সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বন্দ্ব ছিলই৷ শেষবেলাতেও তা মিটল না৷ এরাজ্যে কার্যকালের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিদায় নিচ্ছেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী৷ আর সেই বিদায়লগ্নেই রাজ্য সরকারের তুমুল সমালোচনা করে গেলেন তিনি৷ যদিও রাজ্যপালের এই সমালোচনামূলক বক্তব্য সামনে আসতেই তার যথাযথ জবাব দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷
[ আরও পড়ুন: বিজেপিকে রুখতে সিপিএমের পথে তৃণমূল! ৩ লক্ষ হোলটাইমার নিয়োগের ভাবনা মমতার]
নবান্ন আর রাজভবনের মতানৈক্য নতুন কিছু নয়৷ একাধিক ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সঙ্গে বিদায়ী রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর মতান্তর হয়েছে৷ সে শিক্ষাঙ্গনে অশান্তিই হোক কিংবা রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা ইস্যুতেই হোক, কেশরীনাথ ত্রিপাঠী অনেক সময়েই রাজ্য সরকারের সম্পূর্ণ বিপরীত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন৷ কখনও ব্যক্তিগত মতামতও সংবাদমাধ্যমের সামনে বলে ফেলেছেন৷ এরাজ্যে সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব শেষ করে বিদায় নেওয়ার সময়েও সেই মতানৈক্য ঘুচল না৷ বরং, এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি কিছুটা ব্যক্তিগত আক্রমণই করে বসলেন তিনি৷
সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর বক্তব্য খানিকটা এরকম – ‘তোষণ রাজনীতিতে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে৷ বাংলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি প্রয়োজন৷ বাংলার সব নাগরিককে সমান চোখে দেখা উচিত৷ মুখ্যমন্ত্রীর আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন৷’ এ থেকেই স্পষ্ট, নিজের মেয়াদকালে সরকারের সঙ্গে আসলে তাঁর কতটা বিরোধ তৈরি হয়েছে৷ কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর এই মন্তব্যে আবার শাসকঘনিষ্ঠ কেউ কেউ মনে করছেন, তাঁর এসব কথা প্রকারান্তরে বিজেপি ঘেঁষা৷
[ আরও পড়ুন: পুজোকমিটিকে অন্ধকারে রেখে সায়ন্তনকে সভাপতি ঘোষণা! বৈঠক ডাকল সংঘশ্রী]
তবে চুপ করে বসে নেই রাজ্য প্রশাসনও৷ আগেও তাঁর সরকার বিরোধী বক্তব্যের জবাব মিলেছে, এবারও মিলল৷ রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পালটা জবাব দিয়েছেন তাঁকে৷ আগেও কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর মন্তব্যকে বিজেপি প্রভাবিত বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা৷ এবারও পার্থ চট্টোপাধ্যায় বললেন, রাজভবন বিজেপি কার্যালয় পরিণত হয়েছে৷ বিদায়ী রাজ্যপাল বিজেপির সুরেই কথা বলছেন৷ আর রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে যদি এত খারাপ হত, তাহলে নিজের কার্যকালে সে বিষয়ে রাজ্যকে সতর্ক করেননি কেন? এই প্রশ্নও তুলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ অন্যান্য বিরোধীরাও বিদায়বেলায় রাজ্যপালের এসব কথার সমালোচনা করেছেন৷ সবমিলিয়ে, কেশরীনাথ ত্রিপাঠী শেষবেলাতেও রাজভবন-নবান্ন দ্বৈরথ জারি রেখেই গেলেন৷
The post ‘তোষণ রাজনীতির জন্য বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে’, বিস্ফোরক বিদায়ী রাজ্যপাল appeared first on Sangbad Pratidin.