shono
Advertisement

Partha Chatterjee: ‘কীভাবে ইডি বলছে অসহযোগিতা করছি?’, ভারচুয়াল শুনানিতে জামিনের আবেদন পার্থর

ভারচুয়ালের পরিবর্তে আদালতে সশরীরে হাজিরার আরজি অর্পিতার।
Posted: 03:10 PM Aug 31, 2022Updated: 03:12 PM Aug 31, 2022

অর্ণব আইচ: জেল হেফাজত শেষে বুধবার প্রেসিডেন্সি জেল থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার থেকে প্রাক্তন মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় আদালতে ভারচুয়ালি হাজিরা দেন। আরও একবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদনে সওয়াল তাঁর আইনজীবীর। ইডির আইনজীবী তার বিরোধিতা করেন। পালটা প্রভাবশালী তত্ত্বে ফের জামিনের আবেদন খারিজের দাবি জানানো হয়। এদিকে, অর্পিতার আইনজীবী এদিনও জামিনের আবেদন জানাননি। শুধুমাত্র ভারচুয়ালি হাজিরার বিরোধিতা করেন পার্থ ‘ঘনিষ্ঠে’র আইনজীবী। শুধুমাত্র সশরীরে হাজিরার আবেদন করা হয়।

Advertisement

শুনানির শুরুতেই আরও একবার যেকোন শর্তে জামিনের আবেদন জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) আইনজীবীর। বলা হয়, এভাবে ভারচুয়ালি হাজিরার আবেদন আসলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাংবিধানিক অধিকারে হস্তক্ষেপ। সশরীরে হাজিরা দেওয়া তাঁর মৌলিক অধিকার। মক্কেলের (পার্থ চট্টোপাধ্যায়) বিভিন্ন অসুস্থতা রয়েছে। যেমন তাঁর পা ফুলে গিয়েছে। হিমোগ্লোবিন কমে গিয়েছে। ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে। কারও সাহায্য ছাড়া শৌচালয়েও যেতে পারেন না। অথচ জেলে তাঁর কোনও সহযোগী নেই। তাঁর অবিলম্বে চিকিৎসা প্রয়োজন। উনি ১৭টি করে ওষুধ খান। দরকারে পুলিশি নজরদারিতে তাঁকে গৃহবন্দি করে রাখারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।

[আরও পড়ুন: বিধায়কদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জের? নিরাপত্তা কমল রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীর]

বলা হচ্ছে, পার্থ ও অর্পিতার একাধিক সংস্থা রয়েছে। তবে তা ঠিক নয়। পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজে বলেন, “অপা ইউটিলিটি সার্ভিসেসের অংশীদার ছিলাম না। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।” পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী জানান, উনি এসএসসি বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। মন্ত্রীর আত্মীয়দের নামে বিপুল সম্পত্তির কথা বলা হচ্ছে। তবে তা ঠিক নয়। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে টাকা, গয়নাগাটি, বিদেশি মুদ্রা কিছুই পাওয়া যায়নি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বারবার ইডি’র তরফে বলা হচ্ছে আমি তদন্তে অসহযোগিতা করছি। আমি চোর নই। কীভাবে বলব চোর? কীভাবে অসহযোগিতা করছি? কী ধরনের নথি পাওয়া গিয়েছে দেখানো হোক। বিভিন্ন সংস্থা ডামি ডিরেক্টরের কথা বলা হচ্ছে। তারা কারা আমাকে বলা হোক। বলা হচ্ছে, আমার পরিবারের সদস্যরা নানা সংস্থার ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। আমার পরিবারে কোনও সদস্য নেই। স্ত্রী প্রয়াত। আমার মেয়ে আমেরিকায় থাকে। খুব বেশি আসাযাওয়া নেই।”

তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আবারও প্রভাবশালী বলে দাবি করে জামিনের আবেদন খারিজের পক্ষে সওয়াল করেন ইডি’র আইনজীবী। এদিন শুনানি চলাকালীন জানান, এলআইসিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে অঙ্কিতার ‘আঙ্কল’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভায় ২০১টি শেল কোম্পানির মাধ্যমে জমি কেনা হয়েছে। তাতে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে, অর্পিতার নামে জমিগুলি কিনেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আরও ২৫টি নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তার ফলে এখনও পর্যন্ত তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা একশো পেরল। কীভাবে গরিব মানুষদের ব্যবহার করতেন, তা জানা গিয়েছে। ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে ভুয়ো সংস্থাগুলির ডিরেক্টর করা হয়েছে। সিমবায়োসিস মার্চেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে নতুন একটি সংস্থার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যার শেয়ার বিপুল দামে বিক্রি হয়েছে। বিপুল সম্পত্তি সম্পর্কে তথ্যের খোঁজে তাঁকে আরও জেরার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

অসুস্থতার যুক্তি খারিজ করে আইনজীবীর আরও দাবি, মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখেই বোঝা যাচ্ছে উনি কতটা প্রভাবশালী। সত্তরোর্ধ্ব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নানা সমস্যা রয়েছে। তাঁর চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তাই তাঁর ক্রনিক কিছু অসুস্থতা থাকাই স্বাভাবিক। তার মানে তাঁকে মুক্তি দিতে হবে এমন নয়। জেলে জেরা করার অনুমতিও চাওয়া হয়। অর্পিতার (Arpita Mukherjee) আইনজীবী তাঁর জামিনের আবেদন জানাননি। তবে পরবর্তী শুনানির দিন ভারচুয়ালির বদলে তাঁকে সশরীরে আদালতে পেশের দাবি জানানো হয়। সওয়াল জবাব শোনার পর আপাতত রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত।

[আরও পড়ুন: ২ ঘণ্টা তল্লাশির পর বাড়ি থেকে ‘আটক’ অনুব্রত ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement