রমেন দাস: নেতাজি ইন্ডোরের সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার 'যোগ্য' শিক্ষকদের আশ্বস্ত করেছেন। বলেছেন, তিনি বেঁচে থাকতে কারও চাকরি যাবে না। কিন্তু তাতেও চাকরিহারাদের মনে শঙ্কার মেঘ। ফলত এখনই স্কুলে যাবেন না বলেই জানালেন চাকরিহারারা। তবে আজ, মঙ্গলবার থেকে অবস্থানেও বসছেন না তাঁরা। স্কুলে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের জেরে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের নিশানায় চাকরিহারাদের একাংশ।

নিয়োগ প্রক্রিয়া 'অসাংবিধানিক' ও 'প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি' বলে তোপ দেগে এসএসসির ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এক নিমেষে চাকরি হারিয়েছেন ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সেই চাকরিহারাদের মধ্যে যারা 'যোগ্য' তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বারবার জানান, 'যোগ্য' একজনেরও চাকরি যাবে না। একাধিক বিকল্প পরিকল্পনা করা রয়েছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী সকলকে নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। বলেছিলেন, "কাজ করে যান। বাচ্চাদের শিক্ষা দিন। ২ টো মাস কষ্ট করুন।" বৈঠক থেকে বেরিয়ে অনেকেই জানিয়েছিলেন, তাঁরা স্কুলে যাবেন। কিন্তু পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত বদল করলেন 'যোগ্য' চাকরিহারারা।
এদিন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর তরফে যোগাযোগ করা হয় 'যোগ্য শিক্ষক অধিকার মঞ্চে'র (২০১৬) চিন্ময় মণ্ডলের সঙ্গে। তিনি জানান, সোমবার রাতে শহিদ মিনার চত্বরে খোলা আকাশের নিচেই ছিলেন তাঁরা। সেখানে বিস্তর আলোচনা হয়। তাতেই সমবেতভাবে স্কুলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আপাতত 'যোগ্য' চাকরিহারা কোনও শিক্ষকই স্কুলে যাবেন না। সোমবার চাকরিহারাদের একাংশ জানিয়েছিলেন, মঙ্গলে অবস্থানে বসবেন তাঁরা। তবে চিন্ময়বাবু এদিন জানালেন, এই মুহূর্তে অবস্থান করবেন না তাঁরা। মঙ্গলবার সকলেই বাড়ি ফিরবেন। তারপর নিজেদের মধ্যে আলোচনায় ঠিক হবে পরবর্তী কর্মসূচি।
চাকরিহারাদের একাংশের এই স্কুলে না ফেরার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে রাম-বাম চক্রান্তকেই দায়ী করলেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সতর্ক করে তিনি বললেন, "কারও প্ররোচনায় পা দেবেন না। মুখ্যমন্ত্রী যখন কথা দিয়েছেন, তিনি সমাধানের পথ বের করবেন।" এরপরই চাকরিহারাদের একাংশকে বাম ঘনিষ্ঠ বলে তোপ দেগে কুণাল বললেন, "যাদের ভলান্টিয়ারিলি কাজে আপত্তি, তাঁদের প্রশ্ন করি, করোনার সময় মাইনে নিয়েছিলেন?"