সুব্রত বিশ্বাস: পুজোপার্বণ মানেই চক্ররেল বন্ধ। কখনও বা আংশিক অথবা পূর্ণ। ৩৫ কিলোমিটারের সহজ পথ পেরিয়ে অভ্যস্ত মানুষজন তখন পড়েন মহাসংকটে। এই সমস্যার মুখে পড়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন এক ব্যক্তি।

প্রতিদিন চক্ররেলের মাধ্যমে ৬৫ হাজার যাত্রী যাতায়াত নির্বিঘ্নে যাত্রা করেন। তবে বছরে প্রায় ৩৬ দিন বন্ধ থাকে এই চক্ররেল। মহালয়ের তর্পণ বা দুর্গাপুজোর ভাসান, কালীপুজোর বিসর্জন অথবা ছট, বিশ্বকর্মা, সরস্বতী পুজো, এমনকী বাড়তি গঙ্গাস্নানকে কেন্দ্র করে চক্ররেল আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখে রেল কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তার জন্য এই পদক্ষেপ রেলের হলেও সমস্যায় মুখে পড়তে হয় যাত্রীদেরই। এই অভিযোগ তুলে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন কৃষ্ণ দাস নামের এক ব্যক্তি। বছরভর যাতে চক্ররেল পরিষেবা সচল থাকে তারজন্য আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এই মামলাকারী।
মামলার বয়ান অনুযায়ী, দমদম থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত চক্ররেল ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। বারবার ট্রেন ও বাস বদলের ঝামেলা এড়াতে বহু যাত্রী চক্ররেলকে বেছে নিয়েছেন সহজ পথ হিসেবে। কিন্তু, পুজো পার্বণ এলেই রেল চক্ররেলের ট্রেন নিয়ন্ত্রণ করে। মূলত নিরাপত্তার কারণে এই পথে ট্রেন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে রেল। কারণ পুজো পার্বণের সময় প্রচুর দর্শনার্থী রেলপথ পেরিয়ে বাবুঘাটের দইঘাট, বাগবাজার ঘাটে ভিড় করেন। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তবে মামলাকারী চাইছেন যেন বছরভর চক্ররেল সচল রাখা হয়। আগামী বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জনস্বার্থ মামলাকারী কৃষ্ণ দাসের আরজি, বছরভর এই রেল পরিষেবাকে সচল রাখতে বিকল্প কোনও পথ খোঁজা হোক। এবিষয়ে যাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয় সে বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, কলকাতার বিভিন্ন জায়গার মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তুলতে ১৯৮৪ সালে গড়ে ওঠে চক্ররেল। যা সার্কুলার রেলওয়ে নামেও পরিচিত। দমদম থেকে মাঝেরহাট যাতায়াতের জন্য এই শাখা যথেষ্টই জনপ্রিয় রেলপথ।