কৃষ্ণকুমার দাস ও ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: চব্বিশের লোকসভা ভোটে বাংলায় শাসকদলের ফল সামগ্রিকভাবে অনেকটাই ভালো। বেড়েছে সাংসদ সংখ্যা। উনিশে যা ছিল ১৮, চব্বিশে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯। কিন্তু অপ্রত্যাশিত ফলাফল হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর এবং বরাবরের কঠিন ক্ষেত্র মালদহে। দুই জেলাতেই দুটি করে আসনে তৃণমূলের হার হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও তমলুক আসন বিজেপির দখলে গিয়েছে। মালদহের একটিতে বিজেপি, একটিতে কংগ্রেস জিতেছে। আর এই ফলের জন্য দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দায়ী করলেন নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবকে।
শনিবার 'ভূতুড়ে' ভোটার নিয়ে সর্বস্তরের নেতৃত্বের ভারচুয়াল বৈঠকে অভিষেকের মন্তব্য, ''নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে অন্য দলকে সুযোগ করে দিয়েছেন। বিজেপি, কংগ্রেস ভুল প্রচার করেছে। আপনারা কেউ কাউন্টার করেননি। অন্য দলকে সুযোগ করে দিয়েছেন। আমরা ব্যর্থ হয়েছি মালদহে।'' তাঁর কথায়, ''মালদহে ফল খারাপ হওয়ার জন্য জেলা নেতৃত্ব, ব্লক নেতৃত্ব দায়ী। আপনারা মন্ত্রী হয়েছেন, পদ পেয়েছেন, কিন্তু ভোটের কাজে পিছিয়ে থেকেছেন। যুদ্ধের সময় যে মায়ের সঙ্গে বেইমানি করে, সে তৃণমূলের কর্মী নয়। কাঁথিতে আরেকটু জোর দিয়ে ঝাঁপালে এই আসন জিততাম।'' এছাড়া জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট আসনটিও জিততে পারেনি তৃণমূল। সেসব জেলা নেতৃত্বকেও কার্যত তুলোধোনা করেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
তমলুক, কাঁথির ফলাফল নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ''পূর্ব মেদিনীপুরে বিশেষ নজর দিতে হবে। বৈঠক ডাকব। ১৬ টির বিধানসভার মধ্যে ৯ টায় জিতেছি। চিহ্নিত করে ১২ টায় জিততে হবে। ওখানে ঠিক নির্বাচনের দুদিন আগে এনআইএ আমাদের নেতাদের ডেকে পাঠিয়েছে। আইনত আমরা লড়াই করেছি। এজেন্সি, বাহিনী সবার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। মানুষকে আরও সতর্ক করতে হবে। এই যে তমলুকে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী, এই ১০ মাসে বাংলার স্বার্থে তমলুক আর কাঁথির সাংসদ দিল্লি গিয়ে বলেছেন আবাসের টাকা ছাড়ুন? জব কার্ড হোল্ডাদের টাকা ছাড়ুন?দিল্লির প্রভুদের কীভাবে খুশি করা যায়, সেই কাজ করছেন তাঁরা। আগেরবার আমি গিয়েছিলাম দিল্লিতে। আমাদের এবার আরও লড়াই করতে হবে। এদের গণতান্ত্রিকভাবে বিবস্ত্র করে স্বরূপ উন্মোচন করতে হবে।''
শুধু তাই নয়। কলকাতা উত্তর জিতলেও জোড়াসাঁকো, চৌরঙ্গীতে বাড়তি নজর দেওয়ার কথা বলেছেন অভিষেক। যেসব ভোটে বুথে পুরসভা, লোকসভা, বিধানসভায় সেখানে ৭০ শতাংশের বেশি বুথে হেরেছে তৃণমূল, সেসব চিহ্নিত করে জেলা, ব্লক, অঞ্চল, বুথ সভাপতি ও কমিটি বদলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে।