অর্ণব আইচ: পড়াশোনা শেষ হয়ে গিয়েছিল বছর দুই আগেই। তবু পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের ছেলে জয়দীপ ঘোষ থাকত কলকাতায়। সেই সূত্রে ঘনঘন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে (JU Hostel)যাতায়াত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে শনিবার গ্রেপ্তার হয়েছে জয়দীপ। আর তাকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর সমস্ত তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের। মনে করা হচ্ছে, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে সেদিন অন্যতম ভূমিকা গ্রহণ করেছিল প্রাক্তন এই পড়ুয়ার। ঘটনার দিন হস্টেলের রেলিং থেকে নদিয়ার (Nadia) ছাত্রটি পড়ে যাওয়ার পর তাকে কেপিসি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছয়। কিন্তু ছাত্রদের বাধাতে ঢুকতে পারেনি। ফলে বয়ানও নেওয়া যায়নি। সূত্রের খবর, এবার জয়দীপকে জেরা করে পুলিশ প্রায় নিশ্চিত যে ওইদিন পুলিশকে কাজে বাধা দেওয়ায় বড়সড় ভূমিকা নিয়েছিল এই জয়দীপ ঘোষ। এদিন তাকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়।
যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর (Jadavpur University Student Death) ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে অধিকাংশই প্রাক্তন ছাত্র। হস্টেলে নবাগতদের উপর যারা অকথ্য অত্যাচার চালাত বলে অভিযোগ। ওই দিনও একই রকমভাবে চলছিল ‘দাদাগিরি’। সেই ঘটনায় সরাসরি যুক্ত না থাকলেও পরবর্তী ঘটনাক্রম প্রায় নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ করছিল সদ্য ধৃত জয়দীপ ঘোষ। ২০২১ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (IR) বিভাগের এই ছাত্রের পড়াশোনা শেষ হয়। কিন্তু তারপরও হস্টেলে যাতায়াত ছিল তার। পুলিশ তাকে জেরা করে জানতে পেরেছে, ৯ আগস্ট, ঘটনার দিন জয়দীপ ছিল বিক্রমগড়ের বাড়িতে। কিন্তু খবর পেয়ে সে সোজা ছুটে যায় কেপিসি হাসপাতালে (KPC Hospital), যেখানে আহত ছাত্রকে ভরতি করা হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: যাদবপুর ছাত্রমৃত্যু কাণ্ডে নয়া মোড়, আচমকাই পদত্যাগ করলেন ডিন অফ সায়েন্স]
পুলিশ সূত্রে খবর, ওইদিন হাসপাতালে পুলিশ ঢুকতে বাধা দিয়েছিল এই জয়দীপই। এমার্জেন্সি (Emergency) বিভাগের গেট আটকে দাঁড়িয়েছিল সে। পুলিশ বাধা পেয়েই সেদিন নিহত ছাত্রের বয়ান নিতে পারেনি। শুধু তাইই নয়, জয়দীপ হস্টেলের ছাত্রদের নির্দেশ দিয়েছিল, রক্ত-সহ সমস্ত প্রমাণ যেন মুছে ফেলা হয়। জেরায় সে সব স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি। এদিকে, রবিবার প্রথম ধৃত সৌরভ চৌধুরীকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়েছিল। প্রিজন ভ্যানে বসে সে দাবি করেছে, ওইদিন কোনও র্যাগিং হয়নি। তারা দরিদ্র বলে ফাঁসানো হচ্ছে।