রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: দলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতেও আগামীদিনে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে শীর্ষ বিজেপি (Bharatiya Janata Party) নেতৃত্ব। এই ইঙ্গিত দেওয়ার পাশাপাশি ভোটে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় পার্টির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ছন্নছাড়া অবস্থার পরিবর্তন করতে কী করা দরকার সেটা নিয়েও জেলা ও মণ্ডলস্তরের নেতাদের থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। সোমবার হেস্টিংস কার্যালয়ে বঙ্গ বিজেপির (Bengal BJP) সাংগঠনিক বৈঠকে সূত্রে এমনই খবর।
এদিন জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি অনেক মণ্ডল সভাপতি অভিযোগ তোলেন, প্রার্থী নির্বাচন সঠিকভাবে না হওয়াটাও খারাপ ফলের অন্যতম কারণ। এরপরই দক্ষিন ২৪ পরগনার তিনটি সাংগঠনিক জেলার মণ্ডল সভাপতিদের রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ বলেছেন, সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে কোনও সমস্যা কিংবা কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি তাঁর ইমেলে জানাতে। কোনও পরামর্শ থাকলেও তা দিতে বলেছেন তিনি। নিজের ইমেল ও ফোন নম্বর মণ্ডল সভাপতিদের দিয়েও দিয়েছেন শিবপ্রকাশ। আর প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভের বিষয়টি দিল্লিতে দলের নির্বাচনী কমিটির কাছে তিনি রাখবেন বলেও জানিয়ে দেন শিবপ্রকাশ।
[আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র ফর্ম ফিল আপে নয়া বিধি, জালিয়াতি রুখতে আরও কড়া রাজ্য]
সোমবার থেকে বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলাকে নিয়ে তিনদিনের বৈঠক শুরু হয়েছে। সোমবার প্রথমে ডায়মন্ড হারবার, মথুরাপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা (পূর্ব) সাংগঠনিক জেলাকে নিয়ে বৈঠক হয়। পরের বৈঠকে ছিল কলকাতা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার তিনটি সাংগঠনিক জেলার বৈঠকে একাধিক মন্ডল সভাপতি উপস্থিত ছিলেন না বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব জেলার ৪৩ জন মণ্ডল সভাপতির মধ্যে ১৩ জন ছিলেন। মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার ৩৩টি মণ্ডলের মধ্যে ৩টি মণ্ডলের সভাপতি ছিলেন। বৈঠক অনেকটাই ভাঙা হাট ছিল। আর উপস্থিত অনেক মণ্ডল সভাপতি জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সংগঠন নিয়ে ক্ষোভের কারণ লিখিতভাবে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী।
[আরও পড়ুন: শিয়রে করোনার তৃতীয় ঢেউ, পুজোর পরেও কি খুলবে স্কুল? জানালেন মুখ্যমন্ত্রী Mamata Banerjee]
এদিকে, বঙ্গ বিজেপিতে রদবদল যে আসন্ন তা এদিন ইঙ্গিত দিয়েছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ বিষয়ে দিল্লির নেতাদের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার কথা হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েই দিলীপবাবু বলেন, “বাংলায় বিজেপিকে বিরোধী দল হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে মানুষ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দলের কার্যকর্তাদের দায়িত্ব পরিবর্তনের দরকার আছে। রদবদল কিছু কিছু হবে।” তাঁর কথায়, অনেকদিন কাজের ফলে কেউ কেউ ক্লান্ত। নির্বাচনের ফলে কেউ কেউ আবার হতাশ হয়েছেন। নতুন লোকও এসেছে পার্টিতে। নতুনদের জায়গা দিতে হবে। দিলীপবাবুর এই বক্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ন বলেই মনে করছে দলের একাংশ। মনে করা হচ্ছে, দলে নিষ্ক্রিয়দের পদ থেকে সরিয়ে সেই জায়গায় অনেক নতুন মুখ আনা হবে। পুরভোটকে সামনে রেখে বিজেপি প্রচারেও নামতে চলেছে। এদিন কলকাতা জেলার বৈঠকে এমনটাই ঠিক হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে কলকাতায় ছোট ছোট পথসভা করবে বিজেপি।