সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছর পাঁচেক আগে প্লেনামের মাধ্যমে সাংগঠনিক রদবদল হয়েছিল সিপিএমে। তাতে অবলুপ্তি ঘটেছিল আঞ্চলিক কমিটির। পরবর্তী সময়ে ইউনিট কমিটি, এরিয়া কমিটির পরই সরাসরি জেলা কমিটি গঠিত হয়েছে। তাতে অবশ্য সদস্যদের প্রোফাইলে হেরফের হয়েছে। পক্ককেশ কমরেডদের সংখ্যা কমিয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে তারুণ্যকে। সেইমতো তরুণদের ভোট ময়দানেও নামানো হয়েছে। কিন্তু তার পর ভোটব্যাঙ্ক ফেরেনি। তার নেপথ্যে দলের একাংশের নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ্য করা গিয়েছে। তা কাটাতে কয়েকটি জেলার প্রস্তাব, জোনাল কমিটি ফেরানো হোক সিপিএমে। তবে দাবি উঠলেও তো তা হয় না। আগামী পার্টি কংগ্রেসে এনিয়ে চূড়ান্ত সম্মতি মিললে তবেই তা সম্ভব। এখন তা নিয়ে আলোচনা চলছে দলের অন্দরে।
সিপিএমের মতো দলীয় গঠনতন্ত্র বরাবরই বেশ জটিল এবং শক্তপোক্ত। ক্ষমতার বিন্যাসও সেখানে অন্যরকম। সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরতে হয়। সেসবের মাধ্যমে ৫ বছর আগে জোনাল কমিটির অবলুপ্তি ঘটে। তার বদলে নবীন-প্রবীণের সমন্বয় করে এরিয়া কমিটি ও জেলা কমিটির পুনর্গঠন করা হয়। জোনাল কমিটির সদস্যদের সকলকে অবশ্য তাতে অন্তর্ভূক্ত করা যায়নি। দলের একাংশের দাবি, এতদিন ধরে দায়িত্ব সামলানোর পর তাঁরা পদ হারিয়ে কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। ভোটের 'শূন্য' ঝুলি এবারও না ভরাতে পারার পিছনে এই বিষয়টিকে দায়ী করা হচ্ছে।
একাধিক জেলা কমিটির প্রস্তাব, ফিরিয়ে আনা হোক জোনাল কমিটি। তাহলে দলের বড় অংশকে সক্রিয় করে তোলা যাবে। মূলত গ্রামীণ রাজনীতি, সংগঠনের কথা ভেবেই এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাও হয়েছে আলিমুদ্দিনের অন্দরে। কিন্তু সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দাবি উঠলেই তাতে সিলমোহর দিয়ে কার্যকর করা যায় না। সর্বোচ্চ কমিটি তা অনুমোদন করলে তবেই সম্ভব। সেক্ষেত্রে কোনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে ভোটাভুটিও হতে পারে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে তামিলনাড়ুতে পার্টি কংগ্রেস। সেখানে এই প্রস্তাব তুলে ধরা হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, জোনাল কমিটি ফিরবে কিনা। তার পরও অবশ্য প্রশ্ন থাকছে। জোনাল কমিটির হাত ধরে কি আদৌ শূন্যের খরা কাটবে?