রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: লকডাউন নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন ও আশ্বস্ত করতে ফের পথে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধীদের নিষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজের স্বার্থের কথা ভেবে ঘরে থাকতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। করোনা থেকে বাঁচতে লকডাউন মানতেই হবে বলে শুক্রবার পথে নেমে বার্তা দিলেন তিনি।
করোনা আবহে প্রধানমন্ত্রী থেকে দেশের বাকি মুখ্যমন্ত্রীরা বাড়িতে বসেই পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছের দেশ তথা রাজ্যবাসীকে। সেখানে পায়ের তলায় সর্ষে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। রাস্তায় নেমে প্রতিদিন সরেজমিুনে খতিয়ে দেখছেন পরিস্থিতি। হাতে-কলমে শিখিয়ে দিচ্ছেন কীভাবে কী করতে হবে। প্রয়োজন মাইক হাতে সচেতনতার বার্তাও প্রচার করছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই সেক্ষেত্রে বিরোধীদের নিষেধের বাণীকে আমল দিতে নারাজ তিনি। সদর্পে মাঠে নেমেই কাজ করতে যে তিনি অভ্যস্ত তা প্রমাণ করছেন বারংবার। নিজের পরোয়া না করে যে সকলের কথা ভাবতে ও মাটির কাছাকাছি তিনি থাকতে চান সেটাও ঠারেঠারে বুঝিয়ে দিলেন সকলকে। আজও সেই প্রথার অন্যথা হয়নি। যাদবপুরের এইট-বি (8B) বাসস্টপের সামনে গিয়ে সচেতনতার প্রচার সারলেন। বললেন, “সাধ্যমতো মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। আপনারা ঘরে থাকুন। মাস্ক ব্যবহার করুন। কোনও সমস্যা হলে পুলিশকে বলুন। পুলিশ পাশে আছে। লকডাউন মানতেই হবে।” করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও শহর পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী। গাড়ি থেকেই নাগরিকদের কাছে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন। এদিন বিকেলে প্রথমে যাদবপুর ৮বি এবং তারপর ইএম বাইপাস সংলগ্ন অভিষিক্তায় গিয়ে জনগনকে লকডাউন বিধি কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ করেন।
[আরও পড়ুন:হোমের একাধিক শিশুর জ্বর-কাশি, গাইডলাইন মেনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ হাই কোর্টের]
যাদবপুর এইট-বি এলাকায় গিয়ে গাড়ি থামিয়ে মাইকিং করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ঘরবন্দি থাকতে সকলের কষ্ট হলেও লকডাউন মেনে চলতেই হবে। নোট বন্দির পর মানুষ ঘরবন্দি। সকলের সব কাজ বন্ধ। প্রশাসন সবরকম চেষ্টা করছে যাতে মানুষ ভাল থাকে। সামাজিক দুরত্ব মেনে চলতে হবে। করোনা সময়মতো ধরা পড়লে ঠিকমতো চিকিৎসা হলে সেরে যাবে।” যাদবপুর এলাকায় পথে সচেতনতা প্রচারে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে দেকে হতচকিত হয়ে যান অনেকেই। বাড়ির ছাদ বা বারান্দা কিংবা আবাসনের জানলা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনতে আগ্রহী হয়ে পড়েন বহু মানুষ। যাদবপুর থেকে ইএম বাইপাসের অভিষিক্তায় যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পরামর্শ, বাসন্তী পুজো, অন্নপূর্না পুজো হয়ে গিয়েছে। এখন ঘরটাই আমাদের মন্দির-মসজিদ-গুরুদ্বার। ঘরে বসেই প্রাথর্না করুন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “করোনায় অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। চিকিৎসকদের পরামর্শ ও প্রোটোকল মেনে চললেই রোগ থেকে ভাল হওয়া যায়।” বৃহস্পতিবার মৌলালি ও বেহালায় সচেতনতা প্রচারে গিয়েছিলেন। শুক্রবার যাদবপুর ও অভিষিক্তায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
[আরও পড়ুন:রোগী ফেরানোর ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রাজ্যের, হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ মুখ্যসচিবের]
The post ‘এখন ঘরই আমাদের মন্দির-মসজিদ-গুরুদ্বার, ঘরে বসেই প্রার্থনা করুন’, বললেন মুখ্যমন্ত্রী appeared first on Sangbad Pratidin.
