অভিরূপ দাস: কফিন ব্যবসার কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিল করোনা (Coronavirus)। ভালবাসার মানুষদের শেষ ঠিকানার দাম বেড়েছে। কিন্তু বিক্রি তলানিতে। “দেহই তো পেলাম না। কফিন কিনে কী করব,” জানিয়েছেন বউবাজারের অ্যাসলে ক্যান্টর। সম্প্রতি তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন করোনায়।
শিরীষ কাঠের কারুকাজ করা কাঠের বাক্স। প্রিয়জনের প্রিয় জিনিস তাতে রেখেই নামিয়ে দেওয়া সাড়ে চারফুট গর্তে। এমন রীতির উপর নির্ভর করেই পেট চলত যাঁদের, তাঁদের মাথায় হাত। শেষ ৬০ দিনে কতগুলি কফিন বিক্রি হয়েছে তা হাতে গুনে বলতে পারবেন বিক্রেতারা। গত বছরেও অবস্থা এমনটা ছিল না। মৃত্যুর হার বাড়লেও বিক্রির বেহাল দশা। মৌলালির কফিন বিক্রেতা বাপন জানিয়েছেন, “করোনাকালে দাহ করার সুযোগ পাচ্ছেন না পরিবার-পরিজন। মারা গেলে দেহ চলে যাচ্ছে স্বাস্থ্য দপ্তরের হাতে। ফলে পরিজনেরা শৌখিন কফিন কিনে শেষকৃত্য করছেন না।”
[আরও পড়ুন: ‘রাজ্যের চাপে পিছু হটল CESC’, টুইটে উপভোক্তাদের অভিনন্দন জানালেন বিদ্যুৎমন্ত্রী]
শেষ আদমশুমার অনুযায়ী বাংলায় সাড়ে ছ’লক্ষেরও বেশি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ বাস করেন। এঁদের উপর ভরসা রেখেই চলত কফিন ব্যবসা। শুধু কি তাই? সিনেমা-সিরিয়ালে শুটিংয়ের জন্যও কফিন ভাড়া দেওয়া হত। এখন শুটিং বন্ধ। কী করে ব্যবসা চালানো সম্ভব হবে বুঝতে পারছেন না কফিন ব্যবসায়ীরা। করোনায় দাহকার্যের নিদান বেঁধে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত মৃতদের ক্ষেত্রে হু’র সেফটি লেভেল ৩ মেনে চলা বাধ্যতামূলক। সেই নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যমন্ত্রক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির দেহ পরিবারের হাতে দেওয়া যাবে না। এমন নিয়মের কারণেই ব্যবসা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক কফিন ব্যবসায়ীই।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কফিন ব্যবসায় বিক্রি কমলেও দাম বেড়ে গিয়েছে কফিনের। আগে যে কফিন আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হত, এখন তার দামই ৩ হাজার। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মজুরই বসিরহাট, চাকদহে থাকেন। ট্রেন বন্ধ। মজুররা দ্বিগুণ টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে আসছেন। দিন প্রতি মজুরি অনেক বেশি দিতে হচ্ছে। তাই দামও বাড়াতে হয়েছে কফিনের।
[আরও পড়ুন: শিয়ালদহ স্টেশনের কাছে বেলাইন হাসনাবাদ ‘স্টাফ স্পেশ্যাল’, প্রাণে বাঁচলেন রেলকর্মীরা]
The post করোনায় মৃতদের সৎকারে অন্য ব্যবস্থা, ব্রাত্য কফিনও, লোকসানের মুখে ব্যবসা appeared first on Sangbad Pratidin.