দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্য সরকারের কাজ নিয়ে লাগাতার সমালোচনা, অসন্তোষ প্রকাশ, বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে সরব হওয়া – রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) এহেন কার্যকলাপ নিয়ে শাসকদলের সঙ্গে চিরদ্বন্দ্ব। বৃহস্পতিবার তাঁর বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নিতে কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন জানানোর কথা বলেছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর কয়েকঘণ্টার মধ্যে তাঁর পালটা জবাবে ১৩ দফা অভিযোগ জানিয়ে প্রেস বিবৃতি দিলেন ধনকড়। তাঁর শ্লেষ, টুইটে তিনি ভাষা ব্যবহার করেন, তা বুঝতে ব্যর্থ শাসকদল।
দীর্ঘ প্রেস বিবৃতিতে প্রায় প্রতিটি বিষয়ের খুঁটিনাটি তুলে ধরে প্রশ্ন করেছেন জগদীপ ধনকড়। চাঁচাছোলা ভাষায় তাঁর দাবি, যে ভাষায় তিনি টুইট করছেন, তা বুঝতে পারেননি শাসকদলের অনেকেই। যদিও এ বিষয়ে তাঁর কিছুই করার নেই বলেও দাবি ধনকড়ের। নিজের সাংবিধানিক কর্তব্য মেনেই তিনি স্বচ্ছতা এবং প্রতিশ্রুতি রাখতে বদ্ধপরিকর বলে জানান। রাজ্যপাল লেখেন, ”সংবিধান মেনে আমি রাজ্যের মানুষের সেবা করছি। রাজ্যে ঘটে চলা রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে কথা বলেছি। রাজ্যের কৃষকরা অনুদানের টাকা পাচ্ছেন না। রাজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র টিকবে না।” এ প্রসঙ্গেই তিনি বিঁধেছেন শাসকদলকে। তাঁর বক্তব্য, ”স্বচ্ছ, অবাধ নির্বাচন গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখার চাবিকাঠি। তা নিয়ে যাঁরা ষড়যন্ত্র করে থাকেন, আমার এসব কথায় তাঁদেরই ভ্রূ কুঁচকে যাচ্ছে। আমিই এ বিষয়ে সবচেয়ে বেশি সরব।”
[আরও পড়ুন: ডিসেম্বর থেকেই ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আওতায় রাজ্যের সব পরিবার, নবান্ন থেকে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
রাজ্যপাল বিজেপির ভাষায় কথা বলেন, এমন অভিযোগ বারবারই উঠেছে রাজ্যের শাসকদলের তরফে। বৃহস্পতিবারের প্রেস বিবৃতিতেও এ নিয়ে ফের সরব হন ধনকড়। তাঁর দাবি, তিনি যেমন সাংবিধানিক প্রধান হয়ে কোনও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করতে পারেন না, তেমন প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদেরও কোনও বিশেষ রাজনৈতিক মনোভাব দ্বারা কাজ করা উচিত নয়। বরং আইন মেনে শুধুই জনস্বার্থে কাজ করলেই স্বচ্ছতা বজায় থাকে বলে মনে করেন তিনি। এরপর রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তাঁর অভয়বাণী, যে যাই বলে থাকুক, রাজ্যবাসীকে তিনি অরাজকতা থেকে মুক্তির চেষ্টা চালিয়েই যাবেন, যাতে আগামিদিন সুন্দর হয়ে ওঠে।
[আরও পড়ুন: ‘বস্তাপচা জঙ্গল পার্টি’, নাম না করে বিজেপিকে তোপ মমতার]
রাজ্যপালের এই প্রেস বিবৃতি নিয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাঁর প্রশ্ন, ”সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কি আমার অভিযোগগুলো খণ্ডন করেছেন? নাকি উনি রাজ্যপালের কার্যকলাপকে সমর্থন করছেন? আমি পুলিশকে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করতে বলেছি। ম্যাজিস্ট্রেটকে বলিনি। এখন অভিযোগ দায়ের না হলে চার বছর পর যদি মামলা করা হয়, তখন আদালত বলবে, দেরি হয়ে গিয়েছে।”