সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমর্থনযোগ্য না হলেও, হেরে গেলে অনেক সমর্থক তীব্র কষ্টে ফুটবলারদের পাশাপাশি অনেক সময় পরিবারের সদস্যদেরও নানা কটূক্তি শুনিয়ে দেন। কিন্তু ডার্বি জেতার পর সেই দলেরই ফুটবলারের বান্ধবী এবং স্ত্রীকে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তীব্র অপমান এবং হেনস্থা করা হচ্ছে, এই দৃশ্য কখনও দেখেনি বাংলার ফুটবল।
সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে সেই দৃশ্যও প্রত্যক্ষ করে ফেললেন বাংলার ফুটবলপ্রেমীরা। কোনও উপায় না দেখে বাধ্য হয়েই কিছু ‘ফেক সমর্থকের’ বিরুদ্ধে নিজের পেজে গিয়েই প্রতিবাদ করেন সবুজ-মেরুনের অধিনায়ক প্রীতম কোটালের বান্ধবী সোনেলা পাল (Sonela Pal)। তিনি লেখেন, ‘কোনও ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে ফেক ডার্বি (ISL Derby), ফেক ডার্বি না করে নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকেই পোস্ট করুন। কোনও প্লেয়ারের স্ত্রীকে ট্রোল করার আগে দশবার ভাবা উচিত। আপনি বা আপনাদের কোনও অধিকার নেই। রাগ, অভিমান থাকলে সেগুলি প্রকাশ করুন। কিন্তু সেগুলি কোনও ফুটবলারের স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে নয়।’
[আরও পড়ুন: বাইক দুর্ঘটনার কবলে ওয়ার্ন, কেমন আছেন কিংবদন্তি লেগ স্পিনার?]
সোনেলার এই পোস্ট প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পর তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় সবুজ-মেরুন ফুটবলারদের মধ্যেও। যেদিন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ওরকম মরণপণ লড়াইয়ের পর ৩-০ গোলে জেতা সম্ভব হল, ঠিক সেদিনই তাঁদের পরিবারের সদস্যদের খোদ সবুজ-মেরুন সমর্থকদের হাতেই তীব্র ট্রোলের শিকার হতে হচ্ছে, এরকমটা কোনওদিন দেখেননি মোহনবাগানের প্রাক্তন ফুটবলাররা। নভি মুম্বই থেকে ফোনে জোস ব্যারেটো বলছিলেন, ‘‘এরকম আগে কোনওদিন শুনিনি। আমার ক্লাবের যে ফুটবলাররা ওরকম ভাবে ডার্বি জিতল, সেই ফুটবলারদেরই পরিবারের সদস্যদের ট্রোল করা হচ্ছে! সত্যি এরকমটা ভাবতেই পারছি না আমি।”
ঘটনাগুলি শুরু অবশ্য এএফসির সময় থেকেই। একশ্রেণির সমর্থক “ফেক মোহনবাগান” “ব্রেক দ্য মার্জারের” দাবি তুলে সোনেলার পেজে গিয়ে নানারকম পোস্ট করতে শুরু করেন। আগে এসব এড়িয়েই যেতেন প্রীতমের বান্ধবী।কিন্তু শনিবারের ডার্বির দিন যেন আগের সব ঘটনাকেই ছাপিয়ে যায়।
ডার্বি জয়েক পর শুভাশিস বোসের (Subhasis Bose) স্ত্রী কস্তুরী বোসের একটি পোস্টে গিয়ে ফেক ডার্বি, ফেক মোহনবাগান নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেন কিছু সমর্থক। একই ভাবে আক্রমণ করা হয় সোনেলার পোস্টে গিয়েও। ম্যাচের দিন সকাল থেকেই কিছু সমর্থক দাবি তোলেন, তাঁরা এই মার্জার মানছেন না। ডার্বি দেখবেন না।
কোনও সমর্থক কী করবেন, সেটা তাঁদের একদমই ব্যক্তিগত ব্যপার। কিন্তু মার্জারের অজুহাত দিয়ে যখন ডার্বি জয়ের নায়কদের পরিবারের সদস্যদের ট্রোল শুরু হয়, তখন সেটাকে অসভ্যতা বলা হয়। এরা মোহনবাগানের মতো ঐতিহ্যশালী ক্লাবের সমর্থক তো? না কি দল যখন ভাল খেলছে, আন্দোলনের নামে ফেক প্রোফাইল তৈরি করে সমর্থকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে! মোহনবাগানের সমর্থক বেলঘড়িয়ার সুজয় ঘোষ বললেন, “এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি, এটা মোহনবাগান সংস্কৃতি নয়। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মে নিজেদের জাহির করার উদ্দেশ্যে তৈরি করা এই নোংরামো শাস্তিযোগ্য। আগে টুটু বসুর প্রতি অপমান এবং আজ ব্যক্তিগত আক্রমণ, আদৌ এরা ফুটবল সমর্থক?” সত্যিই আজ ফুটবল সংস্কৃতি বড় প্রশ্নের সম্মুখীন।
[আরও পড়ুন: হারের মাঝেও সোনালি রেখা এসসি ইস্টবেঙ্গলের শুভম, ওড়িশা ম্যাচেও আগলাবেন গোল]