দুলাল দে: ইতিহাস বলে, ডার্বি (Derby) জয়ের পরের ম্যাচটা জিততেই সবচেয়ে কালঘাম ছুটে যায় বড় দলের। সে লাল-হলুদ হোক, কিংবা সবুজ-মেরুন। সেখানে শনিবারের ডার্বিতে শুধু ৩-০ গোলেই জেতা নয়। লাল-হলুদকে রীতিমতো নাস্তানুবাদ করে জেতা। ফলে বুধবার মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে রয় কৃষ্ণদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভোগাটা স্বাভাবিক। বিশেষ করে ডার্বি জয়ের পরের ম্যাচের ইতিহাসটা যখন শুরুতেই বলা হয়েছে।
ব্যাপারটা যে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) কোচ হাবাসকে ভাবাচ্ছে না, সেরকম নয়। তবে ডার্বি জয়ের ভিতর থেকে পজিটিভ ব্যাপারগুলো খুঁজে বার করার চেষ্টা করতে চান তিনি। বলছিলেন, “একটা ভাল দলের জন্য সবচেয়ে জরুরি জয়ের অভ্যাস তৈরি করা। সেটা ডার্বি হতে হবে এরকম নয়। প্রথম ম্যাচে জয়ের পর, দ্বিতীয় ম্যাচেও জিতেছি। এটাই সবচেয়ে জরুরি তথ্য আমার কাছে।”
[আরও পড়ুন: ISL 2021: এসসি ইস্টবেঙ্গল সেই তিমিরেই! ডার্বির পর ওড়িশার কাছেও হার লাল-হলুদের]
বুধবার প্রতিপক্ষ মুম্বই সিটি এফসি (Mumbai City FC)। সেই মুম্বই, যাদের কাছে গতবার ফাইনালেই শুধু হারেনি, একটা ম্যাচেও জিততে পারেনি হাবাসের (Antonio Habas) দল। এবারের আইএসএলের পর পর দুটো ম্যাচ জেতার পর এবার তৃতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ সেই মুম্বই। যদিও গত মরশুমে এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে মুম্বই সিটি এফসির জয়ের প্রধান কারিগর হুগো বুমোস এবার আরবসাগরে তীর থেকে এসে উঠেছেন গঙ্গাপরের ক্লাবে।
কোচ লোবেরো সহ পরিবর্তন হয়েছে ফুটবলার তালিকাতেও। হাবাস বলছিলেন, “গতবারের মুম্বই সিটি এফসির সঙ্গে এবারের মুম্বইয়ের অনেক পার্থক্য রয়েছে। শুধু কোচের বদল হয়নি। অনেক পজিশনেও বহু পরিবর্তন হয়েছে। ফলে আমার কাছে গতবারের মুম্বইয়ের সঙ্গে এবারের মুম্বইয়ের অনেক পার্থক্য রয়েছে। প্রত্যেকটা দলের বিরুদ্ধেই আলাদা আলাদা পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে হবে। আর এটিকে মোহনবাগানও দারুণ দল। আমরা প্রতিপক্ষ হিসেবে যাকে পাব, তাকেই হারানোর চেষ্টা করব।’’
ডার্বি জেতার পর মনবীর এবং লিস্টন কোলাসোর পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশংসা চারিদিকে। হাবাস বললেন, “ভুললে চলবে না, বেঞ্চে বসে আছে সুসাইরাজ এবং প্রবীরের মতো ফুটবলার, যাঁরা যে কোনওদিন মাঠ নামবে। তবে মনবীররাও দারুণ খেলছে। লিস্টন প্রতিটা দিন নিজের উন্নতি করছে।” হাবাস প্রশংসা করেন প্রীতম এবং শুভাশিসেরও। এটিকে মোহনবাগান কোচ বলেন, “আমার দলের ডিফেন্ডাররা বিভিন্ন ফর্মেশনে খেলতে অভ্যস্ত। কখনও তিন ডিফেন্ডারের সেন্ট্রাল ব্যাক হিসেবে খেলতে হতে পারে। আবার চার ডিফেন্ডারে উইংব্যাক হিসেবেও খেলতে হতে পারে। প্রীতম, শুভাশিসের নির্দিষ্ট করে কোনও পজিশন নেই।’’
ডার্বি জেতার পর, মুম্বইয়ের বিরুদ্ধেও একই সিস্টেমে খেলবেন কি না জিজ্ঞাসা করা হলে সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, “এটা সম্পূর্ণ পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। যেমন তিরির স্কোয়াডে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও কোনও কিছুই নিশ্চিত হয়নি।”
প্রথম ম্যাচে কেরালাকে ৪ গোল। পরের দিন এসসি ইস্টবেঙ্গলকে তিন গোল। এবার তৃতীয় ম্যাচে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ফলাফল কী হবে? হাবাস বললেন, ‘‘বিশ্বের কোনও দলই এভাবে প্রতিদিন তিন-চার গোলে ম্যাচ জিততে পারে না। আমরাও পারব না। তবে কত গোলে জিতলাম, তার থেকেও আমার কাছে বড় ব্যাপার, ম্যাচ শেষে পুরো তিন পয়েন্ট পেলাম কি না। দু’ম্যাচে ৬ পয়েন্টের পর তৃতীয় ম্যাচ থেকেও পুরো তিন পয়েন্ট পেতে চাইছি।”