shono
Advertisement

মিলল সাতরকম আত্মার হদিশ, সিউড়িতে ভূত খুঁজতে গিয়ে তাজ্জব গবেষকরা

ভূতের ঘাড়ধাক্কা খেয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছেন গবেষকরা। The post মিলল সাতরকম আত্মার হদিশ, সিউড়িতে ভূত খুঁজতে গিয়ে তাজ্জব গবেষকরা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 10:01 AM Oct 26, 2019Updated: 10:01 AM Oct 26, 2019

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: এত বছর গবেষণা চলছে, এভাবে ভূতের ঘাড়ধাক্কা বোধহয় কখনও খেতে হয়নি কলকাতার প্যারানরমাল সোসাইটির সদস্যদের। কিন্তু ভূতের খোঁজে সিউড়ি গিয়ে সেটাই হল। দু’টি প্রাণ হারাতেই বসেছিল। কোনওক্রমে বেঁচে ফিরেছেন সংস্থার সদস্যরা। আপাতত ল্যাবে বিশ্লেষণ চলছে ভৌতিক সেইসব কার্যকলাপের তথ্যচিত্রের। এইসব কাণ্ডকে তাঁরা সম্বোধন করছেন আত্মা বা স্পিরিটের কাজ বলে। বীরভূমের সিউড়ির এক শ্মশানে সম্প্রতি ঘটেছে ঘটনাটা।

Advertisement

ইম্যানুয়েল গ্রিমড নামে এক ফরাসি তথ্যচিত্র নির্মাতাকে সঙ্গে নিয়েই এবার শুরু হয়েছিল গবেষণা। সোসাইটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য সৌমেন রায়, প্রণয় মণ্ডলদের সঙ্গে আরও ক’জন সদস্যের মতো ছিলেন দুই ইন্টার্নও। বিপদ হয়েছিল তাঁদেরই। গ্রামের বাইরে পাঁচ কিলোমিটার ব্যবধানের মধ্যেই শ্মশান। সন্ধে নামলে সে তল্লাটে কেউ আর যান না। আর ঠিক সন্ধের মুখেই সেখানে গিয়ে পৌঁছয় কলকাতার সোসাইটি। শুরু হয় ‘অভিযান’। চারিদিক জঙ্গলাকীর্ণ। ঝেঁপে বৃষ্টি নেমেছে। উলটোদিকে বৈষ্ণবদের কবরস্থান। কয়েক পা এগোতেই একটা পোড়ো ঘর। অ্যাসবেসটসের ছাদ। দেওয়াল নেই। শুধু খুঁটি দিয়ে ছাদটা ধরা। ভিতরে চিতা সাজানো। মড়া পোড়ানো হয়। কাঠ চুপচুপে ভেজা। অশরীরীর অস্তিত্ব পরীক্ষার জন্য এই জায়গাটাই বেছে নিয়েছিলেন সৌমেনরা। তাঁদের প্রধান অস্ত্র ‘কে২ মিটার’। কোনও জায়গার ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িত চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের তারতম্যে বেশ কিছু প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এই ‘কে ২ মিটার’-এই ধরা যায় আত্মার উপস্থিতি। তবে যে কোনও মুহূর্তে বিষয়টা কঠিন এবং প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে।

ঠিক তেমনটাই হল, হঠাৎ পরিবেশটা বদলাতে শুরু করল। প্রবল ঠান্ডা। এক ইন্টার্নের দিকে চোখ পড়তেই বোঝা যায়, স্থির হয়ে গিয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গীরও প্রায় এক দশা। অদৃশ্যে প্রশ্ন করা হয়, “কেউ কি আছেন? তবে জানান।” তীব্র হয়ে জ্বলে ওঠে ‘কে২ মিটার’-এর আলো। আবার প্রশ্ন, “আপনি পুরুষ না নারী?” জবাব মেলে। দুই ইন্টার্নের গোটা শরীর তখনও স্থির। “টার্গেট হয়ে গেল না কি!” বলে উঠলেন এক সদস্য। এই অবস্থায় কথোপকথন শুরুর আগে আত্মার অনুমতি নিতে হয়। সাহস করে প্রশ্ন ছুড়তেই আর সেখানে থাকতে অনুমতি দেয়নি বিদেহী। প্রবল কান ফাটানো আওয়াজ। মড়মড় করে এসে যেন বিরাট একটা দেহ পড়ল ছাদের উপর। দৌড়ে বাইরে বের হন সোসাইটির সদস্যরা। নাহ কিন্তু কিছু চোখে পড়েনি তাঁদের। এরপর আর অপেক্ষা না করে কাজ অসমাপ্ত রেখে সোজা ফেরার রাস্তা ধরে সোসাইটি। রাত তখন তিনটে।

[আরও পড়ুন:চারদিন নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার যুবকের হাত-পা বাঁধা দেহ, ঘনীভূত রহস্য]

বর্তমানে সিস্টেমেটিক প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেশন রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স টিম বা সংক্ষেপে ‘স্পিরিট’-ই প্যারানরমাল সোসাইটির পোশাকি নাম। তাদের ল্যাবেই ওই মুহূর্তের সব ছবি আর ভিডিওর গবেষণা চলছে। তার মাঝেই আত্মাদের কিছু প্রকারভেদ বুঝিয়ে দিলেন সৌমেন রায়। তিনি জানান, ভারতে সর্বাধিক ছয় রকমের আত্মার উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। ১. ‘শ্যাডো পার্সন’-যাদের আকৃতি বা অবয়ব কখনও সখনও ধরা পড়ে। ২. ‘এক্টোপ্লাজম’-ধোঁয়ার কুণ্ডলী থেকে আকৃতি নেয়। ৩. ‘এলিমেন্টাল’-ক্ষণস্থায়ী ছায়ামূর্তি। ৪. ‘অর্বস’-আলোর বলের আকার। ক্যামেরায় গভীর বিশ্লেষণে এদের দেখা মেলে। ৫. ‘স্ট্রিক’–আকাবাঁকা লাইনের মতো। মানুষের সঙ্গে পশুর আত্মাও এভাবে ধরা পড়ে। ক্যামেরার ৮০০ আইএসও-তে ছবি তুললে এদের দেখা পাওয়া যেতে পারে। ৬. ‘পোল্টারজাইস্ট’- জার্মান শব্দ যার অর্থ শব্দ করা ভূত। সিউড়ির ঘটনা এমনই। মিল রয়েছে শ্যাডো পার্সনের সঙ্গেও। বিদেশে হদিশ মেলে আরেক প্রকারের। কদাকার ছায়ামূর্তির এই আত্মাকে ‘ডেমন’ বলে সম্বোধন করা হয়। নৃশংসভাবে গায়ে আঁচড় কাটার ক্ষমতা রাখে এরা।

The post মিলল সাতরকম আত্মার হদিশ, সিউড়িতে ভূত খুঁজতে গিয়ে তাজ্জব গবেষকরা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement