নব্যেন্দু হাজরা: হোক না দামী! নামী আমের স্বাদ নিতে পকেটের তোয়াক্কা করে না আমবাঙালি। ফলে নেতাজি ইন্ডোরের আম উৎসবে (Mango Festival) পাঁচশো টাকার আমও চেঁছেপুঁছে উধাও। বিক্রেতাদের কাছে একটাও পড়ে নেই। শনিবার, উৎসবের শেষদিনে অনেক আশা নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে এসে নিরাশ হয়ে ফিরতে হল বহু আমবিলাসীকে। যাঁদের মধ্যে নীলবাতি লাগানো গাড়ি চড়ে আসা বিস্তর ‘ভিআইপি’ পরিবারও রয়েছে।
উৎসবের শুরুর দিন থরে থরে সাজানো ছিল নদিয়ার রেড পালমার, মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) নবাবি কোহিতুর। যার একপিসের দাম ৫০০ টাকা। দাম শুনে অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছিলেন, এত দামী আম লোক কিনবে! বিক্রেতারা বলছেন, রেড পালমার ১২০ পিস প্রথম দিনেই শেষ হয়ে গিয়েছে। আর কোহিতুর ১৫০ পিস। ফলে যাঁরা ভেবে এসেছিলেন নবাবি আম কিনে বাড়ি ফিরবেন, তাঁরা দ্বিতীয় দিন থেকেই হতাশ হয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ১০ বছর পর GTA নির্বাচন, উৎসবের মেজাজে ভোটগ্রহণ শুরু শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ-সহ ৬ পুর ওয়ার্ডে]
হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি, গোলাপখাস, সারেঙ্গা, বিড়া, রানিপসন্দ, মুলায়মজাম, ব্যানানা কিং, মল্লিকা, মোতিচূর ইত্যাদি নামী-অনামী গোটা চল্লিশ প্রজাতির আম দেদার বিকিয়েছে এই তিনদিন। তবে উৎসবের শেষ দিন দাম কিছুটা কমিয়েই আম বেচে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দপ্তরের হিসাব বলছে, এই তিনদিনে ৬০ মেট্রিক টন আম বিক্রি হয়েছে উৎসবে। আগামী বছর আরও বড় করে এই উৎসব হবে বলে জানান দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত সাহা। বলেন, “আগামী বছর আরও আগে শুরু হবে এই উৎসব। আরও বেশি প্রজাতির আম রাখা হবে।” এই উৎসবে গুণমানের বিচারে রাজ্য সরকারের তরফে পুরস্কৃতও করা হয় বিভিন্ন জেলাকে। ‘অ্যাপিয়ারেন্স’ বিভাগে প্রথম হয়েছে হুগলি, দ্বিতীয় পূর্ব বর্ধমান, তৃতীয় উত্তর চব্বিশ পরগনা, ‘ওভারঅল পারফরমেন্স’ বিভাগে প্রথম মালদহ, দ্বিতীয় নদিয়া এবং তৃতীয় হয়েছে মুর্শিদাবাদ, আর ‘অ্যাওয়ার্ড অফ অ্যাপ্রিসিয়েশন’ বিভাগে প্রথম হয়েছে বাঁকুড়া, দ্বিতীয় পুরুলিয়া এবং তৃতীয় উত্তর দিনাজপুর।
উৎসবের শেষদিন সব থেকে বেশি ভিড় হয়েছে বলেই জানাচ্ছেন আম ব্যবসায়ীরা। প্রচুর মানুষ এসেছেন। ঝোলা ভরে আম নিয়ে গিয়েছেন। দামেও প্রথম দিনের তুলনায় বেশ খানিকটা কমই পেয়েছেন। কারণ ১০০ টাকা কেজির আমই শেষ মুহূর্তে ৫০-৬০ টাকা কেজিতেও পেয়েছেন। তবে পছন্দের আম অনেকেই শেষমুহূর্তে পাননি এদিন। অপেক্ষা করতে হবে আরও একটা বছর আক্ষেপ তাঁদের।