ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: স্থান-কাল-পাত্র কখন কীভাবে বদলে যায়, কে-ই বা বলতে পারে? ৬ বছর আগে যা ছিল ধনুকভাঙা পণ, বাস্তব পরিস্থিতিতে সেই পণই ভাঙা যায় অক্লেশে। সদ্য রাজ্যসভা নির্বাচনে তৃণমূলের (TMC) মনোনীত বিশিষ্ট সাংবাদিক সাগরিকা ঘোষ (Sagarika Ghose) ৬ বছর আগেকার প্রতিজ্ঞা ভেঙে রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে, তার জবাব দিলেন তিনি। মঙ্গলবার সাগরিকা কলকাতায় (Kolkata) এসেছেন। ক্যামাক স্ট্রিটে তৃণমূলের কার্যালয়ে রাজ্যসভায় দলের অন্যান্য প্রার্থীদের সঙ্গে দেখা গেল তাঁকে। সেইসঙ্গে ফের চর্চায় এল সোশাল মিডিয়ায় তাঁর আগেকার পোস্ট এবং বর্তমান পোস্টের তুলনা।
২০১৮ সাল। তখনও সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের উচ্চপদে কর্মরত। সাংবাদিকতায় (Journalism) তাঁর মেধা, দক্ষতার কথা সর্বজনবিদিত। সেসময় রাজনৈতিক দল থেকে কোনও পদের প্রস্তাব পেলে কী করবেন, এই প্রশ্নের জবাবে অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সাগরিকা ঘোষ জানিয়েছিলেন, কখনও কোনওদিন কোনও রাজনৈতিক দলের টিকিট গ্রহণ করবেন না। তাঁর ওই ‘টুইট’ কথা যেন সকলে ‘সেভ’ করে রাখেন।
[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলায় শহরে অভিযান ইডির, সল্টলেক-সহ একাধিক জায়গায় তল্লাশি]
আরও পিছিয়ে গেলে মনে পড়ে সাগরিকার সাংবাদিক জীবনের অন্যতম স্মরণীয় একটি ঘটনার কথা। ২০১২ সালে টেলিভিশনে এই সাগরিকার সাক্ষাৎকার ছেড়েই উঠে গিয়েছিলেন বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। ফলে সম্পর্ক যে খুব একটা মধুর ছিল, তা বলা যাবে না। আর একযুগ পেরিয়ে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের হয়ে রাজ্যসভা নির্বাচনে (Rajya Sabha Election) লড়ছেন। ২০১৮ সালের সেই ‘সেভ’ করে রাখা ‘টুইট’ তুলে স্বভাবতই সমালোচনা শুরু হয়েছে।
[আরও পড়ুন: প্রয়াত ওয়ার্নকে কড়া টক্কর! দেখে নিন ভাইরাল হওয়া নতুন ‘বল অফ দ্য সেঞ্চুরি!’]
মঙ্গলবার তার জবাব দিলেন সাগরিকা। X হ্যান্ডলে তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘মনে রাখতে হবে, যখন আমি ওই কথা লিখেছিলাম, তখন আমি একজন পেশাদার সাংবাদিক ছিলাম। আমার পক্ষে সেসময় রাতারাতি সেই পেশা ছেড়ে রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া যথাযথ কাজ হত না। কিন্তু ২০২০ সালে আমি সাংবাদিকতা থেকে খানিকটা সরে আসি। আর গত তিন বছর ধরে আমি বিভিন্ন সংবাদপত্রে কলাম লিখেছি, অথবা অতিথি সাংবাদিক হয়ে বা স্বাধীনভাবে কাজ করেছি। সুতরাং পূর্ণ সময়ের পেশাদার সাংবাদিকতা থেকে গত তিন বছর বিশ্রাম নিয়ে তবে জনতার কাজের জন্য ঝাঁপিয়েছি।’’
রাজ্যসভা ভোটের মনোনয়ন দিতে কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের প্রশংসা পঞ্চমুখ হন সাগরিকা। তাঁর বক্তব্য, দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া কে আর নারীর ক্ষমতায়নে এত জোর দেবেন? চারজনের মধ্যে তিনজন মহিলা প্রার্থী আর কে বাছবেন?