shono
Advertisement
RG Kar Verdict

১৬২ দিন পর বিচার পেল তিলোত্তমা, আর জি কর ধর্ষণ-খুনে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয়

গত বছরের ৯ আগস্ট আর জি কর হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়।
Published By: Sayani SenPosted: 02:28 PM Jan 18, 2025Updated: 06:28 PM Jan 18, 2025

অর্ণব আইচ ও গোবিন্দ রায়: আর জি কর ধর্ষণ-খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত আসামি সঞ্জয় রায়। শনিবার বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাসে বহু প্রতীক্ষিত এই মামলার রায়দান হয়। এদিন সঞ্জয়কে কাঠগড়ায় তুলে বিচারক জানিয়ে দেন, তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের জন্য মৃত্যু), ১০৩(১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বিচারকের কথা শুনে সঞ্জয় চিৎকার করে ওঠে। সে দাবি করে, “আমি কিছু করিনি। যারা করেছে তাদের কেন ছাড়া হল? আমার কোনও দোষ নেই। সবাই মিলে করেছে। আমি পাপ করিনি। দোষ করলে গলার রুদ্রাক্ষের মালা খুলে পড়ে যেত।”  বিচারক জানিয়ে দেন, সোমবার এই মামলার সাজা ঘোষণা। সেদিন সঞ্জয়কে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। 

Advertisement

বিচারক অনির্বাণ দাস

এদিন রায় ঘোষণার আগে আদালত চত্বরে ভিড় জমান বহু সাধারণ নাগরিক।

আদালত চত্বরে ভিড়। ছবি: সুমন দাস

বাংলা পক্ষের সমর্থকরা সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।

নির্যাতিতার পরিবারের ৫ সদস্য আদালত কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। তবে সাধারণ মানুষকে আদালত কক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। মেয়ের নৃশংস হত্যার ১৬২ দিনের মাথায় সঞ্জয় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বিচারককে ধন্যবাদ জানান তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা। 

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ আগস্ট, হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয় তাঁকে। তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। ১০ আগস্ট এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ১২ আগস্ট নির্যাতিতার বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। শোকস্তব্ধ পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। গত ১৩ আগস্ট CBI তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত।

গত ১৪ আগস্ট রাতদখল করেন মহিলারা। ওই রাতেই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চলে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। গত ১৮ আগস্ট এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয়। গত ২ এবং ৩ সেপ্টেম্বর জুনিয়র চিকিৎসকরা লালবাজার অভিযান করেন। ১০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র চিকিৎসকরা অবস্থান আন্দোলন শুরু করেন। ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর নবান্নে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকের ডাক দেন। তবে দুদিনই বৈঠক ভেস্তে যায়।

১৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্বাস্থ্যভবনে চিকিৎসকদের অবস্থান মঞ্চে আচমকা পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সিপি বিনীত গোয়েলকে সরানো হয়। গত ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্যভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তাররা অবস্থান প্রত্যাহার করেন। আর জি কর আন্দোলনের মাঝে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সাগর দত্ত হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের উপর হামলা করা হয়। মারধরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি শুরু হয়। স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ, নিরাপত্তা-সহ একাধিক দাবিতে গত ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় অনশন আন্দোলন শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

গত ৭ অক্টোবর মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম উল্লেখ করে সিবিআই চার্জশিট পেশ করে আদালতে। গত ১৯ অক্টোবর মুখ্যসচিবের মাধ্যমে অনশনকারীদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২১ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের ফের বৈঠক হয়। অনশনকারীরা তাঁর লাইভ সম্প্রচার দেখেন। বৈঠকের পর ওইদিনই অনশন প্রত্যাহার করেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। গত ৪ নভেম্বর সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করা হয়। ১১ নভেম্বর শিয়ালদহ আদালতে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। ১৮ জানুয়ারি সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। ফাঁসি নাকি যাবজ্জীবন, কী সাজা হয় সেদিকে নজর সকলের।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ১৬২ দিন পর বিচার পেল তিলোত্তমা।
  • আর জি কর ধর্ষণ-খুনে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়।
  • সোমবার সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।
Advertisement