সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল। তাই বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন পাভলভ হাসপাতালের চার চিকিৎসক। কিন্তু তাঁদেরকে ফিরিয়েই দিলেন কারনান৷ সাফ জানিয়ে দিলেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা তিনি করাবেন না।
[কুকুরের প্রস্রাবকে কেন্দ্র করে বচসায় চলল গুলি, আহত ৪]
এদিন বেলা এগারোটা নাগাদ ওই চার চিকিৎসক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নির্দেশ মেনে বিচারপতি কারনানের ‘মানসিক স্বাস্থ্য’ পরীক্ষা করতে তাঁর রাজারহাটের রোসডেল টাওয়ারের বাড়িতে যান৷ সঙ্গে ছিলেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সদর) সুধাকরণ-সহ ২০ জন পুলিশ৷ ওই চিকিৎসকদের বিচারপতি কারনান স্পষ্ট জানান, কারও মানসিক চিকিৎসা করতে গেলে আগে অভিভাবকদের সম্মতি লাগে৷ এভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যায় না৷ আর বাড়িতেও কেউ নেই। তাই স্বাস্থ্যপরীক্ষাও করা যাবে না। হাসপাতালের কর্তাকে এ ব্যাপারে চিঠি লেখার কথাও বলেন তিনি৷
[মারিও টেস্টিনোর ‘টাওয়েল সিরিজে’র নয়া মুখ এবার এই অভিনেতা]
এর আগে গত সোমবার সি এস কারনানের বিরুদ্ধে একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, অবিলম্বে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত। মেডিকেল বোর্ড গঠন করতেও নির্দেশ দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জেএস খেহর ও সাত সদস্যের বেঞ্চ নিজেদের রায়ে বলেছিল, ‘৪ মে কারনানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং ৮ মে মেডিকেল বোর্ডকে সেই রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৮ মে।’ এর পাশাপাশি মেডিকেল বোর্ডকে সাহায্য করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের ডিজিপি-কে একটি বিশেষ দল গঠনের পরামর্শও দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। আর সেই নির্দেশমতোই এদিন কারনানের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন ওই চিকিৎসকরা। কিন্তু ফিরিয়ে দিলেন কারনান।
[প্রধানমন্ত্রীর ভাইয়ের সচিব পরিচয় দিয়ে প্রতারণা, আটক এক ব্যক্তি]
যদিও ১ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেই নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কারনান বলেছিলেন, ‘কোনও রকম স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাব না। সাত জন দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারক মিলে আমার বিচার করছে। আমি দলিত বলেই আমার সঙ্গে এরকম করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের ডিজিপি যদি জোর করে আমার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসে, তাহলে আমি নিজেই তাঁর সাসপেনশনের নির্দেশ দিতে বাধ্য হব।’ এমনকী দিল্লি পুলিশকে সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন। যদিও শীর্ষ আদালত ১ মে-র শুনানিতে জানিয়েছিল, ‘কারনানের কোনও নির্দেশই কার্যকর হবে না।কোনও বিশেষ আদালত বা ট্রাইবুনালও এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।’ পাশাপাশি জানানো হয়, কারনান যদি আদালতে নিজের বক্তব্য পেশ না করে, তাহলে ধরে নেওয়া হবে তাঁর কিছু বলার নেই।
[অগ্নি-২ ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল উৎক্ষেপণ করল ভারত]
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদ্যস্যের এই বেঞ্চই বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন৷ দেশের প্রায় ২০ জন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন কারনান৷ এমনকী বিচারব্যবস্থা ও সরকারের কাজের সমালোচনা করে মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও আক্রমণাত্মক ভাষায় চিঠি লিখেছিলেন বিচারপতি কারনান৷ সেই চিঠি তিনি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে পাঠিয়েছিলেন৷ এরপরই সর্বসম্মতিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছিল শীর্ষ আদালত৷ এই মামলার শুনানিতে একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিচারপতি কারনানকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল৷ কিন্তু তিনি হননি। আর তারপরই কারনানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
[‘পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে এত ঔদ্ধত্য? লজ্জা হয় আমার’]
The post মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নারাজ, চিকিৎসকদের ফেরালেন বিচারপতি কারনান appeared first on Sangbad Pratidin.