অভিরূপ দাস: সদ্যোজাতকে নিয়ে হাসপাতালে এসে বিব্রত হওয়ার দিন শেষ। তিলোত্তমার প্রতিটি হাসপাতালে মায়েদের জন্য স্তন্যপানের কক্ষ খুলছে কলকাতা পুরসভা (KMC)। ইতিমধ্যেই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে প্রাথমিক বৈঠক হয়ে গিয়েছে। কথা হয়েছে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ, এমআর বাঙুর, লেডি ডাফরিন হাসপাতালের সঙ্গেও। মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, পুজোর আগেই অন্ততপক্ষে একটির উদ্বোধন হয়ে যাবে। বাকিগুলো খুলবে শীঘ্রই।
কলকাতার দশ দিগন্ত স্কিমে তৈরি হওয়া এই স্তন্যপানের কক্ষের নাম দেওয়া হয়েছে পথ-ক্ষণিকা। মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ডেই এমন পথ-ক্ষণিকা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে সমস্ত কাউন্সিলরকে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে জায়গা পেতে। শুধু স্তন্যপানের ঘর তো নয়। পথ-ক্ষণিকা আক্ষরিক অর্থেই মহিলাদের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ। এর দু’টো অংশ। একটি ওয়েট জোন। অন্যটি ড্রাই জোন। ওয়েট জোনে বেবি কেয়ার রুম ছাড়াও থাকবে মহিলাদের জামাকাপড় বদলানোর জন্য ‘চেঞ্জিং রুম।’ স্নান করার জন্য ‘বাথ এরিয়া।’ পুরসভা সূত্রে খবর, প্রতিটি বাথ এরিয়াতে সাবান, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার। পথ-ক্ষণিকার ড্রাই জোনে থাকছে ওয়াটার ফিল্টার, স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন।
[আরও পড়ুন: ডার্বির টিকিটের ব্যাপক কালোবাজারি! ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কাছ থেকে গ্রেপ্তার ৪ ব্ল্যাকার]
হাসপাতালে ‘পথ-ক্ষণিকা’ নিয়ে উৎসাহিত চিকিৎসকরা। জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, অফিস থেকে শুরু করে এয়ারপোর্ট সব জায়গাতেই এমন ব্রেস্ট ফিডিং রুম তৈরি করা উচিত। তবে চিকিৎসকের কথায় স্তন্যপান নিয়ে ছুৎমার্গ যত তাড়াতাড়ি কেটে যায় ততই ভাল। ডা. অনির্বাণ দলুই জানিয়েছেন, স্তন্যপান নিয়ে কোনও রকম লজ্জা থাকা উচিত নয়। এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। লজ্জা কেটে গেলে তখন আর আলাদা করে স্তন্যপান করানোর ঘরের প্রয়োজন হবে না।
পুরসভা সূত্রে খবর, হাসপাতাল ছাড়াও আরও এগারোটি ওয়ার্ডকে পথ-ক্ষণিকার জন্য পছন্দ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ইউসি ব্যানার্জি রোড, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ক্যানাল সার্কুলার রোডে, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে নিমতলা ঘাট স্ট্রিটে, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে টেগোর ক্যাসল স্ট্রিট। স্বপন সমাদ্দার জানিয়েছেন, পথ-ক্ষণিকার জন্য মোট চারটি নকশা তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটির আকার আলাদা। যেখানে যেমন জায়গা পাওয়া যাবে সেখানে সেই অনুযায়ী পথ-ক্ষণিকা তৈরি হবে।