ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের রাজনৈতিক অস্তিত্বটুকুও কি অতীত হয়ে গেল? কালিম্পং পুরসভার চেয়ারম্যানের পদত্যাগ সেই প্রশ্ন তুলে দিল। ওই পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন গুরুং অনুগামী হিসাবে পরিচিত শুভ প্রধান। দ্রুত এই পুরসভার দখল নিতে চলেছেন বিনয় তামাংয়ের অনুগামীরা।
[বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনা, ৫ জনের মৃত্যু]
আস্থা ভোটে হার নিশ্চিত। দেওয়াল লিখনে পড়ে ফেলে ভোটাভুটির আগেই সরে দাঁড়ালেন কালিম্পংয়ের পুরপ্রধান শুভ প্রধান। গত ৪ ডিসেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে ১৪ জন কাউন্সিলর অনাস্থা আনেন। তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আস্থা প্রমাণ করতে বিশেষ বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ২৩ আসনের কালিম্পং পুরসভায় বর্তমানে ২২ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। বরুণ ভুজেল নামে এক কাউন্সিলরের কিছুদিন আগে মৃত্যু হয়। পাহাড়ে অশান্তির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি জেল হেফাজতে ছিলেন। কালিম্পং পুরসভার ২২ কাউন্সিলরের মধ্যে মোর্চার ১৮ জন। এ ছাড়া দু’জন তৃণমূলের ও দু’জন জন আন্দোলন পার্টির। গুরুংপন্থী হিসাবে পরিচিত চেয়ারম্যান শুভ প্রধানের বিরুদ্ধে ১৪ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেন। কিন্তু তারপরও আস্থা ভোটে তিনিই জিতবেন বলে দাবি করে আসছিলেন শুভ প্রধান। তবে গত কয়েক দিনে ওই মোর্চার নেতার গলার জোর কমতে থাকে। বিপদ বুঝে শুভ প্রধান মোর্চা ছাড়তে চেয়েছিলেন। অন্য ছক কষাও শুরু হয়েছিল। চেয়ারম্যানের এই মতলব বুঝে বিনয় তামাং জানিয়েছিলেন দু নৌকায় পা দিয়ে চলছেন শুভ। তাঁকে সরানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিনয় তামাং। এদিন শুভ প্রধানের ইস্তফায় ওই পুরসভাও বিনয় শিবিরের দখলে চলে এল। বিশেষজ্ঞদের মতে এর ফলে বিমল গুরুংয়ের রাজনৈতিক কফিনে শেষ পেরেকটাও পুঁতে দিলেন বিনয়পন্থীরা।
[শীতে দিঘায় পিকনিকে যাচ্ছেন, এই নতুন নিয়মটি জানেন তো?]
পাহাড়ের চার পুরসভার মধ্যে মিরিক তৃণমূলের দখলে। দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান ডি কে প্রধান জেলে। ওই পুরসভার বাকি ২৯জন কাউন্সিলরও চেয়ারম্যানকে সরাতে এক পায়ে খাড়া। কার্শিয়ংয়ের কৃষ্ণ লিম্বু সম্প্রতি বিনয় শিবিরে ভিড়েছেন। পাহাড়ের তিন বিধায়কের মধ্যে দুজন অমর সিং রাই এবং রোহিত শর্মাকেও এখন নিয়মিত বিনয় তামাংয়ের সঙ্গে দেখা যায়। আর এক বিধায়ক সরিতা রাই দল ছেড়েছেন। এক এক করে প্রায় সব জনপ্রতিনিধি বিমল গুরংয়ের শিবির বদলাতে থাকায় মোর্চা সভাপতির রাজনৈতিক অস্তিত্ব প্রশ্নচিহ্নের সামনে ফেলে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।