সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার সকালে গণনা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই ফলাফল স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। হাওয়া বুঝতে পেরে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে মুখের হাসি আরও চওড়া হয়ে ওঠে তাঁদের। পরিস্থিতি দেখে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের আগেই বিজেপিকে আক্রমণ করতে আসর নেমে পড়ে বিরোধীরা। প্রথমেই সরব হয়ে ওঠে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে এনডিএ জোট ছাড়া শিব সেনা। তারপর একে একে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে শুরু করে লালুপ্রসাদ যাদবের আরজেডি থেকে শুরু করে শরদ পওয়ারের এনসিপিও। সন্ধে হতেই পরিষ্কার হয়ে যায় যে বিজেপিকে সরিয়ে ঝাড়খণ্ডে সরকার গড়ছে কংগ্রেস, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (JMM) ও আরজেডি জোট। আর মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন জেএমএমের নেতা হেমন্ত সোরেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে এই পরাজয়ের জন্য নিজেকেই দোষারোপ করেন ঝাড়খণ্ডের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস। এই ফলের জন্য দল নয় তিনিই দায়ী বলে বিবৃতি দেন। যদিও তাতে কোনও লাভ হয়নি। মানুষ আর বিজেপিকে চাইছে না তাই এই ফল হয়েছে বলে দাবি করে বিরোধীরা।
সোমবার দুপুরে প্রথমে মুখ খোলেন শিব সেনার রাজ্যসভা সাংসদ ও মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত। ঝাড়খণ্ডে বিজেপির এই ফলের জন্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহকে দায়ী করেন তিনি। কটাক্ষ করে বলেন, ‘গত পাঁচ বছর ধরে ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। তারপরও এবারের নির্বাচনে জেতার জন্য সবরকম চেষ্টা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ। বিজেপিও মোদিজীকে সামনে রেখে ভোট প্রচারে গিয়েছিল। কিন্তু, তাতে কী হল? আসলে নাগরিকত্ব আইন সাহায্য করার বদলে বিজেপির ক্ষতিই করেছে। এর জন্যই আরও একটি রাজ্য হাতছাড়া হল তাদের। আমার মনে হয়, এবার বিজেপির এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করা উচিত। কেন মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড হাতছা়ড়া হল তার কারণ খতিয়ে দেখা উচিত।’
[আরও পড়ুন: CAA’র প্রতিবাদে রাজঘাটে ধরনায় রাহুল, প্রিয়াঙ্কা-সহ কংগ্রেস নেতৃত্ব]
অন্যদিকে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগেই হেমন্ত সোরেন ঝাড়খণ্ডের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন বলে জানিয়ে দেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনে মহাগঠবন্ধন যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে তা এককথায় পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বে ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করেছিলাম আমরা। তিনিই রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন।’
এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার বলেন, ‘আজ ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। এতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে মানুষ বিজেপি বিরোধী দলগুলির সঙ্গেই আছে। তাই রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং মহারাষ্ট্রের পরে তাঁরা ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতা থেকেও বিজেপিকে দূরে সরিয়ে রাখলেন।’
[আরও পড়ুন: শাপে বর রাহুলের অনুপস্থিতি! সোনিয়ার নেতৃত্বেই সাফল্য পাচ্ছে কংগ্রেস]
এদিকে ঝাড়খণ্ড থেকে বিজেপির বিদায় সুনিশ্চিত হওয়ার পরেই টুইট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। হেমন্ত সোরেনকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, ‘ঝাড়খণ্ড নির্বাচনে জয়ের জন্য হেমন্ত সোরেনজি ও জেএমএম নেতৃত্বাধীন জোটকে অভিনন্দন জানাই। তারা ভালভাবে রাজ্য চালাবেন এটাই আশাকরি। পাশাপাশি অনেকগুলি বছর বিজেপিকে ঝাড়খণ্ডের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য সেখানকার মানুষকে ধন্যবাদ জানাই।’
অমিত শাহ টুইট করেন, ‘ঝাড়খণ্ডের মানুষ যে রায় দিয়েছেন তাকে আমরা সম্মান জানাই। তাঁরা আমাদের গত পাঁচ বছর যে সেবা করার সুযোগ দিয়েছিলেন তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য বিজেপি সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
The post ঝাড়খণ্ডের ফলই প্রমাণ করল মানুষ বিজেপিকে চাইছে না, দাবি বিরোধীদের appeared first on Sangbad Pratidin.