রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: জেলায় জেলায় দলে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে এ রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর বাজেট ভাষণের কর্মসূচি কতটা সফল হবে, তা নিয়ে সংশয় বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার (JP Nadda) কড়া নির্দেশ, ১০০ শতাংশ নেতা-কর্মী যেন বুধবার বাজেটের উপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) ভাষণ প্রচার কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকেন। কিন্তু দলে বর্তমান বিদ্রোহের পরিস্থিতিতে ১০০ শতাংশ তো দূর, তার অর্ধেক নেতা-কর্মীদের সেই কর্মসূচিতে শামিল করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
কারণ, কর্মসূচি কতটা সফল হল তার তথ্য-প্রমাণও দিল্লিকে দিতে হবে সব রাজ্যকে। সামনেই এ রাজ্যে পুরভোট। তার আগে কেন্দ্রীয় বাজেট জনমুখী। বিনিয়োগ-পরিকাঠামো উন্নয়নে সহায়ক হবে। কর্মসংস্থানমুখী বাজেট। এমনটাই দাবি করে একেবারে বুথ স্তর পর্যন্ত তা তুলে ধরতে চায় বিজেপি। আজ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মধ্যে দিয়েই সেই কর্মসূচির সূচনা করে গেরুয়া শিবির। মোদির ভাষণ বড়পর্দায় শোনানোর জন্য রাজ্য বিজেপির কাছেও দশ দফা নির্দেশিকা এসেছে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছ থেকে। শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, সারা দেশেই বুথ স্তরে বড়পর্দা লাগিয়ে মোদির বক্তব্য ‘লাইভ’ শোনানোর নির্দেশ দিয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন: চার্জে দিয়ে গেম খেলার সময় আচমকাই মোবাইল বিস্ফোরণ! মৃত্যু বধূর]
সামনেই সব পুরসভার নির্বাচন। তার আগে বুধবার বাংলাজুড়ে কেন্দ্রীয় বাজেট (Union Budget 2022-23) নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে একেবারে বুথস্তর পর্যন্ত প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। জেপি নাড্ডার নির্দেশে এই কর্মসূচিতে ১০০ শতাংশ নেতা-কর্মী যেন উপস্থিত থাকেন। ওই দিন রাজ্যের পদাধিকারী, রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃত্ব, মোর্চাগুলির রাজ্য নেতৃত্ব, ভারপ্রাপ্ত সদস্য, বিভিন্ন সেলের রাজ্য ইনচার্জ, কো-ইনচার্জদের উপস্থিত থাকতে হবে। বিজেপির সমস্ত সাংসদ ও বিধায়ক, নগর নিগমের সদস্য, জেলা পঞ্চায়েতের সদস্যকেও অংশ নিতে হবে এই কর্মসূচিতে। এমনকী প্রতিটি কর্মসূচির ছবি ‘নমো অ্যাপ’-এ পাঠানোর নির্দেশ এসেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে।
কোভিড পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়েই অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়। এই আবহে কেন্দ্রীয় বাজেট ভবিষ্যৎ ভারতের বাজেট। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বাজেট বলে মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি দপ্তরে এক সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন দলের প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। শমীক বলেন, কোভিড পরিস্থিতিতে যেখানে পৃথিবীর চাকা থমকে গিয়েছে। তখন বাজেটে পিএম গতিশক্তি প্রকল্পে পরিকাঠামো উন্নয়নে সাড়ে ৭ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। ৬০ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে। প্রান্তিক-গ্রামীন মানুষ, কৃষক-শ্রমিকের জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ যে এই বাজেটে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের এই বিষয়গুলো প্রচারে তুলে ধরতে চাইছে বিজেপি। আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কোনও উদ্যোগ বা মধ্যবিত্তের জন্য কোনও সুরাহা এই বাজেটে নেই বলে সরব বিরোধীরা। শমীকের দাবি, কোনও নির্বাচনী চমক বা সস্তার চমকের এই বাজেট নয়।
[আরও পড়ুন: WB Civic Polls: ২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮ টি পুরসভার ভোট, সর্বদল বৈঠক ডাকল নির্বাচন কমিশন]
এদিকে, কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে অমিত মিত্রের সমালোচনার পালটা তোপ দেগেছেন এদিন শমীক ভট্টাচার্য। অমিত মিত্রের নাম না করেই তিনি বলেন, গত দশ বছরে এ রাজ্যে কত বিনিয়োগ হয়েছে সেটা আগে প্রকাশ্যে আনুন। অন্যদিকে ব্যক্তিগত কর কাঠামো অপরিবর্তিত রেখে কর্পোরেট করে ছাড় দেওয়া নিয়ে শমীকের যুক্তি, কর্পোরেট কর ছাড় হলে সেই টাকা তো বাজারেই থাকবে। নতুন বিনিয়োগ-শিল্প তো প্রয়োজন।