ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়া। যা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। এই আবহে নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে UIDAI। যেখানে বাংলার ৩৪ লক্ষ মৃত বাসিন্দার আধার নম্বর নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। সম্প্রতি UIDAI কতৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক। সেই বৈঠকেই এই তথ্য উঠে আসে। যদিও এহেন তথ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে শাসকদল তৃণমূল। সমাজমাধ্যমে শাসকদলের দাবি, UIDAI রাজ্যভিত্তিক, বছরভিত্তিক বা কারণভিত্তিক কোনও আধার নিষ্ক্রিয়করণের তথ্য সংরক্ষণ করে না। তাহলে কীসের ভিত্তিতে এহেন তথ্যপঞ্জী? প্রশ্ন তৃণমূলের। এক্ষেত্রে পরিকল্পনা মাফিক নাম বাদ দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা।
নির্বাচনের বাকি আর কয়েকটা মাস। তার আগে বঙ্গজুড়ে শুরু হয়েছে এসআইআর। বাড়ি বাড়ি এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে যাচ্ছেন বিএলওরা। যদিও বঙ্গ বিধানসভা ভোটের কয়েকমাস আগে এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। কোনও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ গেলে দিল্লিতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। এই আবহে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে দেওয়া UIDAI এর তথ্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সুর চড়িয়েছে তৃণমূল।
সমাজমাধ্যমে শাসকদল 'বিস্ফোরক তথ্য' দাবি করে লিখছে, 'রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, UIDAI–এর অধিকর্তারা পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৩২-৩৪ লক্ষ মৃত বাসিন্দার আধার নম্বর নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে বলে CEO মনোজ আগরওয়ালকে অবহিত করেছেন এবং জানিয়েছেন এই নিষ্ক্রিয়তাকেই ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু UIDAI নিজেই সংসদে জানিয়েছে যে, তারা রাজ্যভিত্তিক, বছরভিত্তিক বা কারণভিত্তিক কোনও আধার নিষ্ক্রিয়করণের তথ্য সংরক্ষণ করে না। যদি সেটা সত্যি হয়, তাহলে কোন আইনগত বা প্রমাণের ভিত্তিতে এই বিপুল তথ্যপঞ্জী তৈরি করে হস্তান্তর করা হল?'' পুরোপুরি সংবিধানকে উপেক্ষা বলে সোশাল মিডিয়ায় তোপ তৃণমূলের।
শুধু তাই নয়, বিহারে প্রসঙ্গ টেনে সমাজমাধ্যমে তৃণমূলের আরও দাবি, 'বিহারের কথাই ধরুন—যেখানে নির্বাচন কমিশন খসড়া ভোটার তালিকায় হাজার হাজার মানুষকে “মৃত” ঘোষণা করেছিল, অথচ পরে দেখা যায় তাদের অনেকেই জীবিত।' এমন পরিস্থিতি বাংলাতেও হতে পারে বলে মনে করছে তৃণমূল। দাবি, 'বিহারে যদি এমন কাণ্ডকারখানা হয়ে থাকে, বাংলায় তো একইভাবে পরিকল্পনা মাফিক নাম বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা উদ্বিগ্ন যে, কোনও স্বচ্ছ পদ্ধতি কিংবা নিরপেক্ষ যাচাই ছাড়াই পরিচালিত এই তথ্যপঞ্জী, প্রচুর সংখ্যক ভোটারকে বঞ্চিত করার অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।''
এক্ষেত্রে কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে আইনি পদক্ষেপ থেকে গণ আন্দোলনের সংগঠিত করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি। তৃণমূলের দাবি, 'যদি একজন বৈধ ভোটারের নামও এই অস্বচ্ছ, যাচাই না করা তথ্যের ফলে মুছে যায়—তবে সেটাকে কেবল অপরাধ হিসেবে নয়, বরং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখা হবে। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব- আইনি পদক্ষেপ, গণ আন্দোলন সংগঠিত করব। যারা এই ষড়যন্ত্র করেছে, তাদেরকে ভোটবাক্সে এর মূল্য চোকাতে হবে।''
