নব্যেন্দু হাজরা: 'বাংলার বাড়ি' প্রকল্পে বাড়ি নির্মাণের কাজের অগ্রগতি দেখবেন পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরাই। নির্দিষ্ট সময় অন্তর নিজ এলাকায় গিয়ে দেখে আসবেন, উপভোক্তার বাড়ি তৈরির কাজ এগোচ্ছে কি না, সেইমতো রিপোর্ট জমা পড়বে বিডিওর কাছে। ইতিমধ্যেই বাংলার বাড়ি নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) প্রত্যেক জেলাশাসককে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেইমতো কাজ বাস্তবায়ন করছেন বিডিওরা।
তবে তাঁদের পাশাপাশি ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের সদস্যরা দেখভাল করবেন উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরিতে কোথাও কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। টাকা পেয়েও বাড়ি সকলে বানাচ্ছেন কি না, এসব। পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, ব্লকে কে বাড়ি পাচ্ছেন, কে যোগ্য, কে অযোগ্য - তার তালিকা চূড়ান্ত থেকে বাড়ি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বিডিও-র হাতে সব ক্ষমতা রয়েছে ঠিকই। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প বাস্তবায়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও ভূমিকা রয়েছে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ১২ লক্ষ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৬০ হাজার টাকা করে দিয়েছে। এবার বাড়ি তৈরির কাজে হাত দেওয়ার কথা উপভোক্তার।
কিন্তু ১২ লক্ষ বাড়ি তৈরির কাজ নিয়ম মেনে এগোচ্ছে কি না, তার তদারকি করাও কম বড় ব্যাপার নয়। একটি ব্লকের প্রশাসনের যা লোকবল, তা দিয়ে সেটা করা সম্ভব নয়। আর তাই এক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলাপরিষদের সদস্যদের এই গৃহনির্মাণের অগ্রগতির বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, এই ধরনের প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ঠিকঠাক হচ্ছে কিনা, তা দেখভালের জন্য একটা প্রশাসনিক ফান্ড দেওয়া হয় সেই দপ্তরকে। স্থানীয় ছেলেদের নিযুক্ত করা হত এই অর্থ দিয়ে। কিন্তু কেন্দ্র আবাস যোজনার টাকা থেকে বাংলাকে বঞ্চিত করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ১২ লক্ষ পরিবারের মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করছেন। রাজ্যের কোষাগার থেকে প্রত্যেক উপভোক্তাকে দেওয়া হচ্ছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে। এরপর নবান্ন আর আলাদা করে কাজের অগ্রগতি দেখভালের জন্য স্থানীয় কাউকে নিয়োগ করছে না। পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরাই এই নজরদারি চালাবেন। পাশাপাশি এর আরও একটা দিক রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিচ্ছেন, রাজ্য সরকারই গরিব মানুষের মাথার উপর ছাদ তুলে দিচ্ছে, সে কথা প্রচার প্রশাসনিক পদে থেকে বিডিও-রা সেভাবে করতে পারবেন না। যা পারবেন জনপ্রতিনিধিরা।
নির্মাণকাজের অগ্রগতির কাজ জনপ্রতিনিধিরা করলে তাতে সরকারের লাভই হবে। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, "বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা উপভোক্তারা পেয়ে গিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে সঠিকভাবে এই বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে কি না, তার নজরদারি স্থানীয় পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরাই করবেন। কারও কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না বাড়ি তৈরিতে তা দেখভালও তো করতে হবে।"