অর্ণব আইচ: ঝগড়া শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। সেই ঝগড়া যে প্রাণঘাতী হয়ে উঠবে, ভাবতেই পারেননি রাফিয়া সাকিল শেখ। বৃহস্পতিবার রাতে বাইপাসে তরুণী খুনের ঘটনায় নয়া তথ্য হাতে এল তদন্তকারীদের। শনিবার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিলেছে। তাতে উল্লেখ, ছুরির কোপে গলার নলি কাটার ফলে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তবে এখনও অধরা অভিযুক্ত প্রেমিক। তাকে খুঁজছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার সময় কিশোরের সঙ্গে তাঁর মা শাহজাদি ও কাকা ওয়াশিম আক্রামও ছিলেন। নাবালককে হোমে পাঠানো হয়েছে। মা ও কাকা পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।

এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই যেন রহস্যের পরত খুলছে। শনিবার তদন্তকারীরা জানতে পারেন, শুধু রাফিয়ার 'প্রেমিক' ফারুকীর গাড়ি জিপিএস ট্র্যাকিংয়ে ধাওয়া করে আচমকা হামলা চালায়নি তাঁর নাবালক ছেলে ও স্ত্রী। বৃহস্পতিবার ঘটনার ভিত তৈরি হয়েছিল আরও খানিকটা আগে থেকে। ওইদিন বাড়িতে ঝগড়াঝাঁটি করে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন ফারুকী। প্রেমিকা রাফিয়াকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সন্ধ্যে নাগাদ গাড়ি থেকে নেমে বাইপাসের ধারে একটি চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন তাঁরা। এমন সময়ে ভাই, স্ত্রী ও পুত্র সেখানে পৌঁছে যান। ফারুকী ও রাফিয়ার সঙ্গে তাঁদের বিস্তর ঝগড়াঝাঁটি হয়। অভিযোগ, রাফিয়াকে মারধর করা হয়। পরিস্থিতি বিপজ্জনক বুঝে রাফিয়া দৌড়ে পালাতে চান।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সেসময়ই ফারুকীর নাবালক পুত্র পকেট থেকে ছুরি বার করে তাঁর পিছনে দৌড়তে থাকেন। সঙ্গে তার মা। এই সুযোগে ফারুকী অন্যত্র পালিয়ে যান। অন্যদিকে, বাইপাস ধাবার সামনে জনবহুল রাস্তাতেই রাফিয়ার গলায় কোপ বসায় নাবালক। তারপর বুকে আঘাত করতে গেলে রাফিয়া তা রুখে দেওয়া তাঁর হাতে উপুর্যপরি ছুরির আঘাত লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। পরদিন সকালেই রাফিয়ার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছুরিকাঘাতে গলার নলি কেটে যাওয়ার ফলেই প্রাণহানি হয়েছে চব্বিশের তরুণীর।