ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রদেশ কংগ্রেসে হালকা হচ্ছে অধীর চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) রাশ! প্রদেশ যুব কংগ্রেসের নির্বাচনে হেরে গেলেন বহরমপুরের সাংসদের ঘনিষ্ঠ প্রার্থী শাহিনা জাভেদ। শাহিনাকে হারিয়ে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভাপতি নতুন হচ্ছেন বর্ধমানের আজাহার মল্লিক (Azhar Mollick)। আজাহার প্রদেশ কংগ্রেসে সোমেন অনুগামীদের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত।
পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসে চিরদিনই গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত। যার প্রভাব দেখা গিয়েছে যুব কংগ্রেস নির্বাচনেও। এর আগে একাধিকবার যুব কংগ্রেস (Youth Congress) নির্বাচন ঘিরে রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। সেসব এড়াতে এবারে যুব কংগ্রেস নির্বাচন হয় অনলাইনে। জুন মাসে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ফলপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিল গত আগস্ট মাসেই। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত ভোটের ফলপ্রকাশ স্থগিত ছিল। অবশেষে শনিবার সেই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। যাতে দেখা যাচ্ছে ৩৯ হাজার ১২১টি ভোট পেয়ে প্রথম হয়েছেন বর্ধমানের আজাহার। আর শাহিনা পেয়েছেন ৩১ হাজারের কিছু বেশি ভোট।
[আরও পড়ুন: কয়লাপাচার কাণ্ডে শর্তসাপেক্ষে জামিন বিকাশ মিশ্রর, নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের]
প্রদেশ যুব কংগ্রেসের এই নির্বাচন ঘিরে অধীর পন্থীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ ছিল, নিজের অনুগামী শাহিনাকে (Shaheena Javed) জেতাতে সবরকম চেষ্টা করেছেন অধীর। আর্থিক সুবিধা দিয়ে মুটে মজুরদের বেআইনিভাবে যুব সদস্য করে ভোট করিয়েছেন তিনি। ভিনরাজ্যের অনেককেও এরাজ্যের যুব কংগ্রেসের সদস্য করা হয়। আগে যেখানে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের হাজার পঞ্চাশেক সদস্য ছিলেন, সেখানে এবার সদস্য সংখ্যা রাতারাতি বেড়ে ১ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি হয়ে যায়। অভিযোগ অধীর অনুগামীরা, এই সদস্য সংখ্যায় জল মিশিয়ে ভোট করানোর চেষ্টা করছেন। এমনকী মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের প্যাডে অধীর অনুগামী শাহিনাকে সমর্থন করার জন্য সদস্যদের ফতোয়াও দেওয়া হয়, এত কিছু সত্ত্বেও শেষপর্যন্ত অধীর নিজের অনুগামীকে জেতাতে পারলেন না।
[আরও পড়ুন: দীর্ঘ জটিলতার পর উচ্চপ্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু, প্রকাশিত ইন্টারভিউয়ের বিজ্ঞপ্তি]
প্রদেশ যুব সভাপতির নির্বাচনে অধীর পন্থী প্রার্থীর হেরে যাওয়াটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। অধীরের বিরুদ্ধে চিরদিনের অভিযোগ, তিনি মূলত মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রিক রাজনীতি করেন। গোটা রাজ্যের দিকে নজর দেন না। তাছাড়া এখন দিল্লির বড় পদে থাকায় প্রদেশে সময়ও দিতে পারছেন না। একুশের বিধানসভায় ভরাডুবির পর প্রদেশ সভাপতি পদে বদল আনারও দাবি উঠেছে। এরই মধ্যে বহরমপুরের সাংসদের অনুগামীর হার তাঁর উপর চাপ আরও বাড়াবে।