সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৪ সালের স্টিং অপারেশন নারদ কাণ্ড (Narada Sting Operation Case) নিয়ে ফের সরগরম রাজ্য রাজনীতি। সোমবার সাতসকালেই চেতলার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন ফিরহাদ হাকিম। সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে অপর দুই অভিযুক্ত শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায়কে কেন গ্রেপ্তার করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
ঠিক কী ছিল স্টিং অপারেশনে (Narada Sting Operation Case)? ২০১৪ সালে ম্যাথু স্যামুয়েল (Mathew Samuel) এবং তাঁর সহকর্মী অ্যাঞ্জেল আব্রাহাম প্রায় বাহান্ন ঘণ্টা ধরে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত একটি স্টিং অপারেশন করেন। যা ২০১৬ সালে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে আসে। গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করা ওই ভিডিওতে একাধিক নেতা-মন্ত্রীকে আর্থিক লেনদেন করতে দেখা গিয়েছিল। ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র, মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ, অপরূপা পোদ্দার, শঙ্কুদেব পণ্ডা, আইপিএস অফিসার এস এম এইচ মির্জাকে টাকা নিতে দেখা যায়। বিপুল পরিমাণ ওই অর্থের বিনিময়ে কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতেও শোনা যায়। আর এই স্টিং অপারেশন সামনে আসার পরই রীতিমতো তোলপাড় হয় সর্বত্র। যদিও তৃণমূলের তরফে ভিডিওর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তবে বিরোধীরা তা মানতে নারাজ। বারবারই এই ইস্যুতে শাসকদল তৃণমূলকে খোঁচা দিতে থাকে বিরোধীরা।
[আরও পড়ুন: ফিরহাদ হাকিমের ‘গ্রেপ্তারি’তে ধুন্ধুমার চেতলায়, রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের]
এই পরিস্থিতিতে যদিও স্টিং অপারেশনে ব্যবহৃত টাকার উৎস নিয়ে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েন ম্যাথু। কলকাতা হাই কোর্টের তরফে বারবার এ বিষয়টি জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। তিনি দাবি করেন স্টিং অপারেশনে ব্যবহার হওয়া ৮৫ লক্ষ টাকা সাংসদ কে ডি সিংয়ের সংস্থার কাছ থেকে পেয়েছেন। ম্যাথুকে যাচাই করতে কে ডি সিংয়ের সংস্থাকে নোটিস পাঠানো হয়। তবে ম্যাথুর দাবি খারিজ করে দেয় কে ডি সিংয়ের সংস্থা। তারপর থেকে নোটিস পাঠানো হলেও একাধিকবার হাজিরা এড়ান ম্যাথু।
এরই মাঝে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারদ কাণ্ড অন্য মোড় নেয়। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয় যাঁরা ঘাসফুল শিবির ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছেন যেমন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), মুকুল রায় (Mukul Roy) তাঁদের স্টিং অপারেশনের ফুটেজ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ পদ্ম শিবির। এই আকচাআকচির মাঝেই সোমবার সকালে নয়া মোড়। গ্রেপ্তার ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee), মদন মিত্র (Madan Mitra) এবং শোভন চট্টোপাধ্যায় (Sovon Chatterjee)। নারদ মামলায় প্রথমবার চার্জশিট পেশ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে খবর,
- স্টিং ফুটেজ ভয়েস রেকর্ড ল্যাবে পরীক্ষা করার পর কণ্ঠস্বর মিলে গিয়েছে।
- যেখানে বসে টাকা নেওয়া হয়েছে মিল রয়েছে সেই জায়গার সঙ্গেও।
- যে কারণ দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয়েছিল, তার সঙ্গে হিসেবে গরমিল রয়েছে।
- সাংসদদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সংসদের স্পিকারের অনুমোদন দরকার। তা নেওয়া হয়নি বলে প্রথম চার্জশিটে নাম নেই তাঁদের। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা জারির সম্ভাবনা রয়েছে। আইপিএস অফিসার এসএমএইচ মির্জার (SMH Mirza) বিরুদ্ধে তদন্ত এগোতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুমতি নেওয়া হয়েছে।