কৃষ্ণকুমার দাস: কোভিডের ভ্যাকসিনের (Covid-19 Vaccine) জন্য আর রাত জেগে লাইন দিতে হবে না কলকাতার নাগরিকদের। এবার আগের দিন আসল আধার কার্ড ও ভোটার কার্ড দেখিয়ে কুপন নিয়ে পরদিন নির্দিষ্ট সময়ে এলেই টিকা পেয়ে যাবেন। মহানগরে পুরসভার যে ১৮টি মেগা সেন্টারে টিকাকরণ চলছে সেখানেই প্রতিদিন বিকেল চারটে থেকে এই ভ্যাকসিনের কুপন দেওয়া হবে। কোভিড রিভিউ কমিটির বৈঠকে এমনই জনস্বার্থের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার (KMC) মুখ্যপ্রশাসক ও পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকার কোভ্যাক্সিন না পাঠানোয় আপাতত শহরে ৪০টি সেন্টারে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি টিকা দেওয়া বন্ধ। কিন্তু দেড় লক্ষ মানুষ এখনও কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজের অপেক্ষায় দিন গুনছেন। মুখ্যপ্রশাসক জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার যদি শনিবার রাতের মধ্যে কোভ্যাক্সিন পাঠায় তবে সোমবার থেকে ফের বন্ধ সেন্টারগুলিতে ফের টিকা দেওয়া হবে। আর এবার যে পরিমান কোভ্যাক্সিন দিল্লি থেকে আসবে তার পুরোটাই দ্বিতীয় ডোজের জন্য দেওয়া হবে।”
[আরও পড়ুন: HS Result 2021: কেন এত ছাত্র বিক্ষোভ? স্কুলগুলির কাছে জবাব তলব শিক্ষা সংসদের]
দেশের প্রথম পাঁচটি মহানগরের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়ায় কলকাতা সবার মধ্যে সেরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের শতাংশের বিচারে তথ্য, দিল্লিতে প্রথম ডোজ ৩৫.১ ও দ্বিতীয় ডোজ ১১.১, মুম্বই প্রথম ডোজ ৫১.১ ও দ্বিতীয় ডোজ ১৫.৭, চেন্নাইয়ে প্রথম ডোজ ৫১.৬ ও দ্বিতীয় ডোজ ১৭.৯, বেঙ্গালুরুতে প্রথম ডোজ ৫৭.৮ ও দ্বিতীয় ডোজ ১৪ শতাংশ। কিন্তু সেখানে কলকাতায় প্রথম ডোজ ৬১, দ্বিতীয় ডোজ টিকা ইতিমধ্যে ২১ শতাংশ মানুষ ইতিমধ্যে পেয়েছেন। পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক জানান,“যদি কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের চাহিদা মতো টিকা দিত এতদিন আমরা ১০০ শতাংশই প্রথম ডোজ এবং দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন অনেকটাই সম্পূর্ণ করে ফেলতাম।”
এদিন পুরসভার বৈঠকে মুখ্যপ্রশাসক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কলকাতায় পুরসভার যে ১৮টি মেগা সেন্টার রয়েছে, সেখানে সকাল থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। টিকাদান সম্পূর্ণ হয়ে গেলেই পরের দিনের টিকার জন্য কুপন দেওয়া হবে। অবশ্য সেই কুপনে ও জালিয়াতিও হতে পারে। তাই যাদের কুপন ইস্যু করা হবে, তাদের প্রকৃত ভোটার কার্ড ও আধার কার্ড এবং সঙ্গে জেরক্স কপিও আনতে হবে। কুপন দেওয়ার আগে আধার কার্ডে স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হবে। থানা গুলিকে প্রতিটি মেগা সেন্টারে পুলিশ মোতায়েন করতে বলা হয়েছে। পুলিশ এই কুপন দেখে তবেই টিকা সেন্টারে ঢুকতে দেবে। ভিড় নিয়ন্ত্রণ এর জন্যই পুরসভার তরফে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুখ্যপ্রশাসক জানান, কলকাতা শহরে বাকি যে ১৪৮ টি ভ্যাকসিন সেন্টার রয়েছে সেখানেও যদি প্রয়োজন হয় তাহলে এমনভাবে কুপন ইস্যু করা হবে। অবশ্য পরীক্ষামূলকভাবে আপাতত মেগা সেন্টারগুলিতেই এই কুপন ইস্যু শুরু হচ্ছে।