সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন জার্মান ফাইটার পাইলট ম্যানফ্রেড ভন রিখঠোফেন। মিত্রশক্তির বিমানবাহিনীর কাছে ত্রাস হয়ে উঠেছিল তাঁর লাল রংয়ের ট্রাইপ্লেন। আজও ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে ‘রেড ব্যারন’-এর বীরগাথা। কিন্তু সময় পালটেছে। কাঠ-চামড়ার তৈরি ট্রাইপ্লেনের জায়গা নিয়েছে অত্যাধুনিক ফাইটার জেট। তাই যুদ্ধের গতিপথও বদলে গিয়েছে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিপক্ষের আধুনিক যুদ্ধবিমান বধে এবার ‘অস্ত্র’ মিসাইলের (Astra Mark 2) পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করতে চলেছে ভারত।
[আরও পড়ুন: ‘আমরাও আক্রমণাত্মক হতে পারি’, চিনকে হুমকি ভারতীয় বায়ুসেনা প্রধানের]
জানা গিয়েছে, চিন (China) ও পাকিস্তানের বিমানবাহিনীকে একযোগে টক্কর দিতে ‘অস্ত্র’ মিসাইলকে হাতিয়ার করতে চলেছে ভারত (India)। চলতি বছরেই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রটির ট্রায়াল শুরু করতে চলেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। মূলত, রাশিয়ার তৈরি সুখোই যুদ্ধবিমান, ও দেশে তৈরি তেজস ফাইটার জেটগুলিতে ব্যবহার করা হবে এই অত্যাধুনিক মিসাইল। বর্তমানে, রাশিয়া, ফ্রান্স ও ইজরায়েলের তৈরি অত্যন্ত দামি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেই হাতিয়ারগুলির জায়গা নেবে ‘অস্ত্র’। জানা গিয়েছে, শব্দের চারগুণ গতিসম্পন্ন এই মিসাইলটি মাঝ আকাশে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত শত্রুর যুদ্ধবিমানে আঘাত হানতে সক্ষম। অর্থাৎ, দৃষ্টিশক্তির বাইরে গিয়েও (beyond visual range) হামলা চালাতে সক্ষম এই ক্ষেপণাস্ত্রটি। শুধু তাই নয়, দিনে ও রাতে এবং যেকোনও আবহাওয়ায় হামলা চালাতে পারে ভারতের এই মিসাইল। ট্রায়াল শেষ হলেই বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে অস্ত্রটিকে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে যুদ্ধবিমানের অভাবে ভুগছে বায়ুসেনা। যেখানে ৪০টি ফাইটার স্কোয়াড্রনের প্রয়োজন, সেখানে বর্তমানে মাত্র ৩০টি ফাইটার স্কোয়াড্রন রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণেই ৮৩টি তেজস আসছে বিমান বাহিনীতে। এবং ওই বিমানগুলিতে থাকবে ‘অস্ত্র’ মিসাইল। এক-একটি স্কোয়াড্রনে ১৮টি করে যুদ্ধবিমান থাকে। তেজস যুদ্ধবিমানটি বানিয়েছে সামরিক বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা হ্যাল। ‘লাইট কমব্যাট এয়ারক্রাফট’টি সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মীত। বায়ুসেনার জরাগ্রস্ত মিগ-২১ বিমানগুলির জায়গা নেবে তেজস। ইতিমধ্যেই একাধিক পরীক্ষায় সফলভাবে উতরেছে বিমানটি। গতবছর প্রায় ২০ হাজার ফুট উচ্চতায় রাশিয়া নির্মিত ‘আইএল-৭৮’ জ্বালানিবাহী বিমান থেকে জ্বালানি ভরা হয় তেজসে। স্বল্প সময়েই প্রায় ১৯ হাজার লিটার জ্বালানি পৌঁছে যায় যুদ্ধবিমানটির পেটে। মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরে বিশ্বের প্রথম সারির সামরিক শক্তির তালিকায় নাম লেখায় ভারত।