কলকাতায় জয়া আহসান (Jaya Ahsan)। শুটিং করছেন ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’-র জন্য। অতিমারীর সংকট, কাজে ফেরা, মুক্তির অপেক্ষায় থাকা একগুচ্ছ ছবি, সবকিছু নিয়ে কথা বললেন। শুনলেন শম্পালী মৌলিক
কেমন আছেন?
জয়া: কাজের প্রেশারে আছি বেশ। সেটা অবশ্য ভালই লাগে।
ভ্যালেন্টাইন’স ডে-র দিনও শুটিং করলেন। কাজের মধ্যে রয়েছেন। তাহলে জয়ার জীবনে প্রেম কোথায়?
জয়া: প্রেম তো আছেই। আসলে প্রেম তো কাজের সঙ্গেই। ভালবাসার দিনে কাজ করতে পেরেছি। ভাল একটা কাজ শুরু হয়েছে তা নিয়ে আমার ভাললাগা রয়েছে।
এই প্রথম সুমন মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় কাজ করছেন?
জয়া: ফিচার ফিল্মের জন্য প্রথমবার কাজ করছি। এর আগে ওঁর পরিচালনায় একটা ছোট ছবি করেছি।
আপনি কোন চরিত্রে ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’য়?
জয়া: আমি ‘কুসুম’-এর চরিত্রে। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমন কাহিনি নিয়ে কাজ হচ্ছে, আমি তার অংশ হতে পেরেছি, সেটাই বিরাট প্রাপ্তি। যে কোনও অভিনেতার ক্ষেত্রেই বড় পাওয়া। সুমন মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় এমন একটা চরিত্র পেয়েছি এতেই আমি খুশি।‘হারবার্ট’ দেখার পর থেকে আমি ওঁর কাজের প্রেমে।
কীভাবে সুযোগটা আসে?
জয়া: ‘কুসুম’-এর মতো চরিত্রে উনি আমাকে যে ভেবেছেন এটাই বড় ব্যাপার। অনেকদিন ধরেই কাজের কথা হচ্ছিল। আমাকে একদিন বললেন, স্ক্রিপ্ট শোনাতে চান। শুনলাম। কোন চরিত্রের জন্য ভাবছেন জানলাম। তারপর থেকে অপেক্ষায় ছিলাম যে, কবে হবে। কয়েকবার ডেট এদিক-ওদিক হয়েছিল। তারপর দেখলাম সময় মতো শুরু হয়ে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: কবে বিয়ে করছেন? একান্ত আড্ডায় জানিয়ে দিলেন সোহিনী সরকার]
মাঝখানে আপনি কলকাতায় এসেছিলেন এর আগে, সৌকর্য ঘোষালের ‘কালান্তর’-এর জন্য। ওটার কী অবস্থা?
জয়া: হ্যাঁ, তখন আমি এসেছিলাম। ওটার কিছুটা শুটিং হয়েছিল, এখনও বাকি রয়েছে। সেইসময় কোভিডের প্রকোপ বেড়ে যাওয়াতে আউটডোরের কাজ স্থগিত হয়। এই ছবির কাজটা শেষ হলেই আমরা ‘কালান্তর’-এর শুটিংয়ে ঢুকব। অগ্নিযুগের গল্প। সেখানে আমি বিপ্লবীর চরিত্রে। অসাধারণ একটি চরিত্র সৌকর্য আমাকে দিয়েছে।
‘পুতুল নাচের ইতিকথা’-র জন্য কতদিন থাকবেন?
জয়া: মার্চ মাস অবধি শুটিং রয়েছে। পরিচালক যেমন বলছেন, করে যাচ্ছি। এবার দেখা যাক।
অতিমারীর এই দুটো বছর আমাদের জীবনে অনেক পরিবর্তন এনেছে। আপনার জীবনের ক্ষেত্রে কেমন পরিবর্তন এনেছে?
জয়া: পরিবর্তন কী এসেছে অতটা জানি না। তবে একটা রিয়েলাইজেশন তখন হয়েছিল যে, পৃথিবীতে কোনও কিছুই কিছু না। বেঁচে থাকা, সুস্থ থাকাটাই সবচেয়ে আনন্দের। আমরা সকলেই সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। দুর্লভ জিনিস যখন সহজে পেয়ে যাই আমরা বুঝতে পারি না, সেটা কত দামি। জীবন তেমনই। হাওয়া, জল, সূর্যের আলো, অক্সিজেন এসব নিয়ে আমরা তেমন ভাবি না। সবকিছু তো গ্যারান্টিড। কিন্তু এর একটিকে যদি সরিয়ে নাও জীবন থেকে, তাহলে দেখবে জীবনটা কেমন হয়। আমরা যে কতটা প্রকৃতির অংশ সেটা নতুন করে অনুধাবন করলাম সবাই। সত্যি মানুষ হিসাবে আমাদের হাতে সময় কম সেটা বুঝলাম।
প্যানডেমিক কীভাবে কাটালেন?
জয়া: প্রধানত বাংলাদেশেই বাড়িতে ছিলাম। মাঝখানে কলকাতায় এসেছিলাম। তারপর একটু লন্ডন-আমেরিকায় যেতেও হয়েছে। ছোট ভাই ওখানে থাকে। তবে অতিমারীতে অনেকটা ফ্যামিলি টাইম পেলাম, যেটা আমরা কম পাই। একটু অভ্যাস খারাপ হয়ে গিয়েছে এতে। এখন মনে হয় সারাক্ষণ বাড়িতেই বসে থাকি।
কলকাতায় এখন তো আপনার বাড়ি আছে। এখানে টানা শুটে থাকলে বাংলাদেশের কী মিস করেন?
জয়া: ছাদবাগান মিস করি, গাছপালা মিস করি। আর অবশ্যই চারপেয়ে তিন ভাইবোনকে ভীষণ মিস করি। আজকে শুটিংয়ে একজনকে পেয়ে গিয়েছি, ‘টমি মিঞা’ বললেই সে সাড়া দিচ্ছে। সারাক্ষণ আমার চাদর ধরে টানাটানি করছে। গায়ে দাগ করে দিচ্ছে। ওকে ঘুম পাড়িয়ে বাড়ি ফিরলাম। ওর কারণেও শুটিংটা আনন্দেই কাটছে।
বাংলায় আপনার আর কোন কোন ছবি মুক্তির অপেক্ষায়?
জয়া: সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়ের ‘ঝরা পালক’, সৌকর্য ঘোষালের ‘ভূতপরী’ আর ‘ওসিডি’, আর কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘অর্ধাঙ্গিনী’–এই সবগুলো অপেক্ষায় রয়েছে।একটা সময় শুনেছিলাম সিরিয়াল কিলার ‘ত্রৈলোক্য’-র চরিত্রে।
আপনি করবেন?
জয়া: হ্যাঁ, তখন ওটা এগোয়নি। আবার হয়তো আগামী দিনে হতেও পারে।