেকানোর ওষুধ হিসাবে৷ পরে একে একে ১৩০টি দেশ গর্ভনিরোধক হিসাবে ডিএমপিএ-কে মান্যতা দেয়৷ এখন গর্ভনিরোধক হিসাবে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ডিএমপিএ৷ ইন্দোনেশিয়া, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, তাইল্যান্ড, বাংলাদেশেও জনপ্রিয় এই ইঞ্জেকশন।

The post গর্ভধারণের ঝুঁকি ছাড়াই ৯০ দিন মিলনের ‘গ্যারান্টি’ দিচ্ছে এই ইঞ্জেকশন appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement