সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যেদিন থেকে জলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্টতা শুরু, সেদিন থেকে ফেল্পসই তাঁর গুরু৷ মোটে ১৩ বছর বয়সে আইডলের সঙ্গে মুখোমুখি দেখা হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল৷ তখন কে জানত বছর আটেক পরে সময়ের অঙ্কে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে এক অভূতপূর্ব নাটকীয় মুহূর্ত! সেদিন কে জানত ‘গুরু’ ফেল্পসকে হারিয়েই ওলিম্পিকের ইতিহাস বদলে দেবেন সিঙ্গাপুরের অ্যাথলিট যোসেফ স্কুলিং৷ ওলিম্পিকে সিঙ্গাপুরকে প্রথম সোনা এনে দিয়ে ইতিহাসও গড়লেন তিনি৷
আট বছর আগে ফেল্পসের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়াই যেন ছিল তাঁর জীবনে অনুপ্রেরণার মন্ত্র৷ সেদিনই যেন আগামী ইতিহাসের এক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল৷ রিওয় ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে ২১ বছরের স্কুলিং যখন শেষ করলেন, তখন তাঁর পিঠে পড়ল স্নেহের হাত৷ সে হাত ফেল্পসেরই৷ ওলিম্পিকে ২৩তম সোনা জয় থেকে তাঁকে বঞ্চিত করলেন স্কুলিং৷ কিন্তু ভক্তের কাছে এ হার বোধহয় সম্মানেরই৷ আর তাই পিঠ চাপড়ে সেই সম্মানটুকু ফিরিয়ে দিতে দ্বিধা করলেন না ‘বাল্টিমোর বুলেট’ ৷
এযাবৎ সিঙ্গাপুর ওলিম্পিকে চার চারটি মেডেল জিতেছে৷ কিন্তু এতদিন সে দেশের ইতিহাসে কোনও সোনা ছিল না৷ তা সম্পূর্ণ হল স্কুলিংয়ের হাত ধরেই৷ একদিকে নিজের ছোটবেলার হিরোকেই হারানোর অদ্ভুত অনুভূতি, অন্যদিকে দেশের হয়ে প্রথম সোনা জেতা-ইতিহাসের উপাদান যেন এই মুহূর্তে উপচে পড়ছে স্কুলিংয়ের ঝুলিতে৷ আর তাতে কেমন অনুভূতি তাঁর? ‘এটা যে হয়েছে সেটাই ভাবতে পারছি না৷ দেশের জন্য আমি এমন একটা কাজ করতে পেরেছি যা কেউ কখনও করতে পারেনি৷ দেশের থেকে যে সমর্থন পেয়েছি তা অভূতপূর্ব৷ আর ফেল্পসকে হারানো এমন একটা অনুভূতি যা সারাজীবনেও আমি ভুলতে পারব না৷’, জানাচ্ছেন স্কুলিং৷ ওলিম্পিকের ২৩ তম সোনাটি পেলেন না ফেল্পস, তবে ভক্তের কাছে হেরে তিনি কী বলছেন? ‘হারলে কেউ খুশি হয় না৷ স্বাভাবিক আমিও খুশি নই, কিন্তু যোসেফের জন্য আমি গর্বিত৷’, জানাচ্ছেন ফেল্পস৷
মনে মনে একদিন ফেল্পসকে ছুঁতে চেয়েছিলেন যোসেফ স্কুলিং৷ নিজের দক্ষতায় সেই ফেল্পসকে পেরিয়েও যেতে পেরেছেন তিনি৷ আর ফেল্পস? ভক্তের কাছে পরাজয়ের মধ্যেও যে জয়ের আনন্দ আছে, কেরিয়ারের এই প্রান্তে এসে সে অনুভূতি ছুঁয়ে গেল কিংবদন্তি অ্যাথলিটকে৷ কেরিয়ারে অজস্র সোনা পেয়েছেন৷ এবার সোনা পাননি, কিন্তু এই অনুভূতিও যে সোনার থেকে কম খাঁটি নয়, তাই যেন বুঝলেন সাঁতারের বিস্ময়-মানুষ৷
The post ‘গুরু’ ফেল্পসকে হারিয়ে ইতিহাস সিঙ্গাপুরের যোসেফের appeared first on Sangbad Pratidin.