স্টাফ রিপোর্টার: মার্কিন মুলুকে গত আর্থিক বছরে বাংলার রপ্তানি বেড়েছে ৫৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবারই ইন্দো-মার্কিন শিল্প সম্মেলনে সেই সাফল্যের কথা ভাগ করে নিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। এবার আগামী দশকে সার্বিক রপ্তানির অঙ্ক দ্বিগুণ করতে শিল্প পরিকাঠামো ঢেলে সাজার উদ্যোগ নিল নবান্ন। এর জন্যে বিশ্ব ব্যাংকের বরাদ্দ ২৫০০ কোটি টাকা ঋণ ব্যবহার করা হবে। সড়ক, রেল ও জলপথের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করা হবে।
রাজ্য সরকার চাইছে আগামী ১০ বছরের মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্যকে দ্বিগুণ করতে। সেই লক্ষ্যেই উন্নত পরিকাঠামো তৈরির উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর পৌরোহিত্যে নবান্নে শুক্রবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক বসে। সেখানে শিল্পায়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়ন-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিকাঠামো কাউন্সিলের প্রধান সঞ্জয় বুধিয়া, বিভিন্ন রপ্তানিকারী সংস্থা ও বণিক সভার প্রতিনিধিরা।
[আরও পড়ুন: “দিব্যাঙ্গ ছাত্রকে পর্যন্ত র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়েছে”, যাদবপুর কাণ্ডে বিস্ফোরক অরিত্র দত্তবণিক ]
বিশ্বব্যাংকের দেওয়া টাকা ব্যবহার করে রাজ্য সরকার পণ্য মজুত রাখার উন্নতমানের পরিকাঠামো ও দ্রুত গতির পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাইছে। এর পরিবেশগত এবং সামাজিক দিক-সহ নানা বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আসন্ন বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনকে সামনে রেখে বাণিজ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়টি বিশেষভাবে আলোচিত হয়। শিল্পসম্ভাবনা উজ্জ্বল এমন জায়গাগুলিতে উন্নত রাস্তা ও অন্যান্য পরিকাঠামো নির্মাণ করা হবে। দ্রুত পণ্য পরিবহণের লক্ষ্যে জোর দেওয়া হবে সড়ক, রেল ও জলপথের সমন্বয়ের ওপর।
লজিস্টিকস ক্ষেত্রে কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্ব ব্যাংকের প্রকল্পের মাধ্যমে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের কাজের সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২২ সালের এপ্রিলে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে (বিজিবিএস) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপর একটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে রপ্তানির জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করা হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল, রপ্তানির পরিমাণ দ্বিগুণ করা।
লক্ষ্যপূরণে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে নবান্ন। রাজ্যে নতুন শিল্প ও অর্থনৈতিক করিডর নীতি, ২০২৩ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে, দক্ষিণবঙ্গে তিনটি করিডর তৈরি করা হচ্ছে: রঘুনাথপুর-ডানকুনি-তাজপুর করিডর (৩৯৮ কিমি), ডানকুনি-কল্যাণী করিডর (৪৩ কিমি) এবং ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম করিডর (১৬০ কিমি)।উত্তরবঙ্গে, সরকার দার্জিলিং মোড়, পশ্চিম বর্ধমান থেকে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার পর্যন্ত ৬৩৯ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত একটি অর্থনৈতিক ও শিল্প করিডর উন্নয়নের কাজও গ্রহণ করছে।