নব্যেন্দু হাজরা: মেট্রোর কাজ করতে গিয়ে বাড়িতে ফাটল ধরে সাড়ে সর্বনাশ। এবার বাড়িটা ভাঙা হবে, নিরাপত্তার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। বাড়ির ঠিকানা – ১৬, দুর্গা পিতুরি লেন, বউবাজার (Bowbazar)। খবরটা শুনে বাড়ির বাসিন্দারা সকলেই শশব্যস্ত হয়ে উঠলেন। এবার তো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, শখের সামগ্রী সব গুছিয়ে নিতে হবে। বাড়িটা ভাঙা হলে তো সবই ধ্বংসস্তুপ। শনিবার বিকেলের পর থেকেই তাই ঘর খালি করার প্রক্রিয়া শুরু হল বউবাজারের এই বাড়িতে।
১৯, দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দারাও শুনেছিলেন, তাঁদের বাড়িও ভাঙা পড়বে। কেএমআরসিএলের (KMRCL) ভাড়া করা হোটেল থেকে তাই ছুটে গিয়েছিলেন পাড়ায়। তবে পরে জানতে পারেন, যে বাড়িতে ভাড়া থাকেন তাঁরা, সেটি আপাতত ভাঙা হবে না। আর তাতে ফের মেট্রো কর্তৃপক্ষ এবং পুরসভার প্রতিনিধিদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট হল। বিকেলে স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে জানান, কেএমআরসিএলের তরফে তাঁকে ফোন করে প্রথমে বলা হয়, ১৬, ১৬ এ এবং ১৯ নম্বর – এই তিনটি বাড়ি সুরক্ষার স্বার্থে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আবার পরে জানানো হয়, তিনটি নয়, একটি বাড়িই আপাতত ভাঙা হবে – ১৬, দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িটি।
[আরও পড়ুন: বিজেপির বিরুদ্ধে অর্থনীতিই হাতিয়ার কংগ্রেসের, মোদি সরকারকে তীব্র কটাক্ষ চিদম্বরমের]
সোমবার থেকে বাড়ি ভাঙার শুরু হবে। শনিবার বিকেলে যখন এইসব চলছে, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন চৌরঙ্গীর বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্বরূপবাবু বলেন, “আমাকে বিকেল ৫টা ২০তে ফোন করেন কেএমআরসিএলের জিএম এ.কে নন্দী। বলেন তিনটে ভাঙা হবে বাড়ি। পরে আবার বলেন, একটা। ওদের মধ্যে কো-অর্ডিনশনের অভাব রয়েছে।” ঘটনা প্রসঙ্গে কেএমআরসিএলের জিএম একে নন্দী বলেন, “একসঙ্গে তো আর সব বাড়ি ভাঙা হবে না। আপাতত ঠিক হয়েছে, একটি বাড়িই ভাঙা হবে।”
[আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা দ্রুত দেবেন না’, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি শুভেন্দুর, পালটা তৃণমূলের]
বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন শনিবারও ছন্নছাড়া। আটকে থাকা ঘরের জিনিস বের করে নিয়ে যাচ্ছেন বাসিন্দারা। কেউ ঠাকুর ঘরে ঢুকে বের করে নিচ্ছেন গোপালকে। কেউ আবার ঘরে থাকা ফ্রিজটাও ধরাধরি করে বের করে কোনও পরিজনের বাড়ি রেখে আসছেন। দিনভর পুরসভার প্রতিনিধিরা ছিলেন সেখানে। ছিলেন কেএমআরসিএলের লোকজনও। সূত্রের খবর, নতুন করে সুড়ঙ্গে কোনও অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কাজ আপাতত বন্ধ। সুড়ঙ্গে জল ঢোকা আটকাতে প্রচুর কংক্রিট ঢালায় সেই জায়গাটা উঁচু হয়ে রয়েছে। পরে সেটিকে কাটতে হবে, এখনই সম্ভব নয়। আপাতত কাজ বন্ধ। নজর রয়েছে সুড়ঙ্গে। মাঝেমধ্যেই ইঞ্জিনিয়ররা সুড়ঙ্গে নেমে পরিস্থিতি সরোজমিনে দেখে আসছিলেন। এখন মূলত নজর রাখা হচ্ছে দুর্গা পিতুরি এলাকায় নতুন করে কোনও জায়গায় ফাটল তৈরি হচ্ছে কিনা! আর তা ধরতে সমস্ত রকম আয়োজনই সেখানে করা হয়েছে।