অর্ণব আইচ: 'মরতে পারিস না?', রাগের মাথায় তরুণী প্রতিবেশীকে বলেই ফেলেছিলেন গৃহবধূ। আর তারই ফল পেতে হল তাঁকে। ওই তরুণী তিনতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন। ঘটনার এক মাস পর আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন ওই গৃহবধূ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই গৃহবধূর নাম তারান্নাম আরা। গত ৩০ নভেম্বর মধ্য কলকাতার জোড়াসাঁকো এলাকায় ঘটেছিল এই ঘটনাটি। ওই এলাকার মিত্র লেনের একটি পাঁচতলার বাড়িতে থাকে বহু পরিবার। বাড়িটির তিনতলায় ১৮ বছরের তরুণী ফিরোজা পারভিনের পাশের ঘরেই থাকেন অভিযুক্ত গৃহবধূ। জল তোলা থেকে শুরু করে বাথরুম ব্যবহার করা, অনেক বিষয়কেই কেন্দ্র করে প্রত্যেকদিনই বিভিন্ন পরিবারের লোকেদের মধ্যে গোলমাল হত। ঘটনার দিন সকাল থেকেই ওই তরুণী ও গৃহবধূর মধ্যে দফায় দফায় ঝগড়া হয়। দুপুরে দুজনের মধ্যে গোলমাল চরমে ওঠে। তারই জেরে তরুণীকে গৃহবধূ বলেন, ‘‘মরতে পারিস না? মরেই যা তুই।’’
ওই বাড়ির বাসিন্দারা জোড়াসাঁকো থানার পুলিশ আধিকারিকদের জানান, গৃহবধূ এই কথা বলার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ওই তরুণী। বিকেল তিনটে নাগাদ একটি শব্দ শুনে ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দারা। দেখা যায়, বাড়ির সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তরুণী। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা তরুণীকে তিনতলার বারান্দা থেকে ঝাঁপ দিতে দেখেছিলেন। অভিভাবকরা বিহারে বাড়ি থেকে আসার পর খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত ওই গৃহবধূ ছাড়াও আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু ওই গৃহবধূ খুন করেছেন, এমন প্রমাণ পাচ্ছিলেন না পুলিশ আধিকারিকরা। শেষ পর্যন্ত তদন্তে জানা যায় যে, এমনভাবে ওই তরুণীকে প্ররোচনা করা হয় যে, তিনি আত্মঘাতী হন। এরপরই আদালতের অনুমতি নিয়ে খুনের ধারা মামলা থেকে বাদ দিয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার ধারা যুক্ত করা হয়। বুধবার আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে ওই গৃহবধূকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। অন্য অভিযুক্তদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।