স্টাফ রিপোর্টার: অক্ষয় তৃতীয়া আজ। এই দিনে সোনা-রুপোর গহনা কেনার পরম্পরা বহুদিনের। এদিন সাধারণ ক্রেতারা যাতে কম শুদ্ধ মানের সোনা ও রুপোর গহনা কিনে প্রতারিত না হন, তার জন্য হলমার্ক গহনা কেনার আহ্বান জানিয়েছেন বিএসআইয়ের কর্তারা। যদি আপনার কেনা গহনার শুদ্ধতা নির্দিষ্ট মানের চেয়ে কম হয়, তাহলে দোকানদার আপনাকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হবে। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানিয়েছেন ভারতীয় মানক ব্যুরো অর্থাৎ ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড(বি আই এস)। এদিন বি আই এস-এর পূর্বাঞ্চলের উপ মহানির্দেশক বিষ্ণু গুপ্তা জানান, এই ক্ষতিপূরণের মূল্য মূল্য নির্দিষ্ট মানের শুদ্ধতার চেয়ে যত পরিমাণ শুদ্ধতা কম, তার তিনগুণের সমপরিমাণ ধার্য করা হবে।
বিষ্ণু গুপ্তা এদিন বলেন, গ্রাহকদের প্রতারণা থেকে বাঁচাতে ভারত সরকার ২০০০ সালে থেকে বি আই এস হলমার্কিং যোজনা চালু করে। তাঁর কথায়, যোজনাটি এখনও ঐচ্ছিক। কিন্তু ভবিষ্যতে এটিকে বাধ্যতামূলক করতে ক্যাবিনেটে বিষয়টি পাস করা হয়েছে। শুধু বিল আসার অপেক্ষায়।
[মহাভারতের যুগেও ছিল ইন্টারনেট, চাঞ্চল্যকর দাবি ত্রিপুরার নয়া মুখ্যমন্ত্রীর]
প্রসঙ্গত, বি আই এস হলমার্ক সোনার গহনা তিনটি শুদ্ধতার মাপকাঠিতে পাওয়া যায়। ২২ ক্যারেট, ১৮ ক্যারেট ও ১৪ ক্যারেট। হলমার্ক সোনার গহনা কেনার ক্ষেত্রে বি এস আই মানক চিহ্ন, শুদ্ধতার গ্রেড, প্রস্তুতকারকের নাম বা চিহ্ন এবং পরীক্ষণ কেন্দ্রের ছাপ দেখে তবেই কেনার অনুরোধ জানিয়েছেন ভারতীয় মানক কেন্দ্রের আধিকারিকরা। এরপরও যদিও কোনও গ্রাহকের মনে গহনার শুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন জাগে তাহলে বিএসআই স্বীকৃত কোনও গহনা পরীক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে তা পরীক্ষা করাতে পারবেন ক্রেতারা। প্রসঙ্গত, সারা দেশে ৫৭৮টি হলমার্ক গহনা পরীক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ৫৪টি। আর কলকাতায় রয়েছে ২৮টি পরীক্ষণ কেন্দ্র। সোনার প্রতিটি গহনা পরীক্ষা করাতে খরচ পড়বে ৩৫ টাকা। রুপো ২৫ টাকা। এর সঙ্গে ধার্য প্রযোজ্য পরীক্ষণ শুল্ক দিতে হবে।
বস্তুত, গহনার উপর হলমার্কিং দেওয়ার প্রক্রিয়া একটি বিস্তৃত পদ্ধতি। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। বি আই এস হলমার্কিং সঙ্গে সঙ্গে করে দেওয়া যায় অথবা পরীক্ষণ মূল্য খুব বেশি–বিক্রেতাদের পাতা ফাঁদে পা দেওয়ার আগে ক্রেতাদের সচেতন থাকতে বলেছেন ভারতীয় মানক ব্যুরোর বৈজ্ঞানিক এফ কে কে পাল। প্রতারিত হলে www.bis.org.in এ গিয়ে স্থানীয় জুয়েলার্স- এর নাম এবং ঠিকানা সম্বন্ধে সমস্ত তথ্য দিতে পারবেন গ্রাহকরা। গহনা কেনার সময় পাকা রসিদ, যার মধ্যে শুদ্ধতার পরিমাণ, হলমার্কিং মূল্য বিশেষভাবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, হলমার্কিং-এর জন্য প্রতিটি সোনার গহনা পিছু বিক্রেতাদেরও ৩৫ টাকা দিতে হয়। এছাড়াও চালান প্রতি ২০০ টাকা দিতে বরাদ্দ থাকে বিক্রেতাদের জন্য। রুপোর ক্ষেত্রে অঙ্কটা ২৫ টাকা। এবং চালান পিছু ১৫০ টাকা।
[সোমবার দুপুর থেকে অভুক্ত জগন্নাথ, মাটিতে মিশল কয়েক টন মহাপ্রসাদ]
এ রাজ্যে হলমার্কের লাইসেন্স আছে প্রায় তিন হাজার স্বর্ণকারের কাছে। কলকাতায় সেই সংখ্যাটা ৮৪০ বলে জানিয়েছেন হলমার্কিং কেন্দ্র সমিতির সভাপতি হর্ষদ আজমেরা। তিনি বলেন, আরও বেশি সংখ্যক স্বর্ণকারকে হলমার্কিং লাইসেন্স দিতে অনলাইন ব্যবস্থা চালু হবে শীঘ্রই। পাশাপাশি ব্যবসার পরিমাণ অনুযায়ী স্বর্ণকারদের লাইসেন্স ফি দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, হলমার্কিং লাইসেন্স বাবদ স্বর্ণকারদের তিন বছরে দিতে হয় চব্বিশ হাজার টাকা।
হলমার্ক গহনা কেনা আগে দেখে নিন
- বি আই এস চিহ্ন।
- শুদ্ধতা- 22k916 অর্থাৎ ২২ ক্যারাট সোনার গহনা, 18k750 অর্থাৎ ১৮ ক্যারাট সোনার গহনা, 14k585 অর্থাৎ ১৪ ক্যারাট সোনার গহনা।
- শুদ্ধতা নিরূপণ ও হলমার্কিং পরীক্ষণ কেন্দ্রের ছাপ।
- বি আই এস-এর সংশিত গহনা নির্মাতার চিহ্ন।
দোকানে গিয়ে কী কী করবেন?
- বি আই এস-এর চিহ্ন দোকানের সাইনবোর্ডের বাঁদিকে প্রদর্শিত আছে কি না।
- ভারতীয় মানক ব্যুরোর প্রদত্ত লাইসেন্স দোকান মধ্যে রয়েছে কি না।
- একটি আতশ কাঁচের মাধ্যমে হলমার্কিং-এর চারটি চিহ্ন ভালভাবে দেখে নিন।
- তুলাদণ্ডের মাধ্যমে গহনার প্রকৃত ওজন পরখ করুন।
- পাকা রসিদ নিন।
[আধার তথ্য ফাঁস প্রভাব ফেলতে পারে ভোটের ফলে, উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট]
The post হলমার্ক গহনা কিনে ঠকলে কড়া ব্যবস্থা, জানালেন বিআইএস কর্তা appeared first on Sangbad Pratidin.