রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিধানসভা-লোকসভায় শূন্য হয়ে এবার উৎসব আর ধর্মীয় ভাবাবেগকে প্রাণপণে আঁকড়ে ধরার চেষ্টায় বঙ্গ সিপিএম। রাজ্য সিপিএমের সোশ্যাল মিডিয়ায় পৌষ পার্বণের শুভেচ্ছা জানিয়ে পরিবারের পিঠে তৈরির একটি কার্টুনের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। জনপ্রিয়তা হারিয়ে সমাজমাধ্যমে এইরকম পোস্ট করে ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ছুঁতে চাইছে আলিমুদ্দিন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পৌষ পার্বণের শুভেচ্ছা পোস্ট করে সমালোচনায় বিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি কটাক্ষও শুনতে হচ্ছে সিপিএম নেতাদের।
সমালোচনা করতে ছাড়েনি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও। এই পোস্ট সিপিএমের তরফে তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে করার পরই তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সেটাকে ‘রিপোস্ট’ করে তাঁর ফেসবুকে হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘আরও এক ঐতিহাসিক ভুলের পথ থেকে মরিয়া হয়ে বঙ্গ সমাজে ফেরার চেষ্টা। কমরেড, বড় দেরি হয়ে গিয়েছে। এসব যত করবে, তত রসিকতার উপাদান বাড়বে। উৎসবে ফেরার প্রশ্নে বিভ্রান্তির সর্বশেষ নমুনা।’’ সিপিএম ধর্মে নেই, উৎসবেও নেই। তারপরও সেই ধর্ম-উৎসবকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা কেন? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।
এদিকে, এই পোস্টের সিপিএমের অফিসিয়াল ফেসবুকের কমেন্ট বক্সে চলেছে কটাক্ষও। ওই ফেসবুক পেজে কমেন্ট করে জনৈক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘লাইনে আসছে আসতে আসতে।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘নাস্তিকরাও এসব মানে।’ ক’দিন আগে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে দলের প্রতীক কাস্তে-হাতুড়ির উপর সান্তাক্লজের টুপি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করেও সমালোচনায় বিদ্ধ হতে হয়েছিল বঙ্গ সিপিএমকে।
উৎসব-ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সিপিএম এখন বার্তা দিলেও ‘ধর্ম’ নিয়ে দলের কর্মীরা কিন্তু সেই দোলাচলেই রয়েছেন। কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে থাকা যা কী না সে দ্বন্দ্ব এখনও প্রবল সিপিএমের অন্দরে। এরই মধ্যে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ফের বাঙালির উৎসব অনুষ্ঠানে ফেরার মরিয়া চেষ্টায় মুখে ধর্মীয় অনুষ্ঠান-উৎসবের বিরোধিতা করে আসা সিপিএম নেতারা সেই ধর্মকেই আঁকড়ে ধরতে চাইছে ভোট বাক্সের স্বার্থে। পার্টির নরমপন্থীদের কথায় অবশ্য, এখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।