স্টাফ রিপোর্টার: সন্ধ্যার যুবভারতীর (VVYK) অনুশীলন মাঠে গোটা দল যখন কেরালা ব্লাস্টার্স ম্যাচের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন অনুশীলন জার্সি পরেই ড্রেসিংরুমের ব্যালকনিতে কখনও বসে কখনও বা পায়চারি করতে করতে সতীর্থদের দেখে যাচ্ছিলেন ব্রেন্ডন হ্যামিল (Brendon Hamil)। মাঝে মধ্যে সেখান থেকেই মন্তব্য ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন। গত ম্যাচের ৭৩ মিনিটে হ্যামস্ট্রিং পুল হওয়ার পর আর খেলতেই পারেননি হ্যামিল। সেই চোট এখন মাথাব্যথার কারণ মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দোর। এখানেই শেষ নয়, অনুশীলনে উপস্থিত সাংবাদিকরা খুঁজছিলেন আরও একজনকে। তিনি সাহাল আব্দুল সামাদ। তিনিও এদিন অনুশীলনে ছিলেন না।
যদিও এই দুজনের প্রসঙ্গে ফেরান্দো আগেই বলে দিয়েছেন, বুধবার কেরালা ব্লাস্টার্স ম্যাচে ওঁদের খেলার সম্ভাবনা খুব কম। হ্যামিলের সঙ্গে শুধু সাহালই নন, গ্লেন মার্টিন্সেরও চোট রয়েছে। তবে গ্লেন দলের সঙ্গে অনুশীলনে নেমেছিলেন। তাঁদের খেলা প্রসঙ্গে ফেরান্দো বলে গেলেন, “শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু আমার মনে হয় নামা কঠিন হবে।” সামনেই এএফসি এশিয়ান কাপ (Asian Cup)। দোহায় জাতীয় শিবির শুরু হতে দিন চারেক বাকি। তার আগে সাহালের চোটের খোঁজ নিচ্ছেন স্বয়ং জাতীয় কোচ ইগর স্টিমাচও (Igor Stimac)। এশিয়ান কাপে জাতীয় দলের অন্যতম ভরসা সাহাল। এদিকে আনোয়ার আলি, সাহাল, গ্লেনদের পুরোপুরি সুস্থ হয়ে মাঠে নামার জন্য আগামী কয়েক মাসের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন ফেরান্দো। তবে মোহনবাগান কোচ নিজেও নিশ্চিত নন কবে আবার চোট মুক্ত পুরো দল হাতে পাবেন।
[আরও পড়ুন: দিল্লির ভরসায় নয়, লড়তে হবে নিজেদের সংগঠনের শক্তি দিয়েই, শুভেন্দুদের বার্তা শাহের]
এমন পরস্থিতিতে বুধবার সামনে কেরালা ব্লাস্টার্স (Kerala Blasters)। যারা মুম্বই সিটি এফসিকে (Mumbai City FC) ঘরের মাঠে ২-০ গোলে হারিয়ে কলকাতায় পা রেখেছে। সেই মুম্বই, যাদের কাছে হারতে হয়েছিল জেসন কামিংসদেরও (Jason Cummins)। শুধু তাই নয়, লিগ অভিযানের শুরুতে টানা সাত ম্যাচ অপরাজিত থাকা মোহনবাগানই এখন হারের হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে। ঘরের মাঠে এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট না এলে দিমিত্রি পেত্রাতোসরা যে আরও চাপে পড়বেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এই ম্যাচ থেকে যে কোনও পরিস্থিতিতেই তিন পয়েন্ট লক্ষ্য সবুজ-মেরুন শিবিরের। এই ম্যাচে ফেরান্দোর জন্য ভালো খবর, কার্ড সমস্যা কাটিয়ে ফিরছেন রক্ষণের হেক্টর ইউস্তে ও আশিস রাই। রক্ষণে হ্যামিল না থাকায় কেরালা ম্যাচে অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হবে হেক্টরকে।
[আরও পড়ুন: ‘আমাদের প্রাক্তন ছাত্রের প্রেমপ্রস্তাবে সাড়া দাও’, ছাত্রীকে নোটিস খোদ অধ্যক্ষের!]
শেষ ম্যাচে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে হারের পর যুবভারকীর গ্যালারিতে ‘গো ব্যাক ফেরান্দো’ ধ্বনি শোনা গিয়েছিল। মোহনবাগান (Mohun Bagan) কোচ নিজেও জানেন পরিস্থিতি ঠিক কতটা জটিল। যদিও এদিন ফেরান্দো বলেন, “ফলাফল হয়তো আমাদের অনুকূলে নেই। কঠিন সময়। এমন পরিস্থিতিতেও ক্লাব পাশে রয়েছে। আমিও ক্লাবের প্রতি, ফুটবলারদের প্রতি আস্থা রাখছি। কোনও অজুহাত দিতে চাই না। সামনের দিকে তাকাতে চাই। আইএসএলের (ISL) মতো লিগে সব ম্যাচই কঠিন ম্যাচ। কেরালা শেষ ম্যাচে মুম্বইকে হারিয়েছে। তবে আমি আমার দলকে নিয়ে ভাবছি। আমার তিন পয়েন্ট চাই।” রক্ষণ নিয়ে বেশ সমালোচনা হলেও তা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে নারাজ ফেরান্দো (Juan Ferrando)। তিনি বলেন, “আমার লক্ষ্য হল ম্যাচ জয়। গোল খাওয়া নিয়ে ভাবছি না। এক গোল খেলে দুই গোল দেব। দুই গোল খেলে তিন গোল। কিছু সমস্যা আছে ঠিকই। তবে আমার লক্ষ্য জয়।” সবুজ-মেরুন রক্ষণে ইউস্তাকে সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি আক্রমণভাগে দায়িত্ব নিতে হবে কামিংস আর পেত্রাতোসকে। অন্যদিকে, চোটের জন্য বুধবারের ম্যাচে নেই কেরালার তারকা ফরোয়ার্ড আদ্রিয়ান লুনা।