সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উচ্চবিত্ত মহলের ধনী মহিলাদের স্বাধীনচেতা মনোভাবই শুধু আন্তর্জাতিক নারী দিবসের সার্থকতা নয়। বরং শ্রমজীবী নারীর লড়াই এই দিনটাকে আরও মহিমান্বিত করে তোলে আর সেটাই প্রকৃত নারী অগ্রগতির প্রতীক। এদেশে নারী সংগ্রামের কথা বলতে গেলে কে না জানে, অবধারিতভাবেই আসবে যে নাম, তা 'অগ্নিকন্যা' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই আজ, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মমতার সেই সংগ্রামী ইতিহাস তুলে ধরেই শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা জানালেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডেলে একাধিক পোস্টে মমতার প্রায় গোটা রাজনৈতিক আন্দোলনকে মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ''টালির চালের ঘরের বাসিন্দা অগ্নিকন্যার সেই শাসকদেরই হারিয়ে বাংলার সিংহাসনে বসার যাত্রাপথটাও নারীশক্তির জয়ধ্বনির আত্মবিশ্বাসী ধারাভাষ্য।''

ছাত্র পরিষদ করাকালীন নয়ের দশকের শেষদিকে আন্দোলনের ময়দানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রথম আলাপ কুণাল ঘোষের। এক্স হ্যান্ডল পোস্টে এভাবেই স্মৃতিচারণ করলেন তিনি। এর পরপর এতগুলো বছর ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগ্রামের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরেছেন দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। তবে মমতাকে নিয়ে তাঁর ধারাবাহিক পোস্টে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, তৃণমূল সুপ্রিমোকে প্রথম 'অগ্নিকন্যা' সম্বোধনের কাহিনি। কুণাল ঘোষের পোস্টে লেখা, '' কোনো ভুল ধারণা রাখবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে 'অগ্নিকন্যা' শব্দটি প্রথম উচ্চারণ করেছিলেন কলকাতার 37 নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন বামফ্রন্ট সমর্থিত নির্দল কাউন্সিলর ডাঃ কে পি ঘোষ।'' সেই কারণে ডাঃ ঘোষকে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের বিস্তর লাঞ্ছনা সহ্য করতে হয়েছিল, তাও উল্লেখ করেছেন তিনি।
১৯৯৩ সালে সচিত্র পরিচয়পত্রের দাবিতে তৎকালীন যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলন, শাসক নিয়ন্ত্রিত পুলিশের লাঠির আঘাতে মাথা ফাটিয়েও লড়াকু মহিলার অনমনীয় মনোভাবই যে আজ তাঁকে বাংলার শাসকের কুর্সিতে বসিয়েছে, সে বিষয়ে আজ আর কোনও সন্দেহ নেই। কুণাল ঘোষেরও বক্তব্য, ''শাসকের হামলায় মৃত্যুমুখ থেকে বারবার ফিরে এসে টালির চালের ঘরের বাসিন্দা অগ্নিকন্যার সেই শাসকদেরই হারিয়ে বাংলার সিংহাসনে বসার যাত্রাপথটাও নারীশক্তির জয়ধ্বনির আত্মবিশ্বাসী ধারাভাষ্য। রক্তাক্ত হাজরা রোড থেকে মহাকরণের অলিন্দে পৌঁছনোর কালচক্রে ধ্বনিত হয় মহালয়ার আবাহনীর সুর।'' আজ, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এভাবেই দলনেত্রীকে কুর্নিশ জানালেন দলের অন্যতম সৈনিক।