স্টাফ রিপোর্টার: বকেয়া সম্পত্তি কর আদায় করতে কোমর বেঁধে নামছে কলকাতা পুরসভা (KMC)। বকেয়া কর আদায়ের জন্য দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে সম্পত্তি কর দপ্তরের আধিকারিকদের। এক কোটি টাকার উপরে বকেয়া কর রয়েছে এরকম করখেলাপিদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন চিফ ম্যানেজররা। ২৫ লক্ষ টাকা থেকে এক কোটি টাকার কর বকেয়া রয়েছে তাঁদের কাছে যাবেন অ্যাসেসর কালেক্টররা। বকেয়া সম্পত্তির কোনও আইনি সমস্যা থাকতে তা দ্রুত সমাধান করতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি পুর কমিশনার বিনোদ কুমার এই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। বেসরকারি সম্পত্তির পাশাপাশি বকেয়া কর আদায় করতে সরকারি সম্পত্তিগুলিকেও একযোগে চিঠি পাঠাচ্ছে পুরকর্তৃপক্ষ।
পুরসভার প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বকেয়া সম্পত্তি কর রয়েছে। সম্পত্তি কর বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বেশি করখেলাপির সংখ্যা রয়েছে উত্তর কলকাতায়। উত্তর কলকাতার কোটি টাকার উপর যেসব সম্পত্তি কর বকেয়া আছে তার মধ্যে একটি শপিং মলও রয়েছে। দক্ষিণ কলকাতায় এক কোটি টাকার উপর কর বকেয়া রয়েছে এরকম সম্পত্তির সংখ্যা প্রায় ২০০টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ৪১ নম্বর চৌরঙ্গি রোডে কনক বিল্ডিং। প্রায় ৫৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। ২০১০ সাল থেকে আদালতে মামলা চলছিল। সম্প্রতি মামলা নিষ্পত্তিও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘দু’পয়সার সাংবাদিক’ মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের জের, মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সমন জারি আদালতের]
এছাড়া বাইপাসে দু’টি পাঁচতারা হোটেলের কয়েক কোটি টাকা কর বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে একটি হোটেলের মামলা চলছে। বছরের পর বছর কর ফাঁকি দেওয়ার জন্য দক্ষিণ কলকাতার একটি রেস্টুরেন্টকে নিলাম করার প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে পুরসভা। উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার তুলনায় যাদবপুরে এক কোটি টাকার ওপর বকেয়া করের অনেক সংখ্যা কম। যাদবপুরে ১০০ কাঠার মতো জমি রয়েছে এক নির্মাণকারী সংস্থার। সেই সংস্থার প্রায় ৭ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এনিয়ে আদালতে মামলাও চলছে।
বকেয়া করের মধ্যে রাজ্য সরকারের সম্পত্তি কর বকেয়া পরিমাণ ৪০০ কোটি টাকার কাছাকাছি। বাম আমল থেকে এই কর বকেয়া রয়েছে। এর মধ্যে পূর্ত দপ্তরে বকেয়া করের পরিমাণ সব থেকে বেশি বলে খবর। পুরসভা সূত্রে খবর, কেএমডিএ, পূর্ত, আবাসন-সহ শহরে রাজ্য সরকারের যত ভবন রয়েছে তারা কেউ নিয়মিত কর দিচ্ছে না। এদের মধ্যে কর ফাঁকি দেওয়ার তালিকায় প্রথম সারিতে নাম রয়েছে পূর্ত দপ্তরের। সম্পত্তি কর দর্তরের এক আধিকারিক জানান, বকেয়া কর আদায় করতে বেসরকারি সম্পত্তির পাশাপাশি সরকারি সম্পত্তিগুলিকেও কড়া নোটিস পাঠানো হচ্ছে। সেজন্য তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এবার একযোগে সরকারি দফতরগুলিকে নোটিস পাঠানো হবে।
এদিকে পুর কমিশনারের বিজ্ঞপ্তির আগে থেকে বকেয়া কর আদায় করতে আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছিলেন সম্পত্তি কর দপ্তরের আধিকারিকরা। কিন্তু লোকবলের অভাবে বকেয়া কর আদায়ের কাজ দ্রুতগতিতে করতে পারছে না দপ্তর।