shono
Advertisement

Breaking News

অন্তর্বাসের মধ্যে ১৩০০ সিমকার্ড পাচার, চিনে বসেই বাংলায় ব্যাংক প্রতারণা হ্যাকারদের

কলকাতা-সহ অন্য শহরের বাসিন্দাদের মোবাইল হ্যাক করে তথ্য চুরি ও জালিয়াতি, সতর্ক গোয়েন্দারা।
Posted: 10:41 AM Jun 12, 2021Updated: 03:24 PM Jun 12, 2021

অর্ণব আইচ: চিনে বসে ভারতীয় সিমকার্ড (Sim Card) ব্যবহার করে ব্যাংক জালিয়াতি চিনা হ্যাকারদের। বেজিং, হেবেই বা কুনমিং থেকেই অতি সহজে সল্টলেক, কলকাতা বা হাওড়ার বাসিন্দাদের কাছ থেকে তুলে নিচ্ছে টাকা। টাকা তোলা হচ্ছে অন্য দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু বা হায়দরাবাদের মতো বড় শহরের বাসিন্দাদেরও। বেশ কিছু ব্যাংক জালিয়াতি সম্পর্কে সন্দিহান ছিলেন গোয়েন্দারা। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারাও এর আগে দেখেছেন যে, চিন থেকে জালিয়াতি হয়েছে এই শহরের বাসিন্দার। সম্প্রতি মালদহের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিএসএফের গোয়েন্দাদের হাতে ধৃত চিনের হেবেইয়ের বাসিন্দা হান জুনউইকে জেরা করে এই জালিয়াতি সম্পর্কেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে।

Advertisement

বিএসএফের (BSF) গোয়েন্দাদের এক কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা এই তথ্যগুলি কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশকে জানাচ্ছেন। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও সতর্ক করা হয়েছে এই জালিয়াতি সংক্রান্ত ব্যাপারে। ভারতের বাসিন্দাদের মোবাইল হ্যাক করে ব্যাংক জালিয়াতি করার জন্য চিনা জালিয়াতদের প্রয়োজন ছিল ভারতীয় সিমকার্ডের। সেই কারণে ধৃত চিনা ব্যক্তি অন্তর্বাসের আড়ালে ভারত থেকে চিনে পাচার করত সিমকার্ড। এখনও পর্যন্ত ধৃত চিনা ব্যক্তি হান জুনউই ও তার সঙ্গীরা অন্তত ১৩০০টি ভারতীয় সিমকার্ড অন্তর্বাসের মধ্যে করে চিনে পাচার করেছে। জাল নথিপত্র ব্যবহার করে ওই সিমকার্ডগুলি সংগ্রহ করেছে চিনারা। যদিও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জালিয়াতির সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় ব্যক্তিদের মোবাইলের তথ্য হ্যাকের বিষয়টি নিয়েও ভাবতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে সেনাবাহিনী ও ইন্দো টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশ (ITBP), বিএসএফ বা এসএসবির মতো সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মোবাইল হ্যাক করে চিনা গোয়েন্দা সংস্থা গোয়াংবু এই একই পদ্ধতিতে তথ্য চুরির চেষ্টা করেছে, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

[আরও পড়ুন: মার্চ থেকেই কলকাতায় ঘাঁটি গাড়ে ATM জালিয়াতরা, প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য]

গোয়েন্দাদের সূত্র জানিয়েছে, চিনা জালিয়াতদের হাতে রয়েছে এমন সফটওয়্যার, যার মাধ্যমে তাদের হাতে থাকা সিমকার্ডটি ব্যবহার করতে পারে কারও ডুপ্লিকেট সিমকার্ড হিসাবে। চিনা জালিয়াত বা হ্যাকারদের সুবিধা হয়, সেই ফোনটি কোনও চিনা সংস্থার তৈরি হলে। সাধারণভাবে বহু চিনা সংস্থার মোবাইল ছেয়ে গিয়েছে বাজারে। বহু মানুষের হাতে হাতে ঘুরছে চিনা সংস্থার মোবাইল। ওই মোবাইলগুলিই প্রথম টার্গেট চিনা হ্যাকার বা জালিয়াতদের। এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপে (Whatsapp) কোনও ব্যাংকের লিংক বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের লিংক পাঠানোর নাম করেও জালিয়াতি করছে জালিয়াতরা। তাদের পাঠানো লিংক ক্লিক করলে অথবা আপাতদৃষ্টিতে থাকা খুব ‘নিরীহ’ কিছু অ্যাপ ডাউনলোড করলেই হ্যাক হয়ে যেতে পারে ফোন। ফোনের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে চিনা হ্যাকার বা জালিয়াতদের হাতে।

একদিকে তথ্য চুরি, আর অন্যদিকে জালিয়াতি করে টাকা তুলে নিতে পারে চিনা জালিয়াতরা। ইতিমধ্যে যে সিমকার্ডগুলি চিনে পাচার হয়েছে, সেগুলির মাধ্যমে তথ্য চুরি করা হয়েছে, এমন সন্দেহ গোয়েন্দাদের রয়েছে। গোয়েন্দাদের হাতে আসা তথ্য অনুযায়ী, চোরাপথে নেপাল ও বাংলাদেশের সীমান্ত পেরিয়ে সিমকার্ডগুলি অন্তত একশো দফায় পাচার করা হয়েছে। এবার চিনে সিমকার্ড পাচার বন্ধ করতে নেপাল ও বাংলাদেশ সীমান্তে আরও কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

[আরও পড়ুন: মুকুলজায়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি, ফুসফুস প্রতিস্থাপনের পরামর্শ চিকিৎসকদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement