জিষ্ণু বসু: রহস্যজনকভাবে মারা গেলেন কেরলের (Kerala) সাংবাদিক এস. ভি. প্রদীপ। কেরলের বিজয়ন সরকারের সবচেয়ে বড় সমালোচক, অনলাইন সোনা চোরাচালান চক্রের রহস্য উন্মোচনের প্রধান কৃতিত্ব যাঁর, যিনি কেরলে ক্রমবর্ধমান জেহাদি মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতেন, সেই মানুষটার মৃত্যুর প্রায় কোনও খবরই এ-রাজ্যের মানুষ জানতে পারল না। প্রদীপের স্কুটারকে পিছন থেকে চাপা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল একটা টিপার ট্রাক। প্রদীপ তাঁর পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল সদস্য ছিলেন। রয়ে গেলেন স্ত্রী, ১২ বছরের ছেলে, বৃদ্ধা মা আর এক অবিবাহিতা বোন। প্রত্যেকে সেদিন প্রদীপের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু প্রদীপ আর ফিরলেন না।
[আরও পড়ুন: করোনা টিকা আমদানিতে তৎপরতা, সেরামকে ৬০০ কোটির ব্যাংক গ্যারান্টি দিল বাংলাদেশ]
প্রদীপের মা এবং বোন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, কীভাবে প্রতিদিন ফোনে, সোশ্যাল মিডিয়ায়, রাস্তাঘাটে শাসানো হত প্রদীপকে। প্রদীপের মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা, না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড– তা কখনও প্রকাশ্যে আসবে কি না, জানা নেই। কিন্তু এই ঘটনা বাংলার মানুষ জানবে না? এই না জানানোর নেপথ্যে যে-তত্ত্ব, তা অনেকের মতে, ‘কনস্পিরেসি অফ সাইলেন্স’। যাদবপুরের উপাচার্য গোপালচন্দ্র সেন থেকে এস. ভি. প্রদীপ– প্রত্যেকের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে চটজলদি লোকচক্ষুর আড়ালে নিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে এই পরিকল্পনা কাজ করে এসেছে দশকের পর দশক।
প্রদীপ ‘নিউজ ১৮’, ‘জয় হিন্দ’, ‘মিডিয়া ওয়ান’, ‘মঙ্গলম’ আর ‘কৈরালী’-র মতো বহু নামী সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর প্রকাশ করা সোনা চোরাচালানের মূল অভিযুক্তদের অন্যতম স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর অতিরিক্ত সচিব রবীন্দ্রন। অতি সম্প্রতি মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট ইডি-র হাত থেকে বাঁচার জন্য তাঁর করা আবেদন খারিজ করেছে। এই বছরই ৫ জুলাই তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে ৩০ কিলোগ্রাম ২৪ ক্যারেটের সোনা ধরা পড়ে। সেই সোনা তিরুবনন্তপুরমের সংযুক্ত আরব আমিরশাহির দূতাবাসে পৌঁছোনর কথা ছিল। এই ভয়ানক ঘটনায় মুখ্যসচিব এম. শিবশঙ্কর পদ হারান। প্রদীপের মতো হাতেগোনা কিছু সাংবাদিক প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে এই চক্রের মূল খুঁজে বের করতে চেয়েছিলেন।
সাংবাদিকের রহস্যজনক মৃত্যু বা হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা কমিউনিস্ট কেরলে উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। সোনি ভাট্টাথিরিপাদ এমনই একজন নামকরা সাংবাদিক। মালয়ালম সংবাদমাধ্যমের অত্যন্ত চেনা-মুখ ছিলেন তিনি। আশ্চর্যজনকভাবে পৃথিবী থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কী অপরাধ ছিল তাঁর? উনি সর্বপ্রথম ‘এন্ডোসুলফান বিষক্রিয়া’-র কথা প্রচারমাধ্যমে আনেন। কেরলের বাম সরকারের অবহেলায় এক দশকের বেশি সময় ধরে কাজুবাদাম-সহ অনেক শস্যে অবাধে ব্যবহৃত হয়েছে এন্ডোসুলফান কীটনাশক। কখনও হেলিকপ্টার দিয়েও এই বিষ ছড়ানো হত। উত্তর কেরলের গ্রামের পর গ্রাম এই বিষের প্রভাবে মানুষ অসুস্থ হয়েছে, পঙ্গু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কমিউনিস্ট সরকার আর গ্রামে গ্রামে পার্টির হার্মাদরা মানুষের মুখ বন্ধ করে রেখেছিল। একমাত্র সাহস করেছিলেন সোনি ভাট্টাথিরিপাদ। তিনি তখন ‘মালয়ালা মনোরমা’ কাগজের কাসারগোড় জেলার সম্পাদক। সোনি প্রথম প্রতিবাদের কণ্ঠ হয়ে ওঠেন। রাজ্যবাসী জানতে পারে সেই বীভৎসতার আখ্যান, তার থেকে দেশ, তারপর পৃথিবী। কিন্তু কোথায় হারিয়ে গেলেন সোনি? এলডিএফ সরকার, কেরলের পুলিশ কী বলছে?
বিরোধী সাংবাদিকতার টুঁটি টিপে ধরে শেষ করাটাই কমিউনিস্ট নীতি। পৃথিবীতে কোথাও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ১৯৮৮ সালের ২৪ নভেম্বর, শিলিগুড়িতে প্রকাশ্য রাস্তায় খুন করা হয়েছিল উত্তরবঙ্গের একটি বিশিষ্ট দৈনিকের সঙ্গে যুক্ত দিবাকর মণ্ডলকে। কমিউনিস্ট শ্রমিক সংগঠন সেই বাংলা সংবাদপত্র আর নেপালি কাগজ ‘হিমালচুলি’-র বিতরণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। কারণ এরা বাম সরকারের ততটা অনুগত ছিল না। কলকাতা ও রাজ্যের অন্যত্র এমন করেই নয়ের দশকে কয়েকটি নিরপেক্ষ সংবাদপত্রের উপর নিরন্তর আক্রমণ হত। সাংবাদিক নিগ্রহ সীমা ছাড়িয়েছিল ১৯৯০ সালের কলকাতা পুরনির্বাচনের সময়।
মস্কোর রাস্তায় বৃষ্টি হলে কলকাতায় কমিউনিস্টরা ছাতা খুলতেন। সাংবাদিক নিগ্রহ আর নৃশংসতার পাঠ কমিউনিস্টরা স্ট্যালিনের রাশিয়া থেকে শিখেছিলেন। আজ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় স্ট্যালিনের সময়কার অমানবিক নরসংহার নিয়ে গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। স্ট্যালিনের জমানায় সত্য প্রকাশের পুরস্কার ছিল মৃত্যু। ১৯৩০-’৩১ সালে ইউক্রেনের অবাধ্য জনগণকে সহবত শেখাতে স্ট্যালিন যা করেছিলেন, তা চেঙ্গিস খাঁ বা হিটলারকেও লজ্জা দেবে। ইউক্রেনের স্থানীয় ভাষায় ‘হোলোডোমর’ কথাটির অর্থ ‘খেতে না দিয়ে মেরে ফেলা’। স্ট্যালিন নিজের দেশের একটি অংশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঠিক সেটাই করেছিলেন। এই মনুষ্যসৃষ্ট দুর্ভিক্ষতে মারা যান প্রায় এক কোটি মানুষ।
পশ্চিমের সংবাদমাধ্যমে হোলোডোমরের কথা প্রথম প্রকাশ্যে আনেন ওয়েলসের এক সাংবাদিক গেরিথ জোন্স। গেরিথের মা কাজের সূত্রে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জোন্স ইউক্রেনকে ভালবাসতেন অন্তর থেকে। ১৯৩৩ সালের ২৯ মার্চ, বার্লিনে তাঁর সাংবাদিক সম্মেলনে, বিশ্ববাসী প্রথম জানতে পারলেন স্ট্যালিনের সোভিয়েত রাশিয়ার সেই নারকীয় বীভৎসতার কথা। সেই ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, সেই নিদারুণ নিষ্ঠুরতা আর রাশিয়ার মানুষের প্রকৃত অবস্থা প্রত্যেকের সামনে উন্মোচিত হল। তাই সোভিয়েত গুপ্তচর সংস্থা তঁাকে হত্যা করার আদেশ পেয়েছিল। ১৯৩৫ সালে চিনের মাটিতে হত্যা করা হয় সর্বকালের অন্যতম সৎ, সাহসী সাংবাদিক গেরিথ জোন্সকে।
আমরা যখন কৈশোর থেকে যৌবনে পা দিলাম, তখন সমাজসচেতন যুবকদের জন্য অবশ্যপাঠ্য ছিল সাংবাদিক জন রিডের ‘দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন’। জন রিড মার্কিন সাংবাদিক ছিলেন। বিপ্লবের টানে রাশিয়াতে এসে ভালবেসে ফেলেন দেশটাকে। মাত্র ৩৩ বছরে তাঁর মৃত্যুর পরে সোভিয়েত রাশিয়ায় রাষ্ট্রীয় সম্মানে ঐতিহ্যমণ্ডিত ক্রেমলিন ওয়াল নেক্রোপলিসে তাঁকে সমাহিত করা হয়। জন নভেম্বর বিপ্লবের সময় মস্কোতেই ছিলেন। তিনি বিপ্লবের প্রতিটি পর্যায় কাছ থেকে দেখেছেন। বিপ্লবের প্রতি শ্রদ্ধাবনতভাবে ঘটনার যথাসম্ভব বাস্তব বর্ণনা করেছিলেন। তাই স্বাভাবিক কারণে তাঁর বইতে লেনিনের ছায়াসঙ্গী ট্রটস্কির বীরগাথা আছে, স্ট্যালিন প্রায় নেই। কিন্ত স্ট্যালিন ক্ষমতা হাতে পেয়ে ট্রটস্কিকে গ্রেপ্তার করেন, দেশছাড়া করেন এবং সবশেষে তাঁর পাঠানো ঘাতক সুদূর মেক্সিকোতে বরফ কাটা কুড়াল দিয়ে তাঁকে হত্যা করেছিল। রাশিয়ার মানুষের জন রিডের গ্রন্থ পাঠ করলে বিপদ! স্ট্যালিনের সোভিয়েত রাশিয়ায় তাই নিষিদ্ধ হয়েছিল জন রিডের ‘দুনিয়া কাঁপানো দশ দিন’!
ম্যাক্সিম গোর্কির ‘মা’ না পড়লে শ্রেণিচেতনা গড়ে ওঠে না, এমনটা শুনেই আজকের বাঙালি বড় হয়েছে। গোর্কির সম্মান সে-যুগেও পৃথিবীতে ছিল। ইউরোপের বুদ্ধিজীবী সংঘ থেকে লিও টলস্টয়, সকলের কাছে সমাদৃত ছিলেন গোর্কি। বিপ্লবের প্রতি গোর্কির গভীর রোমান্টিকতা ছিল। তাই যখন স্ট্যালিনের সোভল্কি দ্বীপের সংশোধনাগার ‘গুলাগ’-এর দুর্নাম চারদিকে ছড়িয়ে গেল, গোর্কি একবার নিজে চোখে দেখতে চাইলেন সংশোধনাগারটি। ১৯২৯ সালের ২০ জুন গোর্কিকে আসতে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সেই দ্বীপে। গোর্কি তিন রাত ছিলেন সেখানে। তাঁর আসার আগে প্রশাসন ঢেলে সাজিয়েছিল সংশোধনাগার। মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল সব অত্যাচার, অমানবিকতার চিহ্ন আর রক্তের দাগ। সবই ঠিক ছিল। কিন্তু ২১ জুন দুপুরে বিভ্রাট তৈরি করল ১৪ বছরের একটি ছেলে। ‘গুলাগ আর্কিপেলাগো’ গ্রন্থের লেখক আলেকজান্ডার সলঝেনিৎসিন ছেলেটির নামটা লিখতে পারেননি। কিন্তু ঘটনার অনুপুঙ্খ বর্ণনা করেছেন।
গোর্কি শিশু বিভাগ পরিদর্শনের সময় ওই ছেলেটি হঠাৎ বলে ওঠে, ‘গোর্কি, আপনি যা দেখছেন, তা সত্যি নয়। আসল সত্যি আমি বলতে পারি, শুনবেন?’ গোর্কি সকলকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা ছেলেটির কাছে সব শুনলেন। কীভাবে মশামাছি ভরতি স্যুপ খেতে বাধ্য করা হয়, কীভাবে ঘোড়ার বদলে মানুষ দিয়ে গাড়ি চালানো হয়, দেওয়ালে লাগানো ‘সিকারা’তে সারাদিন মানুষকে বসিয়ে রেখে রাতে একজনের উপর অন্যজনকে শুতে দেওয়া হয়, বরফের মধ্যে রাত্রে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অসুস্থ মানুষদের ফেলে রাখা হয়, কীভাবে ছোট ছেলেদের সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে ফেলে দেওয়া হয়। সব, সব কিছু বলে দিয়েছিল ছেলেটি।
গোর্কি ২২ জুন, ১৯২৯ ভিজিটর্স বুকে লিখলেন, ‘কিছু একটা এখনই লিখে যাওয়ার মতো মনের অবস্থা আমার নেই, ভাল লাগছে না, সত্যি বলতে কী লজ্জা করছে! বিপ্লবীদের আত্মবলিদান, যোদ্ধাদের অক্লান্ত সংগ্রাম তো এক সুস্থ সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার জন্য ছিল…।’ পরের দিন গোর্কি সোভল্কি ছেড়ে চলে আসেন। গোর্কির স্টিমার ঘাট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ১৪ বছরের ছেলেটিকে গুলি করে মেরে ফেলে দেওয়া হয়।সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে। সোভিয়েত রাশিয়ার স্থান নিয়েছে আজকের কমিউনিস্ট চিন। ‘কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট (সি. পি. জে)’ ২০১৯ সালে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায় সাংবাদিকদের গ্রেফতার করার নিরিখে পৃথিবীতে সবথেকে উপরে আছে চিন। হাজার হাজার ওয়েবসাইট চিনে ‘নিষিদ্ধ’। ফেসবুক, টুইটার, উইকিপিডিয়া, লিংকডইন এমন সব জনপ্রিয় সাইটই চিনে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শি জিনপিং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে চিনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রায় স্তব্ধ। ২০১৩ সালে ‘সাদার্ন উইকলি’ পত্রিকার সাংবাদিকরা একসঙ্গে কাজ বন্ধ করে দেন। কমিউনিস্ট সরকার তাদের নববর্ষ সংখ্যা বন্ধ করে ‘চিন জাতির নবোত্থানে’ কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকার উপর বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করতে আদেশ দিয়েছিল।
কিন্তু এই ধরনের অবাধ্য সাংবাদিকদের শায়েস্তা করার বিষয়ে ভীষণ নিষ্ঠুর চিনের কমিউনিস্ট সরকার। চার্লস জু এমনই একজন সাংবাদিক, প্রকাশ্য সমালোচক ছিলেন শি জিনপিং সরকারের। তাঁর ফলোয়ার ছিল ১ কোটি ২০ লক্ষ। তাঁকে মিথ্যে অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, শি জিনপিং জমানার শুরুতেই দেশে একুশে আইন আরোপিত হয়েছে। যে-খবর কমিউনিস্ট পার্টি ‘অসত্য’ মনে করবে তা প্রচার করলে তিন বছর পর্যন্ত জেল হবে। সেই বছরে প্রায় ৫০০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার মধ্যে গানসু প্রদেশের তিয়ানসুই জেলে ১৬ বছরের এক স্কুলছাত্রও ছিল।
‘আল-জাজিরা’র সাংবাদিক মেলিসা চ্যান-কে ২০১২ সালেই চিন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ভদ্রমহিলার অপরাধ ছিল তিনি চিনে মুসলমান সম্প্রদায়ের উপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বহির্বিশ্বে প্রকাশ করেছিলেন। পল মুনির মতো বহু সাংবাদিককেই ১৮-১৯ বছর সাংবাদিকতা করার পরেও সত্য কথা বলার জন্য ভিসা না-দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হল। সাংবাদিকতায় সেনসর-রাজ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে চিনে। ভারত প্রতিবেশী দেশ। তাই, কেরলের একের পর এক সাংবাদিক হত্যা বা নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা স্পষ্টতই ‘অশনি সংকেত’। ‘উটপাখি’ কবিতায় কবি সুধীন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছিলেন, ‘অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে?’ আজ কলকাতার একশ্রেণির সংবাদমাধ্যম উটপাখির মতোই বালিতে মুখ গুঁজে আছে। তারা বাক-স্বাধীনতার জন্য আকাশ-বাতাস মথিত করে তোলে। কিন্তু চিনের প্রসঙ্গে বা কেরলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে অদ্ভুত নীরবতা অবলম্বন করে। কিন্তু তাতে ঝড় থেমে যাবে না, এই অন্যায় নীরবতা বাংলার ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসাবে লেখা থাকবে।