কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব: ১৬৭/৬ (ঋদ্ধিমান-৩৮, ম্যাক্সওয়েল-৪৪)
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ১৫৩/৬ (লিন-৮৪)
১৪ রানে জয়ী কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৯.৫ ওভার। হঠাৎ করে জন্টি রোডসের কথা মনে করিয়ে দিলেন অক্ষর প্যাটেল। এভাবেই পাখির মতো ছোঁ মেরে বল লুফে নিতেন প্রোটিয়া কিংবদন্তি। বুধবার এক ‘ভারতীয় রোডস’কে দেখলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তেয়াটিয়ার বলে যখন দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে উথাপ্পাকে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরালেন অক্ষর, তখন স্টেডিয়ামের শব্দব্রহ্ম অবাক করল মোহালিকে। তখন থেকেই যেন কেকেআর-এর বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন গ্যালারিতে হাজির দর্শকরা।
কিংসদের কাছে ম্যাচটা ছিল ডু অর ডাই। হয় জেত, নাহলে প্লে অফে পৌঁছনোর স্বপ্ন দেখায় ইতি টানো। এমন পরিস্থিতিতে টসে হেরেও দলকে জেতানো যে কতটা চ্যালেঞ্জিং, তা ভালভাবেই জানতেন ম্যাক্সওয়েল। গুজরাটের বিরুদ্ধে যে ভুল করেছিলেন, তার পুনরাবৃত্তি হল না। সতীর্থদের প্রতি অধিনায়কের বিশ্বাস আর জয়ে ফেরার আত্মবিশ্বাসই পাঞ্জাবের প্লে অফের আশা জিইয়ে রাখল। অন্যদিকে, নকআউটের দৌড়ে নাইটরা ঠিক কত নম্বরে থাকবেন, সে উত্তর এদিনও অজানাই থেকে গেল।
[মহিলাদের একদিনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহকারী হলেন ঝুলন গোস্বামী]
প্রতিটি ম্যাচের মতোই এদিনও দাপটের সঙ্গেই শুরুটা করেছিলেন নাইটরা। গাপ্তিল, মার্শদের চটপট ফিরিয়ে দিয়ে পাঞ্জাবকে বেশ চাপে ফেলে দেন সুনীল নারিন, ওকসরা। এদিন কেকেআর-এর ব্যাটিং আর বোলিংয়ের গ্রাফটা ছিল অনেকটা একরকম। শুরুতেই ঝড়। তারপর ধীরে ধীরে ঠান্ডা বাতাস এসে ঝড় থামিয়ে সব যেন শান্ত করে দিয়ে গেল। পাঞ্জাবের টপ অর্ডার ধাক্কা খেলেও হাল ধরেন বাংলার ছেলে ঋদ্ধিমান ও নেতা ম্যাক্সওয়েল। তাঁরাই স্কোরবোর্ডকে সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছে দেন। তবে মঙ্গল-সন্ধেয় হাসিম আমলার অভাব যেন বেশি করে অনুভব করলেন কিংসরা। ওয়ানডে ম্যাচের জন্য দেশে ফিরে গিয়েছেন গত ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো ব্যাটসম্যান। তিনি থাকলে হয়তো আরও বড় ব্যবধানে জেতা যেত। কেকেআর-এর চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব, ঋদ্ধি ও ম্যাক্সওয়েলের উইকেট তুলে নিতেই শুকিয়ে যাওয়া পাতার মতো ঝরে পড়লেন পাঞ্জাব টেল-এন্ডাররা। ওকস নিলেন দুটি উইকেট।
ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে সুনীল-লিন ঝড় এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চার ট্রেন্ডিং বিষয়। সেই ঝড়ের এক ঝলক এদিন দেখা গেল বটে, কিন্তু তা ক্ষণস্থায়ী। ১৮ রানে ফিরলেন নারিন। তবে লিন ফের খেললেন নিজের সর্বস্ব উজাড় করে। কিন্তু তাঁর ৫২ বলে ৮৪ রানের অনবদ্য ইনিংস দিয়ে জয়ের কাহিনি লেখা হল না। আর তখনই যেন কলকাতার জয়ের আশাটা ফ্যাকাসে হতে হতে মিলিয়ে গেল। গ্যালারিতে তখন আনন্দে কোমর দোলাচ্ছেন পাঞ্জাব দলের মালকিন প্রীতি জিন্টা। অন্যদিকে, কলকাতার ক্যাপ্টেন গম্ভীর (৮), মণীশ পাণ্ডে (১৮), ইউসুফ পাঠানরাও (২) ব্যর্থ। দুরন্ত বল করে প্রশংসা কুড়োলেন মোহিত শর্মা। নিলেন দুটি উইকেট।
[মদ্যপান করেছিলেন বিক্রম, জেরায় স্বীকার অভিনেতা অনিন্দ্যর]
লাগাতার ভাল ফর্মে নাইটরা। অতিরিক্ত আত্মতুষ্টিই কি তবে কেকেআর-এর কাল হল? প্রতিটা দিন তো আর একরকম যায় না। কঠিন লড়াই, অ্যাওয়ে ম্যাচ, পাঞ্জাবের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের কারণগুলিও এড়িয়ে গেলে চলবে না। তবে কেকেআর-এর হারেরও একটি ভাল দিক দেখছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। ইডেনে নাইটদের পরের প্রতিপক্ষ লিগ তালিকার শীর্ষে থাকা মুম্বই। আর পিছিয়ে পড়া কেকেআর যে কতটা ভয়ঙ্কর, সে প্রমাণ তো আগেও পেয়েছেন দর্শকরা। তাই পাঞ্জাবের কাছে পরাস্ত হওয়ায় সেই লড়াই আরও জমবে বলেই আশা ক্রিকেটমহলের।
ছবি সৌজন্যে BCCI
The post নাইটদের পরাস্ত করে প্লে অফের আশা জিইয়ে রাখল পাঞ্জাব appeared first on Sangbad Pratidin.