অর্ণব আইচ: এবার দোলের সঙ্গে সঙ্গে হোলির দিনটিকেও সমান গুরুত্ব দিল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, সাধারণভাবে দোলের দিনটিতে হোলির থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি সংখ্যক পুলিশ থাকে। কিন্তু এই বছর মঙ্গলবার দোল ও বুধবার হোলির দিন সারা শহরেই সমসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
লালবাজারের কর্তারা প্রত্যেকটি থানার সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক বিভাগকেও সতর্ক করেছেন, দু’দিনই যাতে রং খেলে বের হওয়ার পর মদ্যপ অবস্থায় কেউ বাইক বা গাড়ি না চালায়। মদ্যপ চালকদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আটক করে রাখা হতে পারে গাড়ি ও বাইক। দোল বা হোলিতে অতিরিক্ত গতিতে বাইক বা স্কুটি চালানোর প্রবণতা থাকে। আবার চুলে রং লেগে থাকায় হেলমেটও পরেন না অনেকে। পুলিশের কড়া বার্তা, হেলমেট না পরলে বা এক বাইকে তিনজন থাকলে জরিমানা দিতে হবে।
[আরও পড়ুন: কীর্তন থেকে ফেরার পথে কোচবিহারে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, টোটোয় ট্রাকের ধাক্কায় মৃত ৪]
পুলিশ জানিয়েছে, দোল বা হোলি, দু’দিনেই কলকাতায় থাকতে পারে অতিরিক্ত সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার পুলিশ বাহিনী। শহরের অন্তত পাঁচশোটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকবে পুলিশ পিকেট। প্রত্যেকটি ডিভিশনের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনার দায়িত্বে থাকছেন একজন করে অতিরিক্ত ডিসি। তাঁর সঙ্গে থাকবেন দুই বা তিনজন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। থাকছেন অতিরিক্ত সংখ্যক ইন্সপেক্টর ও অন্যান্য পদের আধিকারিকরাও। পদস্থ পুলিশকর্তারা সারাদিন ধরেই টহল দেবেন। এ ছাড়াও সারা শহরজুড়ে টহল দেবে পুলিশের পিসিআর ভ্যান, হেভি রেডিও ফ্লাইং স্কোয়াড, কুইক রেসপন্স টিম। বাইকে করে অলিগলিতে টহল দেবে পুলিশের টিম।
কোথাও কোনও গোলমালের খবর পেলেই যাতে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে সেখানে পুলিশ হাজির হয়, সেদিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। কারণ, গত বছরই রিজেন্ট পার্কে দোলের দিন গুলি চলেছিল। কোনও গাড়ির ভিতর থেকে যাতে রং না ছোড়া হয়, সেদিকে কড়া নজর থাকবে পুলিশের। প্রত্যেকটি থানাকে বলা হয়েছে, বহুতল থেকে যাতে নিচে রং না ছোড়া হয়, সেই ব্যাপারে বহুতলের কমিটিগুলিকে সতর্ক করতে। বিশেষ করে মধ্য কলকাতার বড়বাজার, পোস্তা, জোড়াসাঁকো, উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান এলাকায় মাইক নিয়ে সচেতন করা হচ্ছে যাতে, পথচারীদের উপর বালতি করে বা পিচকারি দিয়ে রং না ছোড়া হয়। জোর করে গায়ে রং দিলে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে।
[আরও পড়ুন: কলকাতায় যাওয়ার পথে অনুব্রতকে নিরাপত্তা দেবে পুলিশই, নির্দেশ আসানসোল সিবিআই আদালতের]
গত বছর দোলের দিন রং খেলার পর চেতলা-সহ শহরের একাধিক পুকুর ও গঙ্গায় স্নান করতে গিয়ে ডুবে মৃত্যু হয় ৩ কিশোর ও তরুণের। এই বছর গঙ্গার ঘাটগুলি ছাড়াও কলকাতার প্রত্যেকটি পুকুর ও ঝিলের কাছে পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। যাতে রং ধুতে গিয়ে কেউ পুকুরে ডুবে না যান, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।