সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশের হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়। সম্প্রতি তাঁকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে পরশুরাম ওয়াগমারে। এই সপ্তাহের গোড়ার দিকে কর্ণাটক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিমের (SIT) গোয়েন্দাদের কাছে একথা স্বীকার করে সে।
বছর ছাব্বিশের পরশুমার স্বীকার করেছে, সে যখন খুন করে জানত না কাকে খুন করেছে। তার কাছে শুধু খুনের নির্দেশ ছিল। নির্দেশ মতো বেঙ্গালুরুর আর আর নগরের একটি বাড়িতে গিয়ে সেই বাড়ির মহিলাকে পরপর চারটি বুলেটে বিদ্ধ করে সে। পরশুরাম গোয়েন্দাদের বলেছে, “আমার কাছে মে মাসে এই নির্দেশ এসেছিল। বলা হয়েছিল, নিজেদের ধর্মকে বাঁচানোর জন্যই কাউকে খুন করতে হবে। আমিও তাই রাজি হয়ে যাই। আমি জানতাম না আক্রান্ত কে। এখন আমার মনে হয় আমার ওই মহিলাকে খুন করা উচিত হয়নি।” পরশুরাম আরও জানিয়েছে, তাতে ৩ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে বন্দুক চালানোও শেখানো হয়।
[ হিন্দু বিরোধী বলেই মরতে হয়েছে গৌরী লঙ্কেশকে, স্বীকারোক্তি অভিযুক্তর ]
পরশুরাম বলেছে, তাকে প্রথমে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাখা হয়। দু’ঘণ্টা পর একটি বাইকে করে তাকে লঙ্কেশের বাড়ি দেখাতে নিয়ে যাওয়া হয়। বলা হয় ওই বাড়িরই একজনকে খুন করতে হবে। পরের দিন ফের তাকে বেঙ্গালুরুর আর আর নগরের ওই বাড়িটি দেখিয়ে আনা হয়। সেদিন সন্ধ্যায় খুন করার পরিকল্পনা ছিল। প্রথম দিন যে বাইকচালক তাকে নিয়ে গিয়েছিল, সে সন্ধ্যাবেলাও পরশুরামকে লঙ্কেশের বাড়ি পৌঁছে দেয়। তাকে বলা হয়, ওই দিনই তাকে তার কাজ করে ফেলতে হবে। কিন্তু ততক্ষণে লঙ্কেশ কাজ সেরে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। বাড়ির ভিতরেই ছিলেন তিনি। ফলে কাজ অসমাপ্ত রেখেই ফিরতে হয় তাকে।
৫ সেপ্টেম্বর পরমেশ্বরকে ফের লঙ্কেশের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। পরমেশ্বর জানায়, সেদিন ঠিক সময়েই গিয়েছিল তারা। গৌরী লঙ্কেশ তখন বাড়ির কাছে গাড়ি থেকে নামছিলেন। পরমেশ্বরের কাশির শব্দে ফিরে তাকান তিনি। তখনই পরপর চারটি বুলেট এফোঁড়ওফোঁড় করে দেয় তাঁর শরীর। ওই রাতেই শহর ছাড়ে পরমেশ্বর ও তার শাগরেদ।
[ গৌরী লঙ্কেশের আততায়ীদের পরবর্তী টার্গেট ছিলেন গিরিশ! ]
গোয়েন্দাদের তরফে জানানো হয়েছে, পরমেশ্বরের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে আরও তিনজন ছিল। তবে আলাদা আলাদা সময় পরমেশ্বরের সঙ্গে ছিল তারা। প্রথমজন তাকে বেঙ্গালুরুতে আনে। দ্বিতীয়জন বাইকে চড়িয়ে তাকে গৌরী লঙ্কেশের বাড়ি দেখাতে নিয়ে যায়। আর তৃতীয়জন ৪ সেপ্টেম্বর গৌরী লঙ্কেশের বাড়ি নিয়ে যায় তাকে। পরমেশ্বর জানিয়েছে, ওই তিনজনকে সে চিনত না।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, গৌরী লঙ্কেশ খুনে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তাক শাগরেদরা আলাদা আলাদা জায়গায় থাকত। হত্যার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
The post “ধর্মকে বাঁচানোর জন্যই খুন করেছি গৌরী লঙ্কেশকে”, স্বীকারোক্তি অভিযুক্তর appeared first on Sangbad Pratidin.