ধীমান রায়, কাটোয়া: জগন্নাথের কৃপাতেই কোটিপতি রামকৃষ্ণ! পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের এক হতদরিদ্র যুবক রামকৃষ্ণ দাস ৩০ টাকার লটারির (Lottery) টিকিট কেটে জিতেছেন এক কোটি টাকার প্রথম পুরস্কার। সোমবার রাতে ওই টিকিটের খেলার ফলাফল প্রকাশ হয়। সোমবার ছিল জগন্নাথ (Jagannath) দেবের রথযাত্রা। সেই দিনেই পুরস্কার জিতে আপ্লুত রামকৃষ্ণ দাস। তাঁর কথায়, “প্রভু জগন্নাথ আমাদের দিকে মুখ তুলে চেয়েছেন। তাই এতটাকা পুরস্কার পেয়েছি।”
ভাতার গ্রামের দাসপাড়ার কাছে ভাতার কামারপাড়া সড়কপথের ধারে সাদামাটা একটি বাড়িতে খুব কষ্ট করেই বসবাস করেন রামকৃষ্ণ দাস ও তাঁর পরিবার। রামকৃষ্ণরা পাঁচ ভাই ও দুই বোন। সকলেই বিবাহিত। বিধবা মা রয়েছেন। সরকারি খাসজমিতে ইঁটের গাঁথনি আর আ্যসবেসটসের চাল দিয়ে খুব কষ্ট করেই বসবাসের বাড়িটি তৈরি করেছেন বলে রামকৃষ্ণের দাদা স্বপন দাস জানিয়েছেন। খুব অল্প জায়গাতেই পরিবারের সকলকে থাকতে হয়। পারিবারিক জমিজমা বলতে কিছু নেই।
[আরও পড়ুন: নিম্ন বুনিয়াদি স্কুলে BCA পাশ করেছেন! শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে নিশীথকে খোঁচা উদয়ন গুহর]
আগে সবজির ব্যবসা করতেন রামকৃষ্ণ। তারপর লটারির টিকিট বিক্রি করতে শুরু করেন। ভাতার রেলস্টেশন চত্বরে বসে লটারির টিকিট বিক্রি করেন তিনি। কিন্তু অতিমারী (Pandemic) আবহে ব্যবসা তেমন চলছিল না। কয়েকদিন টিকিট বিক্রি বন্ধ ছিল। বাজারে বেশকিছু টাকা ধারও হয়ে গিয়েছিল। পরিবারের অন্যান্যরা কেউ সবজি বিক্রি করেন। কেউ কাঠের মিস্ত্রি। লটারি জেতা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রামকৃষ্ণর বলেন, “সোমবার বাজারহাট করার মতন টাকা ছিল না। টাকার অভাবে ব্যবসার জন্য টিকিট তুলতে পারিনি। ধারদেনা হয়ে যাওয়ায় নতুন করে ধার কেউ দিতে চাইছিল না। পকেটে সামান্য ৫০ টাকা ছিল। সেই টাকার মধ্যে ৩০ টাকার টিকিট কিনি। রাতে খবর পাই আমার এক কোটি টাকা পুরস্কার পড়েছে।”
খবর পাওয়ার পর থেকেই দাস পরিবারে খুশির হাওয়া। কী করবেন এই টাকা দিয়ে? প্রশ্নের উত্তরে রামকৃষ্ণ দাস বলেন, “একটা বাড়ি করবো। মা ও বাড়ির সবাই যাতে একটু ভালভাবে থাকতে পারে।” তবে আর লটারির টিকিট বিক্রি করতে চান না রামকৃষ্ণ। তিনি বলেন, “টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত রেখে একটা টোটো কিনে চালাব। তবে আর টিকিট বিক্রি করতে চাই না।”
ছবি: জয়ন্ত দাস