গোবিন্দ রায়: বৈবাহিক সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে বারাসাত আদালতে। একটি মামলায় নিম্ন আদালত স্ত্রীর ভরণপোষণের জন্য মাসে ৫০ হাজার করে টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিলেও তা মানা হয়নি। উপরন্তু স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠল চিকিৎসক স্বামীর বিরুদ্ধে। আয়ারল্যান্ডে (Ireland) কর্মরত নামী চিকিৎসক প্রদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে এবার পুলিশ ও কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC) দ্বারস্থ স্ত্রী।
সম্প্রতি স্ত্রীধন থেকে বঞ্চিত হওয়া সংক্রান্ত বাগুইআটি (Baguiati) থানার এক মামলায় স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় মহিলার সংখ্যা কত, রাজ্যের কাছে তা জানতে চেয়েছিল হাই কোর্ট। এমনকি রেড কর্নার নোটিস থাকা সত্ত্বেও স্বামী বিদেশে চলে যাওয়ার কারণ জানতে বিধাননগরের পুলিশ কমিশনারকেও তলব করেছিল আদালত। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, স্ত্রীধন থেকে অসহায় মহিলাকে বঞ্চিত করা যায় না। এরই মধ্যে ফের টেকনো সিটি থানায় চিকিৎসক স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়ায়।
[আরও পড়ুন: ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক মল্লিকার্জুন খাড়গে, ‘তৃণমূলহীন’ বৈঠকের পরই ঘোষিত সিদ্ধান্ত]
মামলাকারীর আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী জানান, ২০১৩ সালে খড়গপুরের (Kharagpur) বাসিন্দা দোলন চৌধুরীর সঙ্গে পরিণয়ে আবদ্ধ হন দমদম ক্যান্টনমেন্টের আর এন গুহ রোডের বাসিন্দা প্রদীপ কুমার চৌধুরী। বর্তমানে তিনি আয়ারল্যান্ডে কর্মরত। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই অশান্তির সূত্রপাত। অভিযোগ, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন দোয়েল। তাঁর আনা বধূনির্যাতন, ভরণপোষণ সংক্রান্ত একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে বারাসাত আদালতে। সেই সংক্রান্ত মামলায় স্ত্রীকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে ভরণপোষণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে এপর্যন্ত যে কমাস তাঁকে টাকা দেওয়া হয়নি, তাও মিটিয়ে দেওয়ার জন্য আয়ারল্যান্ডের চিকিৎসক স্বামীকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
[আরও পড়ুন: বাবরি ধ্বংসে যোগ দিয়ে হারিয়েছিলেন হাঁটার ক্ষমতা, মোদির কাছে বিশেষ আর্জি সেই করসেবকের]
কিন্তু স্ত্রী দোলন চৌধুরীর অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত খোরপোশের কোনও টাকাই দেননি প্রদীপবাবু। উপরন্তু স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। ঘরছাড়া গৃহবধূর এখন ঠাঁই হয়েছে প্রতিবেশীর বাড়িতে। বাধ্য হয়েই ফের পুলিশ ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী জানান, “একজন শিক্ষিত মানুষ, চিকিৎসকের তিনি যদি তাঁর স্ত্রীকে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেন, তাহলে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষরা কী করবেন?”