অতনুর বাবা কি অশিক্ষিত? মেসেজের উত্তর দিচ্ছে না কেন? ঠিক এরকম হোয়াটসঅ্যাপ (Whatsapp) মেসেজ পেয়ে চিন্তায় পড়েছিলেন তিনি। ২৫ আগস্ট থেকে অপহরণকারীরা যে মেসেজ পাঠিয়েছিল তা নিয়ে মুখ খুললেন নিহত অতনু দে-র বান্ধবী। তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশ করা হল না। তবে তাঁর বয়ানেই লিপিবদ্ধ করা হল। অনুলিখনে অর্ণব আইচ।
অপহরণকারীরা কিন্তু ফোন করেনি। তারা আমাকে মেসেজ পাঠিয়েছিল। প্রথমে হয়তো লোকগুলো আমার বন্ধু অতনু দে-র বাবার কাছে মেসেজ করেছিল। কিন্তু অতনুর বাবা সম্ভবত বুঝতে পারেননি। তাই কোনও উত্তরও দেননি। তারপর আমাকে অপহরণকারী মেসেজ করে বলল, অতনুর বাবা কি অশিক্ষিত? মেসেজের উত্তর দিচ্ছে না কেন?
বোধহয়, সেই কারণেই তারা আমায় মেসেজ করতে শুরু করে। তারা আমায় বলে, ‘‘এক কোটি টাকা দিতে হবে। না দিলে অতনুকে আর ফিরে পাবি না।’’ এরকম হুমকির মেসেজ পাঠাচ্ছিল তারা।
প্রথমে আমায় ওরা একটা টেক্সট মেসেজ করে। এর পর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করতে শুরু করে তারা। ওরা পরপর হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ পাঠিয়ে বলতে থাকে, ‘‘যদি এক কোটি টাকা না দিতে পারিস, তবে বুঝে নে অতনু নেই। আমরা জানি যে, তুই অতনুর বান্ধবী। আমাদের মেসেজের অপেক্ষায় থাকিস। দরকার হলে আমরা তোকে কল করে নেব। কিন্তু তুই আর কী করবি? ওটা ওর মা-বাবার ব্যাপার। ওর বাবা এত অশিক্ষিত কেন, যে মেসেজের উত্তর দিচ্ছে না। কালকের মধ্যে যদি টাকার জোগাড় না করতে পারিস, তবে ভুলে যা অতনুকে।’’
[আরও পড়ুন: আসানসোল সংশধোনাগারে অনুব্রতকে ফের জেরা সিবিআইয়ের, বুধবার সশরীরেই হাজিরা আদালতে]
অতনু গত ২২ আগস্ট অপহৃত হয়। এর কিছুদিন পর আমার কাছে প্রথম মেসেজ আসে। এরপর বারবার মেসেজ করতে থাকে সে। গত ২৫ আগস্ট থেকে আমার কাছে মেসেজগুলো আসতে শুরু করে। ২৮ তারিখ পর্যন্ত আমার কাছে মেসেজগুলো আসে। আমি বুঝতে পারছিলাম না যে, কে মেসেজগুলো পাঠাচ্ছে। অপহরণকারীরা নিজেদের নাম বলেনি।
আবার অদ্ভুত ব্যাপার, মেসেজগুলো নিজের থেকেই মুছে যাচ্ছে বা ডিলিট হয়ে যাচ্ছে।
যদিও তার আগে আমি মেসেজগুলোর স্ক্রিনশট করে রাখি। সেগুলোই আমি পুলিশকে দিই। আবার পুলিশে মেসেজ ডিলিট করার ব্যাপারটাও জানাই। কে জানে, কিডন্যাপাররা আমার মোবাইল হ্যাক করেছিল কি না। তবে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিলিট করে দেওয়ার পদ্ধতিও রয়েছে। কিন্তু অপহরণকারীরা অতনু আর ওর পিসতুতো ভাইকে (অভিষেক নস্কর) এভাবে খুন করল কেন, তা বুঝতে পারছি না।