অর্ণব আইচ: ঠাকুর দেখতে যে ইচ্ছা করে দাদু-ঠাকুরমাদেরও। গতি মন্থর। তাই এক মণ্ডপ থেকে অন্য মণ্ডপে যেতে সময় লাগে বিস্তর। কিন্তু সঙ্গীরা তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে যদি হাত ছেড়ে দেন? আর পুজোর ভিড়ে যদি হারিয়ে যান তাঁরা? কুছ পরোয়া নেই। তাঁদের জন্য হাজির রয়েছেন ‘পুলিশ নাতি-নাতনিরা’। কলকাতা পুলিশের ‘বন্ধু কলকাতা’র নজর এবার শহরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দিকেও। তাঁদের উদ্ধার করে বাড়ির লোকের হাতে তুলে দিতে তৈরি ‘বন্ধু কলকাতা’।
কলকাতায় পুজোর ভিড়ে শিশুদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তাঁদের অভিভাবকদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য শহরময় ঘোরে ‘বন্ধু কলকাতা’র গাড়ি। এই বছরও রাজ্য সরকারের নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তর ও কলকাতা পুলিশের যৌথ উদ্যোগে পুজোর সময় রাস্তায় বের হবে ‘বন্ধু কলকাতা’র আটটি গাড়ি।
[আদালতের বিসর্জন নির্দেশ মানতে অসুবিধা নেই, প্রতিক্রিয়া রাজ্যের]
কলকাতার আটটি ডিভিশনে ঘুরবে বেলুন দিয়ে সাজানো গাড়িগুলি। গাড়ির ভিতর ভর্তি থাকবে চকোলেট, চিপস, কেক, খেলনা। শিশুদের জন্য তৈরি থাকবেন ‘পুলিশ কাকু ও পিসি’রা। কোনও মণ্ডপ বা রাস্তা থেকে নিখোঁজ হওয়া শিশু বা কিশোর-কিশোরীরা উদ্ধার হলেই তাদের থানায় না পাঠিয়ে তুলে নেওয়া হবে ‘বন্ধু কলকাতা’র গাড়িতে। মা-বাবাকে হারিয়ে যাতে তারা একটুও কান্নাকাটি না করে, তার জন্য তৈরি থাকবে ‘বন্ধু কলকাতা’র পুলিশ। একটি টিম যোগাযোগ করতে শুরু করবে শহরের থানা ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের মিসিং পার্সন স্কোয়াডের বিশেষ কন্ট্রোলরুমের সঙ্গে। একই সঙ্গে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া শিশু বা বালক-বালিকাদের চকোলেট, খেলনা নিয়ে ভোলাতে শুরু করবে পুলিশ। তাদের ছবি তুলেও মুহূর্তের মধ্যে হোয়াটস অ্যাপে পাঠিয়ে দেওয়া হবে লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের ওই কন্ট্রোলরুমে।
মা-বাবারা তাঁদের নিখোঁজ সন্তানের খোঁজ শুরু করলেই তাঁদের দেখানো হবে উদ্ধার হওয়া শিশুদের ছবি। তা দেখেও তাঁরা শনাক্ত করতে পারেন সন্তানদের। গত বছর ১৪টি শিশু ও বালক-বালিকাকে উদ্ধার করেছিল ‘বন্ধু কলকাতা’। একই সঙ্গে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া চার বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকেও ‘বন্ধু কলকাতা’র টিম উদ্ধার করেছিল। তাঁদের তুলে দেওয়া হয়েছিল পরিজনদের হাতে।
[মাটি হতে পারে দুর্গাপুজোর আনন্দ, রাজ্য জুড়ে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা]
চেতলা এলাকা থেকে ‘বন্ধু কলকাতা’ উদ্ধার করেছিল প্রতিবন্ধী এক মহিলাকেও। ইলিয়ট রোডের একটি হোমে পুলিশই তাঁর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিল। এবারও শিশুদের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধা-বৃদ্ধাদের দিকেও নজর রাখবে পুলিশ। জানা গিয়েছে, কোনও মণ্ডপে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা হারিয়ে গিয়েছেন, এমন কোনও তথ্য পেলেই সেই জায়গায় গিয়ে হাজির হবে ‘বন্ধু কলকাতা’র গাড়ি। তাঁদের উদ্ধার করার পর প্রয়োজনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে তাঁদের পরিজনদেরও সন্ধান চালানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post এবছর পুলিশ নাতিদের হাত ধরে মণ্ডপে দাদু-দিদারা appeared first on Sangbad Pratidin.