রমেন দাস: যেন মারকাটারি ভাব! খানিকটা বেপরোয়া! খানিকটা অসহিষ্ণু! ধরা কে সরা জ্ঞান না করা এক যুবক! স্বপ্ন-মৃত্যুর ঘটনায় সত্যব্রত রায়ের গ্রেপ্তারির পর এই প্রশ্নই উঠছে সর্বত্র। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের (Jadavpur University Main Hostel) অলিন্দে কান পাতলেই সত্যব্রত চরিত্র নিয়ে শোনা যাচ্ছে ভয়ঙ্কর অভিযোগ। কী করতেন তিনি?
ঘনিষ্ট সূত্রের দাবি, মেইন হস্টেলের এ-২ ব্লকের আবাসিক ছিলেন অভিযুক্ত সত্যব্রত রায় (Satyabrata Roy)। দাবি, ওই বিল্ডিংয়ে সৌরভ চৌধুরী-সহ গুটিকয়েক হস্টেল বাবার পরে তিনিই ছিলেন শেষকথা। গ্রাম থেকে যাদবপুরে পড়তে আসা কম্পিউটার সায়েন্সের ওই ছাত্রের কথাতেই চলত গোটা ব্লক!
[আরও পড়ুন: উত্তাল সময়ে গুরুদায়িত্বে, কীভাবে সামলাবেন? মুখ খুললেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য]
অভিযোগ, নবাগত পড়ুয়াদের নিজের রাজনৈতিক মতাদর্শে দীক্ষিত করতেও সত্যব্রতর ভূমিকা ছিল প্রথম সারিতে। রাঁধুনি থেকে শুরু করে হস্টেল সুপার, সকলকেই নাকি নিয়ন্ত্রণ করতেন অভিযুক্ত সত্যব্রত। যদিও তাঁর নামে এখনও প্রকাশ্যে মুখ মুখ খুলতে নারাজ আবাসিকরা। তাঁদের একটা অংশ বলছেন, ”আপনারা এই হস্টেল শুধু নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাচে-কানাচে জিজ্ঞাসা করুন, সকলেই বলবেন ও কেমন ছিল।”
[আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে পড়তে গিয়ে মৃত টালিগঞ্জের ছাত্রীর বাড়িতে ফোন মুখ্যমন্ত্রীর, উচ্চপর্যায়ের তদন্তের আশ্বাস]
হস্টেলের এক বাসিন্দা বলছেন, ”অত্যন্ত বাজে ব্যবহার করত সত্যব্রত। দেখতে সভ্য মনে হলেও ও যার তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত।” এখানেই উঠছে প্রশ্ন। নদিয়ার বাসিন্দার মৃত্যুর দিন রাতে এই সত্যব্রত ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে ফোন করেন বলে দাবি করা হয়। শুধু ফোন নয়, সত্যব্রত রজত রায়কে বলেন, ‘এক ছাত্রকে পলিটাইজেশনের চেষ্টা করা হচ্ছে।’ ওই ছাত্র ঝাঁপ দেবেন বলেও জানান তিনি। এই ফোনেই তৈরি হয় বিতর্ক। কেন আগ বাড়িয়ে রাজনীতির কথা বলেছিলেন সত্যব্রত? তাহলে কি এই মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত তিনিও? উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারাও।
নদিয়ার হরিণঘাটা (Haringhata) পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সন্তোষপুরের বাসিন্দা সত্যব্রত রায়। যাদবপুরে কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তিনি। বাবা কানাই রায় সামান্য ঝালমুড়ি বিক্রেতা। হরিণঘাটার মোহনপুর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ঝালমুড়ি, পেয়ারা মাখা ইত্যাদি বিক্রি করেন। মা রুমা রায় বাড়িতে সেলাই মেশিনে জামাকাপড় সেলাইয়ের কাজ করে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান সম্পর্কে এমন খবরে হতবাক তাঁর প্রতিবেশীরাও।